

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ইসলামী ছাত্রশিবির সবসময় লেজুড়বৃত্তি রাজনীতির বিপক্ষে। ইসলাম ও রাষ্ট্রের স্বার্থে যারা কাজ করবে, শিবির তাদের সহযোগিতা করবে কিন্তু কখনও লেজুড়বৃত্তি করবে না। এই প্রজন্মে অন্ধ আনুগত্য, ভাই পলিটিক্স চলবে না। এখন আর জোর করে মিছিলে নিয়ে যাওয়ার কথা বলারও সাহস কেউ পাবে না, ৫ আগস্টে এর কবর রচনা হয়ে গেছে।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) বর্ণাঢ্য আয়োজনে ২০২৪-২৫ সেশনের নবীন শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ ও ক্যারিয়ার গাইডলাইন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে একহাজারের অধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির বাকৃবি শাখার আয়োজনে ওই নবীনবরণ অনুষ্ঠিত হয়।
অমুসলিম ও নারীদের বিষয়ে জাহিদুল ইসলাম বলেন, নারীদের বিষয়ে শিবিরের বিরুদ্ধে একটা শ্রেণির যে প্রোপাগান্ডা, সেটি তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে অপপ্রচার, যার কোনো ভিত্তি নেই। অমুসলিমদের প্রতি ইসলামের উদারনীতির সঙ্গে শিবির একমত এবং সেটিই ধারণ করে।
তিনি আরও বলেন, বাঙালি সংস্কৃতির নামে কলকাতার সংস্কৃতি আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আমরা চাই আমরা আমাদের আত্মপরিচয় ও আত্মসম্মানের সংস্কৃতি চর্চা করতে। আমরা আমাদের স্বকীয়তা বুঝতে শিখেছি, নিজের সক্ষমতা বুঝতে শিখেছি। এটা বুঝেই আমরা ঠিক করবো কার সঙ্গে বন্ধুত্বসুলভ আচরণ করব।
দেশের শিক্ষার মানোন্নয়নে শিবিরের পরিকল্পনার বিষয়ে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, ছাত্রশিবির ইতোমধ্যে ৩০ দফা শিক্ষা প্রস্তাবনা দিয়েছে। সরকার এটি বাস্তবায়ন হলে শিক্ষা, গবেষণা ও কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে পৃথিবীর বুকে আমরা অনেকদূর এগিয়ে যেতে পারব।
এ সময় ভারতের বিষয়ে তিনি বলেন, ভারত আমাদের তথা কথিত প্রতিবেশী। কারণ তারা আমাদের দাস বানিয়ে রেখেছিল। তাই এতদিন ভালো ছিল। হাসিনা চলে যাওয়ার পর তাদের এখন মাথা ব্যথার কারণ। পরে এটি মাথা কাটার বিষয়ও হতে পারে। যদি তারা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক করে আমরাও করবো। কিন্তু তারা যদি স্বাধীনতা, সার্বভৌমের বিষয়ে ঝামেলা করে আমরাও করবো। আমাদের সেই হিম্মত রয়েছে। হাসিনার রায় নিয়ে ভারতের কিছু মিডিয়া এত অপপ্রচার করেছে সেটাই প্রমাণ করে তারা কেমন প্রতিবেশী।
অনুষ্ঠানে শাখা শিবিরের সভাপতি আবু নাছির ত্বোহার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলাম। এছাড়া অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কাউন্সিলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. রহুল আমিন, মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু জোফার মো. মোসলেহ উদ্দিন, কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান ও অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় গবেষণা সম্পাদক ফখরুল ইসলাম ও মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক শরীফ মাহমুদ। এছাড়াও শাখা শিবিরের সাবেক সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ সকল পর্যায়ের নেতাকর্মী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
নবীন বরণে শিক্ষার্থীদের জন্য আকর্ষণীয় ব্যাগ, টিশার্ট, প্যাড, বই, কলমদানী ও চাবির রিং উপহার দেওয়া হয়। কৃষিবিষয়ক বিভিন্ন সেক্টর ও চাকরি ক্ষেত্রে সফল শিবিরের সাবেক নেতারা এসময় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ শিক্ষার্থীদের একাডেমিকের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের দক্ষতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোকপাত করেন।
মন্তব্য করুন