ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৪ জুন ২০২৩, ০৯:২০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ঢাবিতে কক্ষ বরাদ্দ নিয়ে দুই বিভাগের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি

ঢাবিতে দুই বিভাগের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি
ঢাবিতে দুই বিভাগের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলা অনুষদের একটি কক্ষের বরাদ্দ নিয়ে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য ও থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগ। আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এক মানববন্ধন করে থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। পরে ওই কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে পাল্টা বিক্ষোভ কর্মসূচি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ।

ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ভাষ্য, দীর্ঘ একযুগ ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের ৩০২০ নম্বর কক্ষটি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এই কক্ষটি এতদিন থিয়েটার বিভাগের অধীনে ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি বিভাগের চেয়ারম্যান কক্ষের পাশে কোনো অফিস কক্ষ না থাকায় কক্ষটি বরাদ্দ দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে সুপারিশ করে ফারসি বিভাগ। পরে ওই কক্ষটি ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে তাদের বরাদ্দ দেওয়া হয় এবং এই কক্ষের বিপরীতে কলা ভবনের ৬০৫৩নং কক্ষটি থিয়েটার বিভাগকে বরাদ্দ দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পেস বরাদ্দ কমিটি। কিন্তু বরাদ্দের সাত মাস পরেও ওই কক্ষের চাবি দেয়নি থিয়েটার বিভাগ। সর্বশেষ চলতি বছরের ২৯ মে তিন দিনের মধ্যে রুম বরাদ্দের চাবি বুঝিয়ে দিতে ওই বিভাগকে চিঠি দেয় স্পেস বরাদ্দ কমিটি। কিন্তু তিন দিনের জায়গায় পনেরো দিন পরেও চাবি না দেওয়ায় ওই রুম সিলগালা করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিবহির্ভূতভাবে ওই রুমের সিলগালা ভেঙে নতুন করে একটি তালা মেরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে হুমকি দিয়ে একটি নোটিশ টানিয়ে দেয় থিয়েটার বিভাগের শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে থিয়েটার বিভাগের এক কর্মসূচিতে ফারসি বিভাগকে মৌলবাদী আখ্যা দেওয়া হলে চার দফা দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে ফারসি বিভাগের শিক্ষার্থীরা। পরে একই দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আব্দুল বাছিরের সাথে সাক্ষাৎ করেন তারা।

এ বিষয়ে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী রাব্বি হাসান কালবেলাকে জানান, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে সবসময় শ্রদ্ধা করি। এই কক্ষটি আমাদের বিভাগের অফিস রুম হিসেবে ব্যবহারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পেস বরাদ্দ কমিটি আমাদের দিলেও থিয়েটার বিভাগের ছাত্র-শিক্ষকেরা রুমের চাবি না দিয়ে উল্টো আমাদের মৌলবাদী বলছে এবং আমাদের বিভাগের স্টাফকে হুমকি দিয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অমান্য করে যারা সিলগালা তালা ভেঙে নিজেদের তালা মেরে আইন অমান্য করেছে তাদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন কালবেলাকে বলেন, আমাদের শতবর্ষী বিভাগের চেয়ারম্যান রুমের পাশে স্টাফ রুম নেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের অফিস পরিচালনার সুবিধার্তে এই কক্ষটি আমাদের বরাদ্দ দিয়েছে। কিন্তু বরাদ্দের সাত মাস পরেও আমরা কক্ষটি ব্যবহার করতে পারছি না। আমরা নিজেরা বরাদ্দপত্র থাকার পরেও এ রুম দখল করতে বা তালা ভাঙতে যাইনি; অপেক্ষা করেছি, প্রশাসনের ওপর শ্রদ্ধা ও আস্থা রেখেছি। আমরা আশা করি, আমাদের বিভাগের নামে বরাদ্দকৃত এই রুমটি স্বাভাবিক বিভাগীয় দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমাদের দ্রুত বুঝিয়ে দেবে।

থিয়েটার বিভাগের ভাষ্য, বিভাগ প্রতিষ্ঠাকাল থেকে ওই কক্ষ ব্যবহার করছে তারা। বর্তমানে ওই কক্ষের দরজায় দুটি নেমপ্লেট দেখা গেলেও কক্ষটিতে কেউ বসেন না। তবে, কক্ষে না বসলেও কক্ষটি বিভাগের স্মৃতির সাথে জড়িয়ে রয়েছে বলে দাবি থিয়েটার বিভাগের। যার কারণে তারা ওই কক্ষটি ছাড়তে নারাজ। পরে আজ বুধবার এ বিষয়ে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এক মানববন্ধন করেন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধন শেষে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন।

এ সময় বিভাগের শিক্ষার্থী বর্ণালী ঘোষ বলেন, এই কক্ষটি অবৈধভবে দখলের মাধ্যমে সংস্কৃতির ওপর আঘাত করা হয়েছে। আমাদের শিক্ষকরা আমাদের দেবতাতুল্য। তাদের প্রতি এ রকম লাঞ্ছনা আমরা মেনে নিতে পারছি না। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

বিভাগের চেয়ারম্যান আশিকুর রহমান লিয়ন বলেন, বারবার আমাদের কাছে চিঠি আসে, বারবার আমরা চিঠি দিয়ে জানিয়েছি এটা দখল কেন অযৌক্তিক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা সৌন্দর্য আছে, ভদ্রতার মানদণ্ড আছে। এটা কেমন ভদ্রতা? এ ধরনের কাজ আমাদের মর্মাহত করেছে। একটি বিভাগকে সুবিধা দেওয়ার জন্য আরেকটি বিভাগের পাঠ কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ কালবেলাকে বলেন, সব নিয়ম-কানুন মেনে ওই কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এবং এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান কালবেলাকে বলেন, আমাদের সংশ্লিষ্ট কমিটি রয়েছে। তারা বিষয়টি দেখবেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কেবিন ক্রুদের আসল কাজ কী

দেশে কত দামে স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে আজ

বিদেশগামী শিক্ষার্থীদের বড় সুখবর দিল সরকার

জাতীয় দলের কোচিং স্টাফে এবার আইপিএলে কাজ করা অ্যানালিস্ট

আমরা লক্ষ্য অর্জনের দ্বারপ্রান্তে : নেতানিয়াহু

৩ প্যাকেট কাঁচা নুডলস খেয়ে ১৩ বছরের কিশোরের করুণ পরিণতি

তিস্তার বন্যায় কৃষকের স্বপ্ন ভাসছে অনিশ্চয়তার অথৈ জলে

ব্যাংকিং টিপস / ব্যাংকের সুদের হার ও চার্জ সম্পর্কে সচেতন থাকুন

শতভাগ লুটপাটমুক্ত দল জামায়াতে ইসলামী : ড. মোবারক

মায়ের মৃত্যুর খবর শুনে হাসপাতালে এসে মারা গেলেন ছেলেও

১০

ঢাকায় বৃষ্টি নিয়ে আবহাওয়া অফিসের বার্তা

১১

সিঙ্গারে চাকরির সুযোগ, দ্রুত আবেদন করুন

১২

মেসিহীন মায়ামিকে বাঁচাল রদ্রিগেজের দুর্দান্ত গোল

১৩

গাজায় যেভাবে দুর্ভিক্ষ নেমে এলো

১৪

লেভান্তের মাঠে বার্সার রোমাঞ্চকর জয়

১৫

যুবদল নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

১৬

আকিজ গ্রুপে চাকরি, বেতন ছাড়াও থাকবে নানা সুবিধা 

১৭

বাগেরহাটে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল

১৮

যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিন তৈরি করছে ভারত

১৯

২৪ আগস্ট : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

২০
X