কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩০ জুলাই ২০২৩, ০৬:৪৮ পিএম
আপডেট : ৩০ জুলাই ২০২৩, ০৭:১৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
জাতীয়করণের দাবি

আমরণ অনশনের ঘোষণা শিক্ষকদের

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি

মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) আহ্বানে সাড়া দিয়ে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষকরা।

রোববার (৩০ জুলাই) ২০তম দিনের মতো জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান করছেন তারা। জাতীয়করণের দাবি আদায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ চান শিক্ষকরা। আগামীকাল সোমবারের (৩১ জুলাই) মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা না পেলে ১ আগস্ট থেকে আমরণ অনশনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষক নেতারা।

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আরও পড়ুন : এক বিদ্যালয়ে একজনই পরীক্ষার্থী, তিনিও ফেল!

গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাজমান সরকারি ও বেসরকারি বৈষম্য দূরীকরণ এবং ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সবার জন্য শিক্ষার সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ চায় বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি। এই এক দফা দাবি আদায়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ১১ জুলাই থেকে শিক্ষকদের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি চলছে। অবস্থানের প্রথম ও সপ্তম দিনে বিটিএর সভাপতিসহ শতাধিক আহত হয়েছেন, আহতদের মধ্যে একজন মৃত্যুবরণ করেছেন এবং তিনজনের অবস্থা গুরুতর।

এতে বলা হয়, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে একটি যুদ্ধবিধস্ত দেশে প্রায় ৩৭ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেছিলেন, ঠিক তেমনিভাবে বঙ্গবন্ধু তনায়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় ২৬ হাজার বেসরকারি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করে জাতির কাছে স্মরণীয় হয়ে আছেন। এমতাবস্থায় দেশ ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে দ্রুত জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ বাস্তবায়ন, শিক্ষায় বিনিয়োগে ইউনেস্কো-আইএলও’র সুপারিশসমূহ বাস্তবায়ন এবং সবার জন্য শিক্ষা গ্রহণের সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে শিক্ষক-কর্মচারা লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।

লাগাতার অবস্থানের আগে কী কী কর্মসূচি পালিত হয়েছে তা জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ৮ মার্চ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১৩ মার্চ সারা দেশের জেলা সদরে এবং কেন্দ্রীয়ভাবে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শিক্ষক-কর্মচারীদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল এবং জেলা প্রশাসক/বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। ১৪ মার্চ বেসরকারি সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২ ঘণ্টার কর্মবিরতি পালনসহ ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় এবং জাতীয়করণের যৌক্তিকতা তুলে ধরে লিফলেট বিতরণ করা হয়। গত ২০ মার্চ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মহাসমাবেশে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখার এবং মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের ঘোষণা দেয়ার আহবান জানানো হয়। কিন্তু তাতেও সাড়া না দেওয়ায় ১১ জুলাই থেকে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। এতে আরও বলা হয়, গত ২২ জুলাই বিটিএর একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা কবির বিন আনোয়ারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের ন্যায়সঙ্গত দাবি তুলে ধরেন এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য অনুরোধে জানান। তিনি শিক্ষকদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের ব্যবস্থা করার আশ্বাস প্রদান করেন।

এর আগে ১৭ জুলাই মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক নেহাল আহমেদ এবং বিটিএর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৫ সদস্যের প্রতিনিধিরা বৈঠক করেন। মহাপরিচালক বিটিএর নেতাদের সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর বৈঠকের আয়োজন করেন। শিক্ষামন্ত্রীর বৈঠকে কিছু সংগঠনকে বাদ দিয়ে আন্দোলনরত বিটিএর পাশাপাশি মূল ধারার শিক্ষক সংগঠনসহ সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট একটি সংগঠনের অঙ্গসংগঠনের অখ্যাত, স্বঘোষিত ও সদ্য গজিয়ে ওঠা থানা/মহানগর পর্যায়ের শিক্ষক নেতাদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। যারা বৈঠকে আন্দোলনরত শিক্ষককর্মচারীদের সম্পর্কে বাজে মন্তব্য করে বৈঠকের পরিবেশ ঘোলাটে করার চেষ্টা করে। বৈঠকের পূর্বে ও পরে শিক্ষা মন্ত্রীর শিক্ষকদের কটাক্ষ করে দেওয়া বক্তব্য ও গ্রীষ্মের ছুটি বাতিলের সিদ্ধান্তে সারা দেশের বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা মর্মাহত হন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা চান শিক্ষক-কর্মচারীরা। তাই প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা না পাওয়ায় শিক্ষক-কর্মচারীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সঙ্গে সমমনা সংঠনগুলো বিটিএর সভাপতি অধ্যক্ষ মো. বজলুর রহমান মিয়াকে আহ্বায়ক, সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদকে প্রধান সমন্বয়কারী এবং ঐক্যবদ্ধ অন্যান্য সব সংগঠনের সভাপতিগণ যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাধারণ সম্পাদকগণকে সমন্বয়কারী করে সংগ্রাম কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিটিএ সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদ জানান, সাধারণ শিক্ষকদের সদিচ্ছা থাকা স্বত্ত্বেও ব্যক্তি স্বার্থে কতিপয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডিসহ প্রতিষ্ঠান প্রধানরা জাতীয়করণের বাইরে থাকতে চাওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাদে প্রায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে শিক্ষক-কর্মচারীরা লাগাতার অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন।

তিনি আরও জানান, শিক্ষামন্ত্রীর গ্রীষ্মের ছুটি শীতকালে সমন্বয়ের ঘোষণায় সারা দেশের ছাত্র, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে সমালোচনার ঝড় ওঠেছে। শিক্ষক-কর্মচারীরা শিক্ষামন্ত্রীর অসৌজন্যমূলক বক্তব্যসহ গ্রীষ্মের ছুটি বাতিলের নির্দেশ প্রত্যাখ্যানের ফলে প্রেস ক্লাবের সামনে প্রতিনিয়ত শিক্ষক-কর্মচারীদের উপস্থিতি বাড়ছে। ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত না পেলে ১ আগস্ট থেকে আমরণ অনশনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

পপুলার ফার্মায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি

পুতিন-মোদি বৈঠক, পারস্পরিক সাহায্যে জোর

বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপ, ঘূর্ণিঝড়ের শঙ্কা

আজ টিভিতে দেখা যাবে যেসব খেলা

কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

তেলবাহী ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত, খুলনার সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ

২৩ অক্টোবর : নামাজের সময়সূচি 

বুধবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

‘সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন করা হবে’

ইউএনএফপিএ এবং জাপান সরকারের মাঝে ৪০ কোটি টাকার সহায়তা চুক্তি

১০

‘রাষ্ট্রপতির চেয়ারে বসে কোনো চক্রান্ত করার সুযোগ দেওয়া হবে না’

১১

বুলগেরিয়ায় পড়তে ইচ্ছুক বাংলাদেশিদের জন্য সুখবর

১২

ভিনির দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকে রিয়ালের অসাধারণ জয়

১৩

ঘূর্ণিঝড় ডানার তাণ্ডব চলবে রাত থেকে ভোর পর্যন্ত

১৪

টানা দ্বিতীয় হারে এশিয়া কাপ থেকে বাংলাদেশের বিদায়

১৫

বঙ্গভবন এলাকা থেকে আন্দোলনকারীদের সরে যাওয়ার আহ্বান হাসনাত-সারজিসের

১৬

বাংলাদেশ সিরিজের জন্য আফগানিস্তানের দল ঘোষণা

১৭

প্রধান উপদেষ্টার একান্ত সচিব হলেন মোজাম্মেল হক

১৮

প্রধান উপদেষ্টা সুস্থ আছেন, গুজব না ছড়ানোর অনুরোধ

১৯

যুক্তরাজ্য বিএনপির সম্পাদক কয়ছরকে জগন্নাথপুরে গণসংবর্ধনা

২০
X