যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) শহীদ মসিয়ূর রহমান (শ.ম.র) হলে ক্রমেই বেড়ে চলেছে মশার উপদ্রব। দিনে এবং রাতে সমান হারে মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন এখানকার আবাসিক শিক্ষার্থীরা। তবে মশার তীব্র উৎপাত থাকলেও হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। বর্তমানে সারা দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় মশা নিধনে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। ব্যাপারটা এমন যেন মশা জেগে আছে আর হল প্রশাসন ঘুমাচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মশা দমনে হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। যত্রতত্র বেড়ে ওঠা ঝোপঝাড়, আগাছা, পানি নিষ্কাশনের ড্রেন, ময়লা ফেলার জায়গা নিয়মিত পরিষ্কার না করা এবং নিয়মিত মশানাশক ওষুধ না ছিটানোর ফলে মশার উৎপাত বেড়েছে। অন্যদিকে মশার কামড়ে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়াসহ নানা মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও করছেন শিক্ষার্থীরা।
ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তানজিম বলেন, বর্তমানে আমাদের হলে মশার পরিমাণ খুব বেড়ে গেছে। বিশেষ করে সন্ধ্যায় রুমে বসে মশার কারণে পড়াশোনা করা যায় না। আর এখন বেশিরভাগ বিভাগেই পরীক্ষা চলমান। তাই সবাই পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। এ সময়ে মশার কামড়ে কেউ ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হলে সেটা পরীক্ষার ওপরও প্রভাব ফেলবে। হলে নিয়মিত মশা নিধনে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে এবং হলের আশপাশে বিশেষ করে পুকুর পাড়ের দিকে আগাছা পরিষ্কার করতে হবে।
এ বিষয়ে ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের আবাসিক শিক্ষার্থী রেজুয়ান আহমেদ শাহিদ বলেন, মশার জন্য সন্ধ্যার পর কয়েল ছাড়া পড়ার টেবিলে বসা যায় না। মশার কামড়ে পড়ালেখা, ঘুমানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। রাতে দরজা খোলা অবস্থায় রাখা যায় না। হলের বিভিন্ন স্থানে ময়লার স্তূপের কারণে মশা বাড়ছে। ডেঙ্গুর এ প্রকোপের সময় মশার উপদ্রব আমাদের আতঙ্কিত করে তুলছে। কখন আমরা অসুস্থ হয়ে যাই সেই ভয়ে আছি। আমরা এ সমস্যার দ্রুত প্রতিকার চাই।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, আমি হলের তৃতীয় তলায় থাকি। বেশ কিছুদিন ধরে মশার উপদ্রব বাড়ছে। আমার বন্ধু-বান্ধব যারা নিচতলা থাকে তারা অনেক বেশি এ উপদ্রবের শিকার। অনেকে দিনের বেলাতেও মশারি ব্যবহার করে। রাতে তো কথাই নেই। সবসময় কয়েল ব্যবহার করা যায় না; কারণ অধিক সময় কয়েল ব্যবহারে অ্যালার্জিসহ বিভিন্ন রকমের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেড়ে যায়। এ অবস্থায় হল প্রশাসনের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখছি না। যদি সবকিছু বলে ও অভিযোগ করেই কাজ করাতে হয় তাহলে হল প্রশাসনের কাজ কী? তা আমার বুঝে আসে না।
এ বিষয়ে শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের প্রভোস্ট ড. মো. আশরাফুজ্জামান জাহিদকে মোবাইল ফোনে কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
মন্তব্য করুন