যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) শহীদ মসিয়ুর রহমান হলে আগুন লাগার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হল প্রশাসন। তাদের আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন হলটির প্রভোস্ট ড. আশরাফুজ্জামান জাহিদ। শনিবার (১১নভেম্বর) দুপুর ১টার দিকে হলের পঞ্চম তলার ৫২৭ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। তবে তা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার আগেই ঝুঁকি নিয়ে প্রায় ৪০ মিনিটের চেষ্টায় পানি ও অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করে আগুন নেভান ছাত্ররা। আগুনে কক্ষে থাকা ল্যাপটপ, ফ্যান ও ব্যবহার্য জিনিসপত্র পুড়ে গেছে। তবে এ ঘটনায় কেউ আহত হননি।
আগুন নিয়ন্ত্রণের পরপরই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হন। তারা প্রাথমিকভাবে মনে করছেন শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।
আগুন লাগার বিষয়ে পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের শিক্ষার্থী নিশান রাব্বি বলেন, ‘মসজিদে থেকে দেখি হলের পঞ্চম তলায় আগুন জ্বলছে। আগুন দেখে দ্রুত আমরা সেখানে উপস্থিত হই। দেখি ৫২৭ নম্বর রুমের ভেতরে আগুন জ্বলছে। রুমে তালা দেওয়া ছিল। তালা ভেঙে পানি ও অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করি। তবে কিছু অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র নষ্ট ছিল, কাজ করছিল না।’
এ বিষয়ে ইইই বিভাগের শিক্ষার্থী রাব্বী হোসেন বলেন, ‘বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের জন্য হলে আগুন লেগেছে। এ শর্ট সার্কিটের কারণ হলো হল প্রশাসনের অবহেলা। হলে বৈদ্যুতিক কোনো বিষয়ে অভিযোগ করলে ৩-৪ দিন এমনকি এক সপ্তাহ পর সমাধান করে। বৈদ্যুতিক বিষয়ে এমন অবহেলা করা উচিত নয়।’
শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের প্রভোস্ট ড. আশরাফুজ্জামান জাহিদ বলেন, ‘হলে ইলেক্ট্রিশিয়ান ও জনবল সংকটের ফলে বৈদ্যুতিক সমস্যা সমাধানে কিছুটা বিলম্ব হয়। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জনবলের স্বল্পতার বিষয়ে চিঠি দিলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।’ তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুত এ সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন।
তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিক ভবনে অবস্থানকালে দুপুর ১টা ২০ মিনিটের দিকে হলে আগুন লাগার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছি। শিক্ষার্থীরা অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ও পানি দিয়ে আগুন নেভান।’
মেয়াদোত্তীর্ণ ও অকেজো অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ব্যবহার না করার ফলে কিছু যন্ত্র কাজ করেনি। মেয়াদোত্তীর্ণ ও অকেজো অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি।’
তিনি বলেন, ‘অগ্নি দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থীরা নিজেদের কীভাবে রক্ষা করবে এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে আনবে, সে বিষয়ে হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।’
মন্তব্য করুন