বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) লেকের পানিতে ডুবে দুই ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় মেডিকেল সেন্টারের সব চিকিৎসক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বহিষ্কারসহ সাত দফা দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট (ইএসডি) বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২ আগস্ট) সকাল ১১টা থেকে এসব দাবি আদায়ে উপাচার্য দপ্তরের সামনে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের দাবির মধ্যে আরও রয়েছে- নতুন অভিজ্ঞ ডাক্তার ও নার্স নিয়োগ এবং মেডিকেল সেন্টারে ২৪ ঘণ্টা সেবা প্রদান, এক্সপার্ট ড্রাইভারসহ সিসিইউ অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করা, মেডিকেল সেন্টারে পর্যাপ্ত ওষুধ, প্রয়োজনীয় মেডিকেল সরঞ্জামসহ মেডিকেল সেন্টারকে ১০ শয্যায় উন্নীতকরণ, রিতু এবং হিয়ার স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি এবং লেকের তলদেশ ভরাট, রেলিং ও সিঁড়ি স্থাপনসহ লেকপাড় সংস্কার।
আরও পড়ুন: বান্ধবীকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ দিল বান্ধবী
সাতটি দাবির প্রেক্ষিতে প্রায় তিন ঘণ্টা শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলার পর আন্দোলনস্থলে উপস্থিত হন বশেমুরবিপ্রবির উপাচার্য ড. একিউএম মাহবুব, ট্রেজারার বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. মো. মোবারক হোসেনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা শিক্ষকগণ। এ সময় উপাচার্য শিক্ষার্থীদের সব দাবি পূরণের লিখিত অঙ্গীকারনামা দেন।
উপাচার্যের স্বাক্ষরকৃত অঙ্গীকারনামায় বলা হয়েছে- ইতোমধ্যে নতুন মেডিকেল কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং মেডিকেলের কর্মকর্তা-কর্মচারী, চিকিৎসকদের বহিষ্কারের বিষয়ে শিক্ষার্থীরা যে দাবি তুলেছেন সে বিষয়ে আগামীকাল (৩ আগস্ট) ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বৃহস্পতিবারের মধ্যে নতুন ২ জন অভিজ্ঞ নার্স আনার ব্যবস্থা করা হবে। অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভারকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। আগামী ২ মাসের মধ্যে নতুন অ্যাম্বুলেন্স কেনা হবে। ১০ তারিখের মধ্যে ওষুধ, মেডিকেল ইকুইপমেন্ট নিশ্চিতসহ মেডিকেল সেন্টারকে ১০ শয্যায় উন্নীত করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্মৃতিস্তম্ভের কাজ এবং লেক সংস্কারের কাজ আগামীকাল থেকে শুরু হবে।
আরও পড়ুন: জবি শিক্ষার্থীর পরিবারকে ১২ কোটি টাকা দিতে রুল
এর আগে, মঙ্গলবার (২ আগস্ট) লেকের পানিতে ডুবে মৃত্যুবরণ করেন তাসপিয়া জাহান রিতু এবং মোবাশ্বেরা তানজুম হিয়া। তারা দু’জনই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
ছাত্রীদের উদ্ধারকারী এক শিক্ষার্থী হাসান মাহমুদ বলেন, দু’জন ছাত্রীর একজন পানিতে নেমে ডুবে যায়। তখন বৃষ্টি হচ্ছিল তাই তেমন কেউ ছিল না বাইরে। আরেকজন বান্ধবী তাকে বাঁচাতে গিয়ে ডুবে গেছে। পরে এক মহিলার দেওয়া তথ্যে প্রায় ৫০ জনের মতো লেকে নেমে ২০-৩০ মিনিট পর দু’জনকে খুঁজে পাই এবং হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করে।
উদ্ধারকাজে অংশ নেওয়া একাধিক শিক্ষার্থীর অভিযোগ- তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে পর্যাপ্ত প্রাথমিক চিকিৎসা পাননি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে অক্সিজেন সুবিধাও ছিল না।
মন্তব্য করুন