অন্য দেশের এজেন্ট হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার উৎখাতে কাজ করার অভিযোগে সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক এনায়েত করিম চৌধুরীর সহযোগী মো. আজহার আলী সরকারকে (৫৭) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
শনিবার (১১ অক্টোবর) বিকেলে শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন মাজিস্ট্রেট মো. মিনহাজুর রহমানের আদালত এই আদেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. হারুন অর রশিদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে, এদিন বিকেলে আসামিকে আদালত হাজির করে সাতদিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির পুলিশ পরিদর্শক মো. আখতার মোর্শেদ।
আবেদনে বলা হয়, গ্রেপ্তাকৃত আসামি মো. আজহার আলী সরকার (৫৭) সহ আরও অজ্ঞাতনামা আসামিরা এজাহারনামীয় আসামি এনায়েত করিম চৌধুরীর সঙ্গে পরস্পর যোগসাজস করে বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে বাংলাদেশের অখণ্ডতা, সংহতি, জন নিরাপত্তা বা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার জন্য জনসাধারণের মধ্যে আতংক সৃষ্টির করছে। বর্তমান সরকারকে উৎখাত করার উদ্দেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, উচ্চপদস্থ ব্যক্তি ও ব্যবসায়ী মহলের সঙ্গে গোপন বৈঠক ও পরামর্শ করে বিভিন্ন স্থানে গণবিক্ষোভের মাধ্যমে প্রজাতন্ত্রের সম্পত্তি ক্ষতিসাধনের পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। এসব তথ্যের ভিত্তিতে মামলার সুষ্ঠু তদন্ত এবং ন্যায়বিচারের স্বার্থে পুলিশ সাতজনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজনীয়তা জানিয়েছে।
এদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিলপূর্বক জামিনের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আইনজীবী মো. হারুন অর রশিদ রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। এ সময় আসামি আজহার আলী আদালতকে বলেন, তিনি একজন সিনিয়র সাংবাদিক। তিনি ২ বার বর্তমান রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেছেন। এই কারণে তাকে এই মামলায় জড়ানো হয়েছে। এই মামলার উল্লিখিত ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত নন। শুনানি শেষে জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে আদালত আসামির চারদিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
এর আগে, গত ১৩ সেপ্টেম্বর বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় এনায়েতকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। পরে ১৫ সেপ্টেম্বর সন্ত্রাস বিরোধী আইনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আটক রয়েছে।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে দশটায় রাজধানীর মিন্টো রোডের মন্ত্রীপাড়া এলাকায় প্রাডো গাড়িতে আরোহন করে সন্দেহজনক চলাচল করতে দেখা যায় আসামি এনায়েত করিম চৌধুরীকে। এ সময় তার গাড়ি থামানো হয় এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি কোনো সদুত্তোর দিতে না পারায় তাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। তার নিকট হতে প্রাপ্ত দুটি আইফোন বিশ্লেষণ করে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গিয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে আসামি নিজেকে বিদেশি একটি গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট হিসেবে দাবি করেন। তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার উৎখাতের গোপম মিশন নিয়ে গত ৬ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশে এসেছেন বলে স্বীকার করেছেন।
মন্তব্য করুন