ছয় দফা দাবিতে চলমান কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে দেশের প্রায় সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ চলছে। এর ফলে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে একাডেমিক কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রয়েছে। কারিগরি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ গত ২৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় এই আন্দোলনের ডাক দেয়। এরপর গত ৩০ এপ্রিল থেকে বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে না গিয়ে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করেন। শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই পূর্ণাঙ্গ ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের প্রধান ৬ দফা দাবি হলো
১. জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় বাতিল করতে হবে। সেই সঙ্গে বিতর্কিত নিয়োগবিধি বাতিল ও সংশ্লিষ্টদের চাকরিচ্যুতির দাবি।
২. ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যেকোনো বয়সে ভর্তি বাতিল ও উন্নত দেশের আদলে ইংরেজি মাধ্যমে চার বছর মেয়াদি কারিকুলাম চালু।
৩. উপসহকারী প্রকৌশলী (১০ম গ্রেড) পদে ডিপ্লোমা পাস শিক্ষার্থীদের নিয়োগ নিশ্চিত না করলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান।
৪. কারিগরি শিক্ষা বহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করে সংশ্লিষ্ট পদগুলোতে কারিগরি শিক্ষিতদের নিয়োগ নিশ্চিত করা।
৫. কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে আলাদা কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন।
৬. টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং নির্মাণাধীন ৪টি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পলিটেকনিক পাস শিক্ষার্থীদের শতভাগ ভর্তি নিশ্চিত করা।
উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে গত ২২ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ ৮ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। এই কমিটিকে তিন সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষার্থীদের দাবির বাস্তবায়ন রূপরেখা তৈরি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কমিটির প্রথম সভা গত ২৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আগে আলোচনা ও সমঝোতার প্রেক্ষিতে আন্দোলনকারী ছাত্ররা তাদের পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি স্থগিত করে ক্লাসে ফিরে যাওয়ার এবং শিক্ষাঙ্গনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার ঘোষণা দিয়েছিলেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছিল, এর মাধ্যমে কারিগরি শিক্ষাঙ্গনের অস্থিরতা দূর হবে এবং স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসবে।
তবে, সেই পরিস্থিতি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। শিক্ষার্থীরা পুনরায় ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে তাদের ৬ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। ফলে, দেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোতে অচলাবস্থা বিরাজ করছে এবং একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
মন্তব্য করুন