পাকিস্তানে হামলার জবাবে ভারতের পাঁচ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছে ইসলামাবাদ। দেশটির এ হামলায় ব্যবহার করা হয়েছে চীনা যুদ্ধবিমান। হামলার পর এবার ভারত থেকে চীনা ক্ষেপণাস্ত্র পিএল-১৫ উদ্ধার করেছে।
শুক্রবার (০৯ মে) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের পাঞ্জাবের হোশিয়ারপুরে সম্পূর্ণ অবিস্ফোরিত অবস্থায় একটি চীনা পিএল-১৫ দূরপাল্লার আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র পাওয়া গেছে। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, এটি পাকিস্তানি সেনাবাহিনী থেকে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্রের অংশ, যা ভারতীয় আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রতিহত করেছিল।
বিজেপি আইটি সেল প্রধান অমিত মালব্যসহ একাধিক সূত্র জানিয়েছে যে, উদ্ধারকৃত ক্ষেপণাস্ত্রটি চীনের তৈরি পিএল-১৫, যা পাকিস্তানি বিমানবাহিনীর একটি জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমান থেকে নিক্ষিপ্ত হয়েছিল। তবে এটি বিস্ফোরিত হয়নি এবং সম্পূর্ণ অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
পিএল-১৫ চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি এয়ার ফোর্সের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ক্ষেপণাস্ত্র। এটি ২০০ থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। এছাড়া এটি সক্রিয় রাডার নির্দেশনা ব্যবস্থা এবং উন্নত বৈদ্যুতিক যুদ্ধবিধি প্রতিরোধ ক্ষমতাসমৃদ্ধ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পিএল-১৫ সম্পূর্ণ অক্ষত সংস্করণ পাওয়া ভারতের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও প্রযুক্তিগত সুবিধা। ভারতীয় প্রতিরক্ষা বিজ্ঞানীরা এর অভ্যন্তরীণ সিস্টেম- সিকার, প্রপালশন, ডেটালিংক এবং ইলেকট্রনিক কাউন্টার-কাউন্টারমেজার বিশ্লেষণ করে উন্নত দেশীয়বিয়ন্ড-ভিজ্যুয়াল-রেঞ্জ (বিভিআর) ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে অগ্রগতি অর্জন করতে পারে।
এছাড়া, এই ক্ষেপণাস্ত্রের লক্ষ্য নির্ধারণ ও জ্যামিং প্রতিরোধ ক্ষমতা বিশ্লেষণ করে ভারত তার ইলেকট্রনিক যুদ্ধের ক্ষমতা উন্নত করতে পারবে। গ্রাউন্ড-ভিত্তিক এস-৪০০ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার টিউনিং এবং প্রস্তুতি আরও কার্যকর করা সম্ভব হবে।
কৌশলগতভাবে, পিএল-১৫-এর দুর্বলতা ও শক্তি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে ভারতীয় পাইলটরা চীনা জে-২০ বা জে-১৬ যুদ্ধবিমানের বিরুদ্ধে কার্যকর কৌশল গড়ে তুলতে পারবে। পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স বা ইসরায়েলের মতো কৌশলগত মিত্রদের সঙ্গে এই গোয়েন্দা তথ্য ভাগ করে কূটনৈতিক লাভ অর্জন করাও সম্ভব।
কতটা ভয়ংকর পিএল-১৫ একটি সক্রিয় রাডার হোমিং সিস্টেম ব্যবহার করে, যা এটিকে লক্ষ্যবস্তুতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে লক করতে এবং জ্যামিং প্রতিরোধে সক্ষম করে তোলে। এটি ‘বিয়ন্ড-ভিজ্যুয়াল-রেঞ্জ’ যুদ্ধের জন্য ডিজাইন করা, অর্থাৎ এটি শত্রু লক্ষ্যবস্তুকে দৃষ্টিসীমার বাইরে থেকেও ধ্বংস করতে পারে।
সক্রিয় রাডার হোমিং সিস্টেম, ডুয়েল-পালস ইঞ্জিন ও ইলেকট্রনিক কাউন্টারমেজার (ইসিসিএম) প্রযুক্তিসমৃদ্ধ এই ক্ষেপণাস্ত্রটি চীনের ৫ম প্রজন্মের জে-২০স্টেলথ যুদ্ধবিমানে ব্যবহার করা হয়। সামরিক বিশেষজ্ঞরা একে ‘গেম চেঞ্জার’ হিসেবে বিবেচনা করছেন। কেননা এটি আমেরিকার AIM-120D AMRAAM ক্ষেপণাস্ত্রের সমতুল্য।
মন্তব্য করুন