অবশেষে শেষ হলো চলতি বছরের এইচএসসির লিখিত পরীক্ষা। পরীক্ষা রুটিন অনুযায়ী, গত ১০ আগস্ট লিখিত পরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা থাকলেও বেশ কয়েকটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার কারণে তিন দফায় পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এর ফলে পরীক্ষা শেষ হতে ৯ দিন বেশি সময় লেগেছে।
সূচি অনুযায়ী, আগামী ২১ আগস্ট থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে ব্যবহারিক পরীক্ষা।
শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, এবারের পরীক্ষাটি ছিল বেশ আলোচিত। কারণ পরীক্ষা চলাকালীন বন্যা, রাজনৈতিক সহিংসতা, বিমান দুর্ঘটনা এবং এক শিক্ষার্থীর পরীক্ষা দিতে না পারার মতো বেশ কিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটেছিল। সবচেয়ে আলোচিত ছিল শোকের দিনে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে পদ হারান মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের সচিব সিদ্দিক জুবায়ের। এসব কারণে এবারের পরীক্ষাটি ছিল বেশ আলোচিত।
শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, এবারের পরীক্ষাটি ছিল বিগত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত। কারণ পরীক্ষা চলাকালীন বন্যা, জাতীয় নাগরিক পার্টির সমাবেশকে ঘিরে গোপালগঞ্জের সংঘর্ষ, মাইলস্টোন কলেজে বিমান দূর্ঘটনা ঘটে। এসব কারণে তিন ধাপে বেশ কয়েকটি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা ছিল মা্ইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনার পর রাষ্ট্রীয় শোক দিবসে পরীক্ষা স্থগিত করতে দেরি হওয়াকে কেন্দ্র করে শিক্ষাসচিবের পদ চলে যাওয়া।
বেশ আলোচিত ঘটনা ঘটে পরীক্ষার প্রথম দিন। ওই দিন রাজধানীর বাঙলা কলেজ কেন্দ্রে দেড় ঘণ্টা বিলম্বে পরীক্ষা কেন্দ্রে আসে আনিসা আহমেদ। এরপর তাকে পরীক্ষা কেন্দ্র প্রবেশ করতে দেননি দায়িত্বরত শিক্ষকরা। আনিসা দাবি করে, ওই দিন সকালে তার মায়ের স্ট্রোক হয় এবং তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়, এ জন্য সে সময়মতো কেন্দ্রে আসতে পারেনি। পরীক্ষা দিতে না পারায় সে কান্নায় ভেঙে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার কান্নার ছবি ভাইরাল হলে সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় তার পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়।
যদিও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সেই ঘটনার তদন্তে করে আনিসার দাবির পক্ষে প্রমাণ না মেলায় তার পরীক্ষা নেওয়ার আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে শিক্ষা বোর্ড, এমনটি জানা গেছে। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি শিক্ষা বোর্ড। এরপর দ্বিতীয়বার সেই তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
বোর্ড কর্মকর্তারা জানান, পরীক্ষা শুরু হওয়ার পরপরই জুলাই মাসে ভয়াবহ বন্যার কারণে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ডের কিছু পরীক্ষা স্থগিত করতে হয়। এরপর ১৭ জুলাই গোপালগঞ্জ জেলার সহিংস পরিস্থিতির কারণে তিনটি বোর্ডের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। ২১ জুলাই মাইলস্টোন কলেজে বিমান দুর্ঘটনার পর সারা দেশের সব পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করা হয়। এসব কারণে স্থগিত হওয়া পরীক্ষাগুলোর পুনর্নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী পরীক্ষা শেষ হতে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে প্রায় ৯ দিন বেশি সময় লেগেছে।
শিক্ষা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় মোট ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলেন। এর মধ্যে ১০ লাখ ৫৫ হাজারের বেশি পরীক্ষার্থী ছিলেন সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে, মাদ্রাসা বোর্ডের (আলিম) অধীনে প্রায় ৮৬ হাজার এবং কারিগরি বোর্ডের অধীনে প্রায় ১ লাখ ৯ হাজার শিক্ষার্থী ছিলেন।
মন্তব্য করুন