ব্লাস্ট বুধবার গণমাধ্যমকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানায়, ২৪ আগস্ট ধর্ষণের শিকার নারী ও কন্যা শিশুর ডাক্তারি (মেডিকো-লিগ্যাল) পরীক্ষার ক্ষেত্রে ‘দুই আঙ্গুলের পরীক্ষা’ বা ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’র মতো অবৈজ্ঞানিক এবং অবৈধ পরীক্ষাকে নিষিদ্ধ করে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি এ, কে, এম, সাহিদুল হক-এর সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ ৮টি সুস্পষ্ট নির্দেশনাসহ ‘দুই আঙ্গুলের পরীক্ষা’ বা ‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ নিষিদ্ধ করে এ রায় প্রকাশ করেন।
এ রায়ে আদালত তার পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করে, সাংবিধানিক বিধান, আন্তর্জাতিক চুক্তি, জাতিসংঘ প্রণীত নির্দেশিকা, আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা ও ফরেনসিক বিজ্ঞানের পরিপ্রেক্ষিতে; ‘দুই আঙ্গুলের পরীক্ষা’ বন্ধে এবং ধর্ষণের শিকার ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের গোপনীয়তার অধিকার, তাদের ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার, শারীরিক অখণ্ডতা, তাদের ব্যক্তিসত্তার এবং অন্তর্নিহিত মর্যাদার প্রতি সম্মান নিশ্চিতে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা ও আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
পর্যবেক্ষণে আরও উল্লেখ করা হয়, ধর্ষণের শিকার ভুক্তভোগী ব্যক্তির সম্মতি ছাড়া এবং ভুক্তভোগী ব্যক্তি যদি নাবালিকা হয়, সেক্ষেত্রে তার আইনি অভিভাবকের সম্মতি ছাড়া কোনভাবেই কোনো ডাক্তারি পরীক্ষা করা যাবে না। ভুক্তভোগী ব্যক্তির শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। একইসাথে লক্ষ্য রাখতে হবে, পুনরায় শারীরিক এবং মানসিক ভাবে কোনোরূপ নিষ্ঠুর, অমানবিক বা অবমাননাকর আচরণের শিকার হয়ে ভুক্তভোগী ব্যক্তি যেন বিচার বিমুখ না হয়ে যায়। কয়েকটি নির্দেশনাও জারি করা হয়, ধর্ষণের শিকার নারীর ক্ষেত্রে দুই আঙ্গুলের পরীক্ষা অবৈজ্ঞানিক, অনির্ভরযোগ্য এবং অবৈধ, এ প্রেক্ষিতে দুই আঙ্গুলের পরীক্ষা নিষিদ্ধ।
‘Health Response to Gender Based Violence- Protocol to Health Care Provider’-এ প্রোটকলটি সকল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ, ফিজিশিয়ান যারা ধর্ষণের শিকার নারীর ডাক্তারি (মেডিকো-লিগ্যাল) পরীক্ষা করে, পুলিশ কর্মকর্তা যারা ধর্ষণের মামলার তদন্ত করেন এবং নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের মামলার সরকারী প্রসিকিউটর এবং আইনজীবীদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে।
মন্তব্য করুন