বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ফার্ম স্ট্রাকচার অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং (এফএসইই) বিভাগে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষার্থী ভর্তিতে বিভাগীয় শিক্ষকদের অনাগ্রহ দেখানোর অভিযোগ উঠেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশিত স্নাতকোত্তর ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী যে কোনো বিভাগে ভর্তি যোগ্যতা সিজিপিএ ২ দশমিক ৫ এবং শিক্ষার্থীরা যে বিভাগে ভর্তি হতে চায় ওই বিভাগীয় কোর্সগুলোতে গড়ে গ্রেড মান ৩ থাকতে হবে। তবে এখন এফএসইই বিভাগীয় শিক্ষকরা বিভাগীয় বিষয়গুলোতে গড়ে ৩ দশমিক ২৫ গ্রেডমানের নিচে কোনো শিক্ষার্থীকেই ভর্তি নিচ্ছেন না। এতে নিজ বিভাগ থেকে স্নাতক করেও স্নাতকোত্তর করার সুযোগ না পেয়ে চরম হতাশায় ভুগছেন শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা কমিটির সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. মো. আবু হাদী নূর আলী খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী স্নাতক পর্যায়ে সিজিপিএ ২ দশমিক ৫ এবং ওই শিক্ষার্থী যে বিভাগে স্নাতকোত্তর করতে চায় ওই বিভাগীয় বিষয়গুলোতে গড়ে গ্রেড ৩ থাকতে হবে। এই যোগ্যতা সম্পন্ন যে কোনো শিক্ষার্থীই স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ভর্তি হতে পারবে। স্নাতকোত্তর ভর্তি যোগ্যতা নির্ধারণের ক্ষমতা বিভাগীয় শিক্ষকের হাতে থাকে না। এটি প্রশাসনিক বিষয়। সাধারণত একজন সুপারভাইজার নির্ধারণ করে শিক্ষার্থীরা স্নাতকোত্তর ডিগ্রির জন্য আবেদন করে। তবে কোনো শিক্ষক যদি কোনো ছাত্রকে তার গবেষণায় সম্পৃক্ত করতে আগ্রহী না হন সেটি ওই শিক্ষকের ব্যক্তিগত ব্যাপার।
কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ থেকে স্নাতকে উত্তীর্ণ এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, আমাদের স্নাতক পর্যায়ের তৃতীয় বর্ষেই বিভাগ ভাগ হয়ে যায়। আমি ফার্ম স্ট্রাকচার অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকেই স্নাতক সম্পন্ন করি। পরে গত ১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর ভর্তির বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয় সিজিপিএ ২ দশমিক ৫ ও বিভাগীয় বিষয়ে গড়ে ৩ থাকলে স্নাতকোত্তরে আবেদন করতে পারবে। কিন্তু ফার্ম স্ট্রাকচার অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হতে গিয়ে জানতে পারলাম যে ওই বিভাগে ভর্তির জন্য বিভাগীয় বিষয়ে গড়ে ৩ দশমিক ২৫ গ্রেড মান লাগবে। বিভাগীয় শিক্ষকরা নাকি আগেই আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে শিক্ষার্থীদের এ বিষয়ে আগে থেকে কিছুই জানানো হয়নি। এখন এমন অবস্থা যে নিজ বিভাগেই জায়গা পাচ্ছি না। অনুষদের অন্যান্য বিভাগে কম গ্রেডেও ভর্তি নিচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ইনস্টিটিউটেও আমাদের ভর্তি নিতে আগ্রহ কম দেখাচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, ওই বিভাগীয় শিক্ষকরা আগে থেকেই শিক্ষার্থীদের স্নাতকোত্তর ডিগ্রির জন্য নিরুৎসাহিত করে আসছেন। কারণ হিসেবে বলেছেন, আমাদের মানসম্মত শিক্ষার্থী প্রয়োজন।
এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে ফার্ম স্ট্রাকচার অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. আলী আশরাফ জানান, শিক্ষার্থীরা চাইলেই আমাদের এই বিভাগে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে। তবে সুপারভাইজার হিসেবে বিভাগের সকল শিক্ষকই ৩ দশমিক ২৫ গ্রেড না থাকলে শিক্ষার্থী নিতে চান না। মূলত কম গ্রেডধারী শিক্ষার্থীদের কাজের ক্ষেত্রে তাদের থিথিসের মান খুবই নিম্ন হয়। এজন্য শিক্ষকরা ওই সকল শিক্ষার্থীদের নিতে আগ্রহ দেখান না। নিজস্ব মানদণ্ডের ভিত্তিতে শিক্ষার্থী বাছাই করার এখতেয়ার একজন সুপারভাইজারের আছে। শিক্ষার্থীরা যদি তাদের সুপারভাইজারদের রাজি করাতে পারে তাহলে তাদের ভর্তিতে কোনো প্রকার বাধা নাই।
মন্তব্য করুন