ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন দুই মাসের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেছে হাই কোর্ট। আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত এ নির্বাচন স্থগিত করা হয়। একই সঙ্গে কোন প্রক্রিয়ায় ডাকসু নির্বাচনের প্রার্থী মনোনয়ন, বাছাই ও চূড়ান্ত করা হচ্ছে এবং ভোটের প্রস্তুতির প্রক্রিয়া কী— এ বিষয়েও জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
এ ছাড়া কোন প্রক্রিয়ায় ডাকসু নির্বাচনের প্রার্থী মনোনয়ন, বাছাই ও চূড়ান্ত করা হচ্ছে এবং ভোটের প্রস্তুতির প্রক্রিয়া কী—এ বিষয়েও জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি হাবিবুল গণি ও বিচারপতি এস কে তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে এ সংক্রান্ত রিটের শুনানিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শিশির মনির। রিটকারী পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
এই নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা জিএস পদপ্রার্থী এম ফরহাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্ত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৫ আগস্টের আগে এস এম ফরহাদ ‘ছাত্রলীগের কমিটিতে’ ছিলেন। এরপরও তিনি কীভাবে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থী হলেন– এমন প্রশ্ন তুলে তার প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করে সোমবার এ রিট মামলা হয়। তিন বাম সংগঠন সমর্থিত ‘অপরাজেয় ৭১-অদম্য ২৪’ প্যানেলের মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী বি এম ফাহমিদা আলম এ মামলা করেন।
রিট আবেদনকারী ফাহমিদা আলম ওই দিনই সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, ‘ফরহাদের অবস্থান বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে এবং ফরহাদ নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন, তার কোনো পদত্যাগের প্রমাণ আমরা পাইনি।’
ফরহাদের কর্মকাণ্ড ডাকসুর গঠনতন্ত্রের সঙ্গে ‘সাংঘর্ষিক’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘টিএসসিতে তারা রাজাকারদের ছবি টানিয়েছিল। তাদের জাতীয় বীর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার যে প্রচেষ্টা ছিল, সেটি ডাকসুর মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশের সঙ্গে বিরোধিতা করে।’
এ রিট মামলা ডাকসু নির্বাচন ‘বানচাল করার জন্য নয়’ দাবি করে ফাহমিদা বলেন, মামলা করার পর থেকে বিভিন্ন ‘বট অ্যাকাউন্ট’ থেকে তিনি বুলিংয়ের শিকার হচ্ছেন।
এর আগে সোমবার মামলা হওয়ার পর এস এম ফরহাদ ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লিখেছিলেন, ‘আমার প্রার্থিতাকে চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়েরকারী বাম জোটের নেত্রীকে তার উদ্যোগের জন্য শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। বিভিন্ন দল কর্তৃক দীর্ঘ সময় ধরে ছবি এডিট করে, ভিডিও বানিয়ে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করার চেয়ে আপনার আইনি উদ্যোগ তুলনামূলক ভালো অ্যাপ্রোচ। বাধা, ষড়যন্ত্র কিংবা অপকৌশল মাড়িয়েই আমাদের নিয়মিত পথচলা; এই যাত্রায় আমরা থামব না, ইনশাআল্লাহ।’
ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের প্যানেলে ভিপি পদে লড়ছেন সাদিক কায়েম। আর 'অপরাজেয় ৭১-অদম্য ২৪' নামে প্যানেলে ভিপি পদপ্রার্থী হয়েছেন মো. নাইম হাসান হৃদয়। জিএস পদে লড়ছেন এনামুল হাসান অনয়।
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের একাংশ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-বিসিএল (বাংলাদেশ জাসদের ছাত্র সংগঠন) এর সমন্বয়ে এ প্যানেল গঠন করা হয়েছে।
তফসিল অনুযায়ী, ডাকসু নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল ৯ সেপ্টেম্বর। হাই কোর্ট ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত এ নির্বাচনের সব কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
মন্তব্য করুন