কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৭ মার্চ ২০২৫, ০২:৫৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

আদালতে কাঁদলেন শাজাহান খান

আদালতে কেঁদেছেন সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খান। ছবি : সংগৃহীত
আদালতে কেঁদেছেন সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খান। ছবি : সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় রাজধানীর বাড্ডায় রফিকুল ইসলাম হত্যা মামলায় রিমান্ড শুনানি চলাকালে আদালতে কেঁদেছেন সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খান। তিনি আদালতকে জানিয়েছেন তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের কারণ।

সোমবার (১৭ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এমএ আজহারুল ইসলামের আদালতে শুনানি চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। পরে বাড্ডা থানার রফিকুল ইসলাম হত্যা মামলায় তার ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

এদিন সকাল ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে শাজাহান খানকে আদালতের কাঠগড়ায় তোলা হয়। তখন তিনি আইনজীবীর সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ করেন। সকাল ১০টা ৮ মিনিটের দিকে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়।

এ সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক শফিউল আলম তার ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। আসামিপক্ষে মিজানুর রহমান (বাদশা) রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন।

শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুর রহমান বাদশা বলেন, শাজাহান খান আটবারের সংসদ সদস্য ও দুইবারের মন্ত্রী ছিলেন। তিনি ঐতিহ্যগতভাবে রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। এর আগে তাকে দুইবার রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। রিমান্ডে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার বয়স ৭৬ বছর। রোজার মধ্যে রিমান্ডে নিলে হয়রানি হবে, ফের অসুস্থ হয়ে পড়বেন। তাই রিমান্ড নামঞ্জুর করা হোক।

শুনানিকালে শাজাহান খান বলেন, মাননীয় আদালত আমাকে একটু সময় দেন কথা বলার। আমি কথা বলতে চাই। পরে আদালতের অনুমতি নিয়ে কথা বলতে শুরু করেন শাজাহান খান। তিনি বলেন, পিপি সাহেব বলেছেন, আন্দোলনে পুলিশ গুলি করেছে। সে অর্ডার তো দিতে পারে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। গুলি চালানোর অর্ডার তো আমি দিতে পারি না। আমি জড়িত না। কেন আমার বিরুদ্ধে এই মামলা হলো? শুধু আমার বিরুদ্ধে না, আমার বড় ছেলে আসিবুর রহমানকে আসামি করা হয়েছে। সে এখন জেলে।

তখন কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, আমার ছেলের সঙ্গে পাঁচ মাস আমার দেখা নেই। আমার প্রশ্ন- আমার ছেলে কী করেছে। আমি ঢাকায় থাকাকালে ছেলে মাদারীপুর ছিল। আপনি এখনই চেক করতে পারেন। আর সিরাজুল ইসলাম কে? তখন বিচারক বলেন, আপনার বিষয়ে আইনজীবী কথা বলেছেন। তবুও শাজাহান খান দুই হাত জোড় করে কথা বলার জন্য সময় চান। তিনি বলেন, একটু সময় দেন। উনারা (আইনজীবী) ভালোভাবে বিষয়টা বলতে পারেননি। চেয়ারম্যান ৬টা হত্যা মামলার আসামি। আমি তার পক্ষে ছিলাম না। তাই ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এই মামলা দিয়েছে।

শুনানি শেষে আদালত তার ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে ১০ টা ৪০ মিনিটে হেলমেট, বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ও হাত কড়া পরিয়ে আদালত থেকে বের করা হয়।

হাজতখানায় নেওয়ার সময় শাজাহান খান বলেন, পুলিশ বলছে কথা বলা নিষেধ। এটা গণতান্ত্রিক দেশ। আমি সারাজীবন কথা বলে এসেছি, কথা বলেই যাব। পরে হাসতে হাসতে তিনি হেঁটে হাজতখানায় যান।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই বাড্ডা থানাধীন উত্তর বাড্ডা বিসমিল্লাহ হোটেলের পাশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন রফিকুল ইসলাম। সেখানে আসামিদের ছোড়া গুলিতে আহত হন তিনি। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় গত ২৭ সেপ্টেম্বর নিহতের মামা পরিচয়ে লুৎফুর রহমান বাদী হয়ে মামলা করেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

চট্টগ্রাম ইপিজেডে পোশাক কারখানায় ভয়াবহ আগুন

বদলির পর সরকারি কোয়ার্টারের ‘দরজা-জানালা’ খুলে নিলেন গণপূর্ত কর্মকর্তা

কুড়িগ্রামে ৯ কলেজে শতভাগ অকৃতকার্য

৩ কোটি টাকার সড়ক সংস্কারে নিম্নমানের ইট, অতঃপর...

নতুন লুকে আহান

নতুন করে গাজায় ড্রোন হামলা, অভিযোগ অস্বীকার আইডিএফের

আমি পুরোনোতে বাঁচি : জয়া আহসান

চট্টগ্রামে মাদক মামলায় দুজনের যাবজ্জীবন

ভেনেজুয়েলায় গুপ্ত অভিযানের অনুমোদন দিলেন ট্রাম্প

ক্যাম্পাসে মন্দির নির্মাণের দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

১০

এইচএসসি ফল : যে ৩ বিষয়ে ‍সবচেয়ে বেশি ফেল

১১

এইচএসসির ফল ভালো নাকি খারাপ, যা বললেন ঢাকা বোর্ড চেয়ারম্যান

১২

শাহ আমানত বিমানবন্দরে প্রায় ১৯ লাখ টাকার সিগারেট জব্দ

১৩

দিনাজপুর বোর্ডের ৪৩ কলেজে পাস করেননি কেউ

১৪

জাতির সামনে প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন নাসির

১৫

শেখ হাসিনা-আসাদুজ্জামান খানের মৃত্যুদণ্ডের আবেদন

১৬

আমলাতন্ত্র চলবে না, প্রয়োজনে ডিসি অফিস ঘেরাও করবেন : মির্জা ফখরুল

১৭

দীর্ঘ ৬ বছরেরও যে বিশ্বরেকর্ড কেউ ভাঙতে পারেনি

১৮

ঘুমের মধ্যে মারা গেলেন বলিউড অভিনেত্রী মধুমতী

১৯

আফগানিস্তানের দল ঘোষণা, নেই রশিদ খান

২০
X