দক্ষিণী সিনেমার অন্যতম উজ্জ্বল নক্ষত্র রজনীকান্ত। পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে দর্শকের হৃদয় জয় করে আসছেন তিনি। তার অভিনয় মন কাড়ে সব সিনেমাপ্রেমীর। পর্দায় বড় বড় ভিলেনকে এক তুড়িতে উড়িয়ে দেন তিনি। তার অ্যাকশন দেখে ভক্ত হয়নি এমন মানুষ পাওয়া কঠিন। রজনীকান্তের সিনেমা মুক্তি পেলেই রাজ্যজুড়ে চলে উৎসব; দেওয়া হয় ছুটি।
দক্ষিণী সিনেমাকে জনপ্রিয় করে তোলায় তার অবদান অস্বীকার করা যায় না। তামিল সিনেমার জনপ্রিয় এ অভিনেতাকে হিন্দি, তেলেগু, কন্নড় ও ইংরেজি ভাষার চলচ্চিত্রেও দেখা গেছে। বাস কন্ডাক্টর থেকে কিংবদন্তি অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন রজনীকান্ত। তার জীবনের প্রতিটি বাঁকে রয়েছে সংগ্রামের গল্প।
১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর বেঙ্গালুরুতে জন্মগ্রহণ করেন রজনীকান্ত। পারিবারিকভাবে তার নাম রাখা হয় শিবাজি রাও গায়কোয়াড়। বাবা রামোজি রাও গায়কোয়াড় ছিলেন হাবিলদার। মা জিজাবাঈয়ের মৃত্যুর পর চার ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট রজনীকান্ত বুঝতে পারেন, সংসারের অবস্থা ভালো নয়। পরিবারকে সাহায্য করতে একটা সময় কুলির কাজও করেন তিনি।
প্রথম জীবনে বেঙ্গালুরু পরিবহন সেবা বা বিটিএসের বাস হেলপার ছিলেন। বাসের ভেতরেই নাকি তার অসামান্য স্টাইল ফিল্মস্টারদের মতো ছিল। বাস থামানো বা চালু করার সিগন্যাল দিতে তার সিটি বাজানোও যাত্রী ও অন্যান্য হেলপারদের মধ্যে তুমুল জনপ্রিয় হয়।
বাসের হেলপারের কাজ ছেড়ে চেন্নাইয়ের আদিয়ার ফিল্ম ইনস্টিটিউটে নাম লেখান তিনি। সেখানে নজরে পড়ে যান বিখ্যাত পরিচালক বালাচন্দ্রের। ১৯৭৫ সালে তার হাত ধরে রজনীকান্তের প্রথম তামিল ছবি ‘অপূর্বা রাগঙ্গাল’ মুক্তি পায়। ছবিতে তিনি খল চরিত্রে অভিনয় করে ব্যাপক প্রশংসা কুড়ান। এরপর আর তাকে ফিরে তাকাতে হয়নি।
২০০০ সালে পদ্মভূষণ পান রজনীকান্ত। ২০১৪ সালে ৪৫তম ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অব ইন্ডিয়ায় তাকে ভূষিত করা হয় সেন্টেনারি অ্যাওয়ার্ড ফর ইন্ডিয়ান ফিল্ম পার্সোনালিটি অব দ্য ইয়ার পুরস্কারে।
রজনী ভক্তরা তাকে শুধু ভালোবাসেন না, প্রকৃতপক্ষে অন্তরেও ধারণ করেন। সম্পূর্ণ আলাদা স্টাইল ও অসামান্য অভিনয় গুণে কোটি কোটি মানুষের মনে ঠাঁই পাওয়া রজনী এত বড় তারকা হওয়া সত্ত্বেও মাটির সঙ্গে সম্পর্ক কোনো দিন ছেড়ে দেননি।
মন্তব্য করুন