রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) হলের গাছ থেকে ডাব পেড়ে খাওয়ার অভিযোগে পাঁচ শিক্ষার্থীকে শোকজ করেছেন প্রাধ্যক্ষ। এ ঘটনাকে হলের ‘শৃঙ্খলা পরিপন্থি’ কাজ উল্লেখ করে জড়িত শিক্ষার্থীদের ‘আবাসিকতা কেন বাতিল করা হবে না?’ তা জানতে চেয়েছেন হল প্রাধ্যক্ষ।
শেরে বাংলা ফজলুল হক হলে এ ঘটনা ঘটে।
হলের নোটিশ বোর্ডে টানানো প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ৫ আবাসিক শিক্ষার্থীকে বৃহস্পতিবারের (৮ মে) মধ্যে লিখিত জবাব চাওয়া হয়েছে।
হল প্রাধ্যক্ষের স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শেরে বাংলা ফজলুল হক হলের আওতাধীন ফলবান গাছসমূহ পরিচর্যা ও তদারকির জন্য বর্তমান হল প্রশাসনের উদ্যোগে আবাসিক ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সমন্বয়ে একটি তদারকি কমিটি কার্যকর আছে। গাছগুলো পরিচর্যায় বিগত কয়েক মাসে মোটা অংকের অর্থ ব্যয় হয়েছে।
গত ১৩ এপ্রিল দিবাগত রাত দেড়টা থেকে আড়াইটার মধ্যে হলের পূর্ব ব্লকের কয়েকজন আবাসিক ছাত্র কিছুসংখ্যক বহিরাগত নিয়ে হলের কয়েকটি নারিকেল গাছ থেকে প্রায় শতাধিক ডাব পেড়ে নিয়েছে। এটি যে কোনো বিচারে আবাসিক শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশিত আচরণের পরিপন্থি ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ফলবান গাছসমূহের ফল ফলাদি হলের সকল আবাসিক শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং হলে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অধিকার।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, হলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে ছাত্রদের উক্ত কাজে জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। হল প্রশাসনের সভার সিদ্ধান্তে বহিরাগতদের নিয়ে গভীর রাতে হলের নারিকেল গাছের ডাব পাড়ায় কেন তাদের আবাসিকতা বাতিল করা হবে না, তা আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে লিখিতভাবে জানাতে বলা হচ্ছে।
অভিযোগের বিষয়ে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা মজা করে বন্ধুরা মিলে মাত্র একটি গাছ থেকে অল্প কিছু ডাব পেড়েছিলাম। কিন্তু প্রাধ্যক্ষ স্যার যেভাবে শতাধিক ডাব পাড়ার অভিযোগ করেছে আমাদের বিরুদ্ধে সেটা ভিত্তিহীন। আমাদের কাছে সেদিন রাতের ছবি ও ভিডিও আছে। যেহেতু রাতের বেলায় আমরা এ কাজ করেছি, সেজন্য দোষ স্বীকার করে প্রাধ্যক্ষ স্যারের কাছে বার বার ক্ষমা চেয়েছি। কিন্তু তিনি আমাদের ক্ষমা না করে হল থেকে নামিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এ ঘটনার পর থেকে আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি।
এ বিষয়ে শেরে বাংলা ফজলুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম বলেন, আমি দায়িত্বে এসে হলের ফলজ গাছসমূহ পরিচর্যা ও তদারকির জন্য আবাসিক ছাত্র-শিক্ষক ও কর্মচারীদের সমন্বয়ে একটি তদারকি কমিটি গঠন করি। পরে হলের গাছগুলোর পরিচর্যার জন্য হল প্রশাসন থেকে মোটা অংকের ব্যয় বহন করা হয়। কিন্তু হঠাৎ একদিন আমরা লক্ষ্য করি হলের নারিকেল গাছগুলোতে ডাব নেই। পরে আমরা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে হলের পাঁচ শিক্ষার্থীকে শনাক্ত করি। তাদের সঙ্গে বহিরাগত দুজনও জড়িত ছিল।
তিনি আরও বলেন, হলের ফল-ফলাদি ছাত্র-শিক্ষক-কমর্চারী সকলের অধিকার। বিগত সময়েও এসব ফল চুরির ঘটনা হলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। পুনরায় যেন আর কেউ এমন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে এজন্য তাদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন