জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় রাজধানীর রামপুরায় ছাদের কার্নিশে ঝুলে থাকা আমির হোসেনকে গুলি করাসহ দুজনকে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ প্রসিকিউশনের পক্ষে অভিযোগ দাখিল করেন প্রসিকিউটর ফারুক আহাম্মদ। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর সাইমুম রেজা তালুকদার।
আসামিরা হলেন—সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, খিলগাঁও জোনের সাবেক এডিসি মো. রাশেদুল ইসলাম, রামপুরা থানার সাবেক ওসি মো. মশিউর রহমান, রামপুরা পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক এএসআই চঞ্চল চন্দ্র সরকার ও রামপুরা থানার সাবেক এসআই তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়া।
গত ৩১ জুলাই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে জমা দেন তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা। এর আগে ট্রাইব্যুনাল দুই মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা দিয়েছিল। গত ১৪ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই আদেশ দেন। সেদিন আদালতে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম।
জানা গেছে, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গত বছরের ১৯ জুলাই বিকেলে রামপুরার একটি হোটেলে কাজ শেষে ঢাকায় থাকা ফুপুর বাসায় ফিরছিলেন আমির হোসেন। তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। পথে বনশ্রী-মেরাদিয়া সড়কের দুই পাশে পুলিশ ও বিজিবির গাড়ি দেখে আতঙ্কিত হয়ে প্রাণ বাঁচাতে পাশের একটি নির্মাণাধীন চারতলা ভবনের ছাদে উঠে যান তিনি।
পুলিশও তখন তার পেছন পেছন ভবনে উঠে যায়। একপর্যায়ে জীবন রক্ষার জন্য ভবনের ছাদের কার্নিশের রড ধরে ঝুলে পড়েন আমির হোসেন। কিন্তু পুলিশ তাকে দেখে ফেলে এবং এক সদস্য তার দিকে ছয় রাউন্ড গুলি ছোড়ে। গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি তিনতলায় পড়ে যান। তার চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে গিয়ে উদ্ধার করে প্রথমে বনশ্রীর একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে শেষ পর্যন্ত তিনি বাড়ি ফিরে যেতে সক্ষম হন।
উল্লেখ্য, আমির হোসেনকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো অভিযুক্ত সাবেক এএসআই চঞ্চল সরকারকে গত ২৬ জানুয়ারি রাতে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর তানভীর হাসান জোহার নেতৃত্বে ঢাকা মহানগর পুলিশের একটি দল এ অভিযান পরিচালনা করে।
মন্তব্য করুন