জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের দাবিতে ‘জকসু : কী, কেন ও কীভাবে?’ শীর্ষক আলোচনা সভা করেছে শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট।
বুধবার (২১ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বরে অনুষ্ঠিত এই গণতান্ত্রিক আলোচনা সভায় অংশ নেন বিভিন্ন বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীসহ একাধিক ছাত্রসংগঠনের নেতা ও শিক্ষকমণ্ডলী।
আলোচনা সভা শেষে বিকেলে জবি শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট উপাচার্যের কাছে জকসুর খসড়া গঠনতন্ত্র ও প্রস্তাবনা জমা দেয়।
সভায় বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে জকসু নির্বাচন না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে। আবাসন সংকট, পরিবহন সমস্যা, শ্রেণিকক্ষের অভাব, কো-কারিকুলার কার্যক্রমের সীমাবদ্ধতা এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের পিছিয়ে পড়ার অন্যতম কারণ হিসেবে তারা ছাত্র সংসদের অনুপস্থিতিকে দায়ী করেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দিন বলেন, জকসু নেই বলেই জবি আজ বঞ্চনার শিকার। এর অভাবে প্রশাসন শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি উপেক্ষা করে দুর্নীতির সুযোগ নিচ্ছে।
তিনি জানান, ৫ আগস্টের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন কমিটি গঠন করে, যা পরবর্তীতে বিশেষ সিন্ডিকেটে উত্থাপিত হয়। তবে শিক্ষার্থীদের মতামত গ্রহণের জন্য সিদ্ধান্তের সময় পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রফিকুজ্জামান ফরিদ বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় জকসু গঠনের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক নজির স্থাপন করতে পারে। তবে খসড়া গঠনতন্ত্রে সভাপতি নির্বাচনসহ কয়েকটি বিষয়ে সংশোধনের প্রস্তাব রয়েছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যেন কোনো অগণতান্ত্রিক ধারা স্থান না পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্র যদি গণতান্ত্রিক না হয়, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও গণতন্ত্র টিকে না। ছাত্র সংসদ শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের জায়গা—এই চেতনাকে ধারণ করেই জকসু পুনঃপ্রতিষ্ঠা জরুরি।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জবি শাখার আহ্বায়ক ইভান তাহসিফ এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম মারুফ। অনুষ্ঠানে ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি মাঈন আল মোবাশ্বির, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম সদস্য সচিব কিশোর আনজুম সাম্যসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
উল্লেখ্য, ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ পর্যন্ত কোনো জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। ফলে প্রায় ১৮ হাজার শিক্ষার্থী সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত প্রতিনিধিত্ব ও মতপ্রকাশের অধিকার থেকে বঞ্চিত থাকছে বলে অভিযোগ উঠছে।
মন্তব্য করুন