ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে ভোট চাইছেন। হাসিমুখে হাতে একটি ভোট বাক্স হাতে নিয়ে তিনি বলছেন, ‘ছেলেটার জন্য আজ আমি ভালো আছি, শ্বশুরবাড়িতে। সবাই ওরে ভোট দিও।’
রাকসু নির্বাচনের জন্য শেখ হাসিনা এ ভোট চাইছেন স্বয়ং অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতা সালাহউদ্দিন আম্মারের জন্য। এমনই এক অভিনব ব্যঙ্গাত্মক প্রচারপত্র নিয়ে আসন্ন রাকসু নির্বাচনের প্রচার-প্রচারা চালাচ্ছেন এই জিএস প্রার্থী।
প্রচারপত্রটিতে দেখা যায়, পলাতক শেখ হাসিনার চোখ বন্ধ করে মুখে ফোকলা হাসি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। হাতে তার একটি ভোটের বাক্স। পরনে তার সুন্দর বসনের ছাপা শাড়ি। আকর্ষণীয় দৃষ্টিতে তাকিয়ে তিনি বলছেন, ‘ছেলেটার জন্য আজ আমি ভালো আছি, শ্বশুরবাড়িতে। সবাই ওরে ভোট দিও। সালাহউদ্দিন আম্মার (জিএস) পদপ্রার্থী। ওর ব্যালট নং-০৯।’
এমন প্রচারপত্র দেখে শিক্ষার্থীরা বলছেন, এ যেন সালাহউদ্দিনের জন্য ভোট চাইছেন স্বয়ং স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা। রাকসু নির্বাচন তাদের আকর্ষণ করতে অনন্য উপায়ে প্রার্থীরা আসছেন। সালাহউদ্দিনের ছিল আন্দোলনের সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা। সে সময়গুলোতে আম্মার মাইক হাতে দরাজ কণ্ঠে রাজপথ কাঁপাত। রাজশাহীর আন্দোলনে তার নেতৃত্বকে বর্ণনা করে কেউ কেউ বলেন, সালাহউদ্দিন রাজশাহীর অভ্যুত্থানের ‘পোস্টার বয়’।
আসন্ন রাকসু নির্বাচনে সালাহউদ্দিনের প্রচারণাপত্রে শেখ হাসিনার ব্যঙ্গাত্মক আকৃতি শুধু দৃষ্টি আকর্ষণ করতে নয়। এটা সালাহউদ্দিনের রাজপথে অটল থাকা দিনগুলোরও স্মৃতি মনে করিয়ে দেওয়া।
অভিনব এমন প্রচারের বিষয়ে জানতে চাইলে সালাউদ্দিন আম্মার কালবেলাকে বলেন, ‘শেখ হাসিনার পালানোতে আমরা খুশি। শেখ হাসিনাকে ভারতে পাঠানোর পরে আমরা চাই, আমরা ছাত্রের জায়গা থেকেই ছাত্র সংসদে প্রতিনিধিত্ব করব। এখানে ছেলেটা বলতে শুধু আমাকে বোঝানো হয়নি। এখানে আন্দোলনে থাকা প্রত্যেকটা সদস্যকেই বোঝানো হয়েছে। শিক্ষার্থীরা এটা খুবই ভালোভাবে নিচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা যে পালিয়েছে এ বিষয়টি এখানে তুলে ধরা হয়েছে। এখানে আমাদের আরেকটা বার্তা থাকবে, আওয়ামী লীগের সব সদস্য যখন মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চায়, তখন তাদের মনে করতে হবে তাদের দলের প্রধান সদস্যই এখনো ভারতের শেলটারে পালিয়ে রয়েছে।’
উল্লেখ্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন আগামী ১৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে। মোট ভোটার ২৮ হাজার ৯০১ জন। আটটি একাডেমিক ভবনের ১৭টি কেন্দ্রে ৯৯০টি বুথ থাকবে। ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
মন্তব্য করুন