ক্যাম্পাসে চলমান শাটডাউন পরিস্থিতির বিষয়ে সংবাদ পরিবেশনের জন্য মন্তব্য চাইলে দৈনিক কালবেলার প্রতিনিধির পরিচয় পেয়ে ‘তুমি না আমার বিরুদ্ধে নিউজ করেছো’ বলে ফোন কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) নিরাপত্তা দপ্তর প্রধান গোলাম কিবরিয়ার বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এরপর মুঠোফোনে একাধিকার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
জানা গেছে, উপাচার্যের প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে একাধিকবার আলটিমেটাম দেওয়ার পরও ফলাফল না আসায় মঙ্গলবার বিকেলে এক প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে ক্যাম্পাসে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা দপ্তরের প্রধান গোলাম কিবরিয়ার মন্তব্য জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে পূর্বের একটি সংবাদের জেরে ‘তুমি না আমার বিরুদ্ধে নিউজ করেছো’ বলে মন্তব্য না দিয়েই ফোন কেটে দেন তিনি।
এ সময় তিনি বলেন, তুমি তো আমার বিরুদ্ধে নিউজ করেছো। নিউজে আমাকে শিবিরের ক্যাডার বলছো, এখন আর আমার সঙ্গে বার্গেডিং করবা না। এই বলে ফোন কেটে দেওয়ার পরে একাধিকবার মন্তব্যের জন্য ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে দৈনিক কালবেলার চবি প্রতিনিধি জাহিদুল হক বলেন, মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে গত বেশ কিছুদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ভবন ও গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে নিরাপত্তা দপ্তর প্রধানের দায়িত্বে থাকা গোলাম কিবরিয়ার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে কালবেলার প্রতিনিধি পরিচয় দেওয়া মাত্রই তিনি আমার সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন এবং প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তিনি আমার নাম ধরে বলেন, ‘তুমি আমার বিরুদ্ধে নিউজ করেছো, আমাকে শিবিরের ক্যাডার বলেছো, আমার সঙ্গে বার্গেডিং করবা না’ বলে ফোন কেটে দেন।
এ বিষয় জানতে নিরাপত্তা প্রধান গোলাম কিবরিয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
কেন প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে ফোন কেটে দিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে চবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কেএম নূর আহমদ কালবেলাকে বলেন, প্রশ্নের উত্তর দেননি, কথা বলতে চাননি- হয়তো এটা উনার ব্যক্তিগত ব্যাপার। এ বিষয়ে আর কিছু বলার নেই।
উল্লেখ্য, গত (২৫ মে) রোববার কর্মচারীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে নিরাপত্তা প্রধান গোলাম কিবরিয়ার বিরুদ্ধে 'চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রমরমা সুদের কারবার ডেপুটি রেজিস্ট্রারের' শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয় কালবেলায়।
জানা যায়, নিরাপত্তা দপ্তরের ঊর্ধ্বতন সহকারী মো. ফেরদৌস লোকজনকে টাকা ধার দেওয়ার বিনিময়ে সুদের কারবার করতেন। এ কাজে বিনিয়োগ রয়েছে নিরাপত্তা দপ্তরের প্রধান ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার গোলাম কিবরিয়ার।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক একাধিক কর্মচারী অভিযোগ করে জানান, ১০ হাজার টাকা এক সপ্তাহের জন্য নিলে বিনিময়ে সুদ দিতে হয় এক হাজার। ১ লাখ টাকায় সপ্তাহ শেষে সুদ দিতে হয় ১০ হাজার টাকা।
এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করার কথা থাকলেও পরবর্তীতে কোনো পদক্ষেপ বা তদন্ত কমিটি গঠন হয়নি।
মন্তব্য করুন