ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে কোটা আন্দোলনকারীদের কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দল।
সোমবার (১৫ জুলাই) সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. লুৎফুর রহমান এবং যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান ও অধ্যাপক আব্দুস সালাম এক যৌথ বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা বাতিল করে ২০১৮ সালে জারি করা সরকারি পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে কোটা প্রথা পুনর্বহালের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের যৌক্তিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন দমনের উদ্দেশ্যে গত কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন মহল থেকে হুমকি-ধমকি প্রদান করা হচ্ছিল। এমনকি আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ কর্তৃক মামলাও করা হয়েছে। গতকাল রোববার প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যমূলক কোটা প্রথা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্যের ফলে আন্দোলনকারীরা আরও প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠে। এরই ধারাবাহিকতায় ন্যায্য ও যৌক্তিক দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ১৫ জুলাই চলমান শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কর্মসূচিতে ছাত্রলীগ নামধারী সন্ত্রসীরা ন্যক্কারজনক সশস্ত্র হামলা চালায়। এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং হামলাকারী সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে দ্রুত শাস্তির আওতায় এনে আন্দোলনকারীদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিয়ে উদ্ভূত সংকটের দ্রুত সমাধানের কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
সাদা দলের এই শিক্ষক নেতারা আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অহংকার ও শ্রেষ্ঠ অর্জন। মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান এবং তাদের প্রতি আমাদের সম্মান ও কৃতজ্ঞতা প্রশ্নাতীত। চাকরিতে কোটা সংরক্ষণ ছাড়াও তাদের অবদানের স্বীকৃতি এবং তাদের সম্মান জানানোর অন্য আরও অনেক বিকল্প আছে। তাদের প্রদত্ত রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিসহ আরও নতুন বিকল্প অবলম্বন করা যায়। কিন্তু তা না করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের নামে আমাদের তরুণ প্রজন্মকে দ্বিধাবিভক্ত করার অপকৌশল গ্রহণ করা হচ্ছে। এটি দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণকর হবে না।
তারা আরও বলেন, বৈষম্যমূলক প্রত্যয় পেনশন স্কিম বাতিলসহ তিন দফা দাবিতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আন্দোলন কর্মসূচি চলমান আছে। কিন্তু চলমান শিক্ষক আন্দোলনকে কটাক্ষ এবং শিক্ষকদের অসম্মান করে বিভিন্ন মহল থেকে মন্তব্য করা হচ্ছে। রোববার প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনেও এমনটাই হয়েছে। এতে আমরা মর্মাহত। পেশাগত দায়িত্বের বাইরে বাঙালির মুক্তিসংগ্রাম, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজের ভূমিকা ও অবদান সুবিদিত।
মন্তব্য করুন