জরায়ুমুখ ক্যান্সারে মৃত্যু শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যে উদ্বোধন হলো স্কুল পর্যায়ে এইচপিভি টিকাদান কার্যক্রম। সব বয়সী নারীদের স্ক্রিনিং টেস্টের মাধ্যমে জরায়ুমুখ ক্যান্সারের বিষয়ে সচেতন হতে আহ্বান জানান স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম।
রোববার (১৫ অক্টোবর) রাজধানীর ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত টিকা কার্যক্রম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
স্কুল পর্যায়ে এইচপিভি টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রাণঘাতী এক রোগ। দেশে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী এই রোগে ভুগে মারা যাচ্ছেন প্রতি বছর। টিকার মাধ্যমে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। ফলে দেশব্যাপী স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই টিকা কার্যক্রম শুরু হলো আজ। এইচপিভি টিকার কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। এর সফল ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালও সম্পন্ন হয়েছে। আগামীতে দেশের সকল নারীদের এই টিকার আওতায় আনা হবে। যার মধ্য দিয়ে জরায়ুমুখ ক্যান্সারে নারী মৃত্যুও কমে আসবে।’
এইচপিভি টিকা পেতে আগ্রহীদের অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে এই টিকা গ্রহণ করা যাবে। রেজিস্ট্রেশন করতে হবে এই লিংকে গিয়ে www.vaxepi.gov.bd।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মাদ খুরশীদ আলম। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজের সভাপতি ও ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম। এ ছাড়াও এই টিকা কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ডা. মো. আখতারুজ্জামান, ডিজিএইচএসের অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রফেসর ড. আহমেদুল কবির, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব ডা. মো. শিব্বির আহমেদ ওসমানী, ইউনিসেফ বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ডা. রিয়াদ মাহমুদ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ডা. রাজেন্দ্র বহরা।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মাদ খুরশীদ আলম বলেন, ‘নারীদের সুরক্ষা দিতে এই কার্যক্রম। দেশজুড়ে ধাপে ধাপে সবাইকে এই টিকার আনা হবে।’
বাংলাদেশ সরকারের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির আওতায় ইউনিসেফ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং গ্যাভির (Gavi) সহযোগিতায় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পরিচালিত এই ভ্যাকসিন কার্যক্রমের আওতায় ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণি বা সমমান অধ্যয়নরত এবং ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বহির্ভূত কিশোরীদের বিনামূল্যে এইচপিভি টিকা প্রদান করা হবে। ভিকারুননিসা স্কুলের পাশাপাশি ঢাকা শহরের ১৩৮টি স্কুলে একযোগে এই টিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
ইউনিসেফের পক্ষ থেকে বলা হয়, জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধী এইচপিভি টিকা গ্রহণের জন্য ইতোমধ্যে সাড়ে পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছেন। সংস্থাটির প্রাথমিক লক্ষ্য, প্রাথমিকভাবে শুধুমাত্র ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন স্কুলে ২৩ লাখ কিশোরীকে এই টিকা প্রদান করা হবে।
মন্তব্য করুন