জবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০২ জুন ২০২৪, ০২:৫১ পিএম
আপডেট : ০২ জুন ২০২৪, ০৩:৫৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সূত্রাপুর ছাত্রলীগের সঙ্গে জবি ছাত্রলীগের মারামারি

গ্রাফিক্স : কালবেলা
গ্রাফিক্স : কালবেলা

পূর্ব শত্রুতার জের ধরে সূত্রাপুর থানা ছাত্রলীগের কর্মীদের সঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই গ্রুপ থেকে দুজন করে চারজন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।

শনিবার (০১ জুন) রাতে ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত সোহরাওয়ার্দী কলেজের সামনে ও ন্যাশনাল হাসপাতালে এ মারামারির ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে সোহরাওয়ার্দী কলেজের সামনে প্রথম মারামারির সূত্রপাত ঘটে। এ সময় সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও সূত্রাপুর থানা ছাত্রলীগের কর্মীরা রড, হাতুড়ি, ইট দিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহির ফরাজির কর্মী মেহেদী হাসান মিরাজসহ তার বন্ধুদের মারধর করে গুরুতর আহত করে। এরপর তাদের ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ইনিস্টিটিউট হাসপাতালে নেওয়া হলে সোহরাওয়ার্দী- সূত্রাপুর ছাত্রলীগের কয়েকজন হাসপাতালে অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে আসেন। এ সময় খবর পেয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রলীগের সভাপতি-সেক্রেটারি গ্রুপের ৩০ থেকে ৪০ জন নেতাকর্মী রড, লাঠি, জিআই পাইপ নিয়ে এসে তাদের ওপর হামলা করে। এতে সূত্রাপুর থানা ছাত্রলীগের সিয়াম ও ফয়সাল নামে দুজন গুরুতর আহত হন।

পরবর্তীতে জবি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সোহরাওয়ার্দী কলেজ, পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্ক এলাকায় লাঠিসোঁটা নিয়ে শোডাউন দিয়ে বিপক্ষ গ্রুপকে খুঁজতে থাকে। এ সময় জবি ছাত্রলীগের ১৩ ব্যাচের চয়ন, ১৫ ব্যাচের সিফাত উল্লাহ, পাভেল, ইবনে সিনা, রহিম, ১৭ ব্যাচের অপু ও রাজাসহ অনেকে নেতৃত্ব দেয়। এ ঘটনায় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। একজনকে থানায় আটকও করা হয়। পরে রাতে জবি ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজী ও সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন খবর পেয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে।

এবিষয়ে আহত হওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গ্রুপের কর্মী ও অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র মেহেদী হাসান মিরাজ বলেন, আমি পুরান ঢাকার স্থানীয়। গতকাল রাতে জগন্নাথের ৫ থেকে ৬ জন ও পুরান ঢাকার আরও ৫ থেকে ৬ জন বন্ধুরা মিলে সোহরাওয়ার্দী কলেজের সামনে আমরা আড্ডা দিচ্ছিলাম। এ সময় আমার বন্ধু আকাশের (বাবু বাজারে ব্যবসা করে) সঙ্গে পুরাতন শত্রুতার জের ধরে আমাদের ওপর হামলা করে। এ সময় তারা ৭ থেকে আটজন থাকলেও তাদের এলাকা বলে কাছে থাকা হাতুড়ি, রড দিয়ে হামলা করে। এসময় আমার কয়েকজন বন্ধু মার খেয়ে দৌড় দেয়। একা পেয়ে আমাকে ও আমার বন্ধু সাব্বিরকে (জুবিলি স্কুলে পড়ালেখা করেন) মেরে গুরুতর আহত করে। এরপর আমাকে ন্যাশনাল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ওই গ্রুপের কয়েকজন হাসপাতালে আমাদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে আসে। মনে করছে জগন্নাথের কেউ নেই। তবে খবর পেয়ে ফরাজী ভাইয়ের গ্রুপের আমার বড় ভাইরা আসে। তখন বিপক্ষ গ্রুপের সিয়াম ও ফয়সাল নামে দুজন মার খেয়েছে।

বিপক্ষ গ্রুপের পরিচয় জানতে চাইলে মিরাজ আরও বলেন, তারা কেউ সোহরাওয়ার্দী ছাত্রলীগের, আবার কেউ সূত্রাপুর থানা ছাত্রলীগের কর্মী। তাদের নেতা আজিম। আর আজিম সূত্রাপুর থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাহাদ বিল্লালের রাজনীতি করে। জানা যায়, আলী আজিম খাঁন সূত্রাপুর থানা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। পড়ালেখা করেছেন সোহরাওয়ার্দী কলেজে। এদিকে ঘটনাস্থল থেকে শান্ত নামে মেহেদীর এক বন্ধুকে থানায় আটক করেছে সূত্রাপুর থানার পুলিশ।

এবিষয়ে সূত্রাপুর থানা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলী আজম খাঁন বলেন, সিয়ামকে মারতে জগন্নাথের ৩০-৪০ জন আসে। আর এরা ছিল মাত্র ৩-৪ জন। তাদের হামলায় সিয়াম ও ফয়সাল নামে দুজন আহত হয়েছে। সিয়াম একটি কলেজে ও ফয়সাল লালবাগ কলেজে পড়ে। আমার সঙ্গে রাজনীতি করতে বলতে ছাত্রলীগের পোগ্রাম করে মাঝেমাঝে। এটা রাজনৈতিক ঘটনা না। বন্ধুদের ভিতর হাতাহাতি।

সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের কলেজের কেউ এ ঘটনায় জড়িত নেই। বহিরাগতরা কলেজের নাম ভাঙিয়ে ঘটনা ঘটায়। সিয়াম, ফয়সাল কলেজের কেউ না।

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আক্তার হোসেন বলেন, গতকালের মারামারির ঘটনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কোনো সংশ্লিষ্টতা নাই। জগন্নাথের যে ছেলে মার খেয়েছে, সে ছাত্রলীগের কোনো পদে নাই, কর্মীও নয়।

একই কথা বলেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজী বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কোনো সম্পর্ক নেই। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী জড়িত ছিল, অনেকে আহত হয়েছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা নিবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ না।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ক্যাম্পাসের ভেতর কোনো মারামারি হয়নি। জেনেছি এই ঘটনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র ছিল। কোনো অপরাধকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশ্রয় দেয় না। পুলিশ প্রশাসন ঘটনা তদন্ত করছে। তারা ব্যবস্থা নিবে।

এ বিষয়ে সূত্রাপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রবিউল ইসলাম রাতে জানান, তুচ্ছ ঘটনায় হাতাহাতি। আমরা ঘটনাস্থলে আসার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ নিয়েছি। এ ঘটনার তদন্ত চলছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ভোটের অধিকার পুনরুদ্ধারই জাতির একমাত্র লক্ষ্য : গয়েশ্বর

ঘুষি মেরে বিমানের মনিটর ভেঙে ফেললেন লন্ডন প্রবাসী

ইসরায়েলের যে কারাগারে বন্দি শহিদুল আলম

আফগানিস্তানে বিমান হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান, টিটিপি প্রধান নিহতের গুঞ্জন

বিকট বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল কাবুল

এককভাবে সরকার গঠন করবে বিএনপি : এমরান চৌধুরী

‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হলে রংপুর অচল করে দিতে বাধ্য হবো’

নির্বাচন নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র সহ্য করা হবে না : লায়ন ফারুক

ট্রেনে কাটা পড়ে যুবকের পা বিচ্ছিন্ন

বৃহত্তর মিরপুরে সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত ওলামা সম্মেলন অনুষ্ঠিত

১০

দেশ বাঁচাতে হলে বিএনপির বিকল্প নেই : টুকু

১১

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা / বস্তিবাসী ও শহীদ পরিবারের ন্যায্য দাবি মেনে নিন

১২

মা-মেয়েকে গলা কেটে হত্যা

১৩

রাজধানীতে ১৭ ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে জাগপা ছাত্রলীগের বৈঠক

১৪

হাত-মুখ বেঁধে শিশুকে ধর্ষণ, যুবককে খুঁজছে পুলিশ

১৫

এনসিটিবির নামে ‘নকল’ ছাপাখানা, আটক ৫ 

১৬

পচা চাল ক্রয়, বাচ্চু মিয়াকে বাধ্যতামূলক অবসর

১৭

শহিদুল আলমসহ নৌবহর থেকে আটক ব্যক্তিদের কারাগারে বন্দি

১৮

পা হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন আইসক্রিম বিক্রেতা রফিকুল

১৯

গুণগত শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা তারেক রহমানের অঙ্গীকার : সাঈদ

২০
X