

শীতকাল আসছে আর সাথে বাড়ছে বায়ুদূষণের ঝুঁকি। বাতাস যত দূষিত, আমাদের ফুসফুস ততই প্রভাবিত হচ্ছে। বিশেষ করে শহরের মানুষরা, যেখানে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (AQI) নিয়মিত উচ্চ থাকে, তাদের জন্য ফুসফুসের যত্ন নেওয়া খুব জরুরি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানিয়েছে, মাত্র কয়েকটি দেশ বায়ুর মানদণ্ড পূরণ করেছে। ভারতের মধ্যে ১৩টি শহর বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায় রয়েছে। দূষিত বাতাস শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত অসুস্থতা বাড়ায়।
ধূমপান শুধু নিজের জন্য নয়, আশপাশের মানুষের জন্যও ক্ষতিকর। শিশুদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি থাকে, কারণ তারা বড়দের তুলনায় বেশি শ্বাস নেয়। ডা. মৌমিতা মিশ্র বলেন, ‘গর্ভাবস্থায় মায়ের ধূমপান বা দূষণের সংস্পর্শে থাকা ভবিষ্যতে শিশুদেরও ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (COPD)-এর ঝুঁকি বাড়ায়।’
বাতাসে মিশে থাকা ক্ষতিকর উপাদানগুলোর মধ্যে প্রধান ৫টি হলো :
পার্টিকুলেট ম্যাটার (PM10, PM2.5) : ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করে।
গ্রাউন্ড-লেভেল ওজোন : হাঁপানি ও শ্বাসকষ্ট বাড়ায়।
কার্বন মনোক্সাইড : শরীরে অক্সিজেন পৌঁছানো বাধাগ্রস্ত করে।
সালফার ডাইঅক্সাইড : গলা ও চোখে জ্বালা সৃষ্টি করে।
নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড : যানবাহনের ধোঁয়া থেকে আসে, ফুসফুসের সমস্যা বাড়ায়।
এগুলো শুধু শ্বাসনালি নয়, রক্তপ্রবাহের মাধ্যমে শরীরের অন্যান্য অঙ্গকেও ক্ষতি করতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, এর সঙ্গে ক্যানসারের সম্পর্কও রয়েছে।
নিম্নলিখিত লক্ষণগুলো দেখা দিলে সতর্ক হওয়া উচিত :
- একটানা কাশি (এক সপ্তাহের বেশি)
- নাক বা গলায় জ্বালা
- শ্বাস নিতে কষ্ট বা হাঁপ ধরা
- অল্প কাজেই দমবন্ধ ভাব
- বুক ব্যথা বা শ্বাস নিতে অসুবিধা
- আগের অসুখ (যেমন হাঁপানি) বেড়ে যাওয়া
প্রতি বছর দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় পালমোনারি ফাংশন টেস্ট (PFT) করানো উচিত– ঠিক যেমন বছরে একবার সুগার বা কোলেস্টেরল চেক করা হয়। ডা. মিশ্র বলেন, স্পাইরোমেট্রি একটি দ্রুত, সহজ এবং ব্যথাহীন পরীক্ষা। এতে ফুসফুস কতটা ভালো কাজ করছে তা বোঝা যায়।
একটি যন্ত্রে জোরে শ্বাস ফেলে ফুঁ দিতে হয়। বোঝা যায় : ফুসফুসে সংকোচন আছে কি না, ধূমপানের ক্ষতি, হাঁপানি বা COPD-এর অবস্থা, দূষণের প্রভাব এবং চিকিৎসার জন্য পরামর্শ।
যদি স্পাইরোমেট্রিতে সমস্যা ধরা পড়ে
ডাক্তার আরও কিছু পরীক্ষা করতে পারেন। যেমন, লাং প্লেথিসমোগ্রাফি : ফুসফুসের আয়তন ও প্রতিরোধ মাপার জন্য।
Gas Diffusion Test : অক্সিজেন কত ভালোভাবে রক্তে মিশছে তা যাচাই করতে।
কার্ডিওপালমোনারি এক্সারসাইজ টেস্টিং (CPET) : হাঁটা বা ব্যায়ামের সময় ফুসফুস ও হৃদপিণ্ডের কার্যকারিতা পরীক্ষা।
তথ্যসূত্র : হেলথ শটস
মন্তব্য করুন