গর্ভাবস্থা প্রতিটি নারীর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়। এই সময় শরীরে নানা পরিবর্তন আসে, যা অনেক সময় কিছু অস্বস্তিকর শারীরিক সমস্যা তৈরি করে। এর মধ্যে একটি সাধারণ কিন্তু অবহেলিত সমস্যা হলো হাড়ের দুর্বলতা বা অস্টিওপোরোসিস। অনেকেই হয়তো জানেন না, গর্ভাবস্থার সময় হাড় দুর্বল হয়ে যেতে পারে, আর তাই শুরু থেকেই যত্ন নেওয়া জরুরি।
আরও পড়ুন : শরীর যথেষ্ট ফাইবার পাচ্ছে কিনা বুঝবেন যেভাবে
আরও পড়ুন : তেলাপিয়া মাছ খেলে কি সত্যিই বিপদ ?
চিকিৎসকরা বলছেন, গর্ভাবস্থায় অস্টিওপোরোসিসের কারণে হাড় ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি পর্যন্ত তৈরি হতে পারে। তবে কিছু সহজ নিয়ম মানলে এ সমস্যা সহজেই এড়ানো যায়।
গর্ভাবস্থায় শরীরের হরমোনের ভারসাম্য বদলে যায় এবং শরীরের গঠনে পরিবর্তন আসে। এসব কারণে অনেক নারী হাড়ের ঘনত্ব হারান, যেটাকে বলে গর্ভাবস্থাজনিত অস্টিওপোরোসিস। এটি এক ধরনের হাড় ক্ষয়, যাতে হাড় ভঙ্গুর হয়ে যায়। বিশেষ করে বয়স্ক নারীরা কিংবা যাদের আগে থেকেই হাড় দুর্বল, তারা বেশি ঝুঁকিতে থাকেন।
ক্যালসিয়াম খেতে ভুলবেন না
হাড় ভালো রাখার জন্য ক্যালসিয়াম খুব দরকার। গর্ভাবস্থায় এই খনিজ উপাদানের প্রয়োজন আরও বেড়ে যায়, কারণ মায়ের সঙ্গে সঙ্গে শিশুরও হাড় তৈরি হয়। চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন:
- প্রতিদিন এক গ্লাস দুধ খেতে
- সবুজ শাকসবজি, দুগ্ধজাত খাবার (যেমন দই, পনির) খেতে
প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট খেতে
ভিটামিন ডি দরকার
শরীর যেন ক্যালসিয়াম শোষণ করতে পারে, তার জন্য দরকার ভিটামিন ডি। ভিটামিন ডি পেতে:
- ডিমের কুসুম, মাশরুম, ফ্যাটি ফিশ খান
- প্রতিদিন সকালে কিছুক্ষণ সূর্যের আলোতে থাকুন
হালকা ব্যায়াম করুন
সুস্থ থাকতে ব্যায়াম খুব দরকার, এমনকি গর্ভাবস্থাতেও। হাঁটা, হালকা যোগব্যায়াম বা সাঁতার করলে হাড় মজবুত থাকে এবং মনও ভালো থাকে। তবে যেকোনো ব্যায়াম শুরু করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
- গর্ভাবস্থায় শুধু কী খাচ্ছেন তা নয়, কী খাচ্ছেন না—তাও গুরুত্বপূর্ণ।
- ধূমপান ও মদ্যপান একেবারে এড়িয়ে চলুন। এগুলো শুধু শিশুর নয়, মায়ের হাড়েরও ক্ষতি করে।
- অতিরিক্ত ক্যাফেইন বা প্রসেসড খাবারও কম খাওয়া ভালো।
আরও পড়ুন : ইউরিক অ্যাসিড কমাতে সাহায্য করে যে ৫ বাদাম ও শুকনো ফল
আরও পড়ুন : কত বয়সে শুরু করবেন কোলেস্টেরল টেস্ট? চিকিৎসক যা বলছেন
গর্ভাবস্থায় হাড় দুর্বল হওয়া অস্বাভাবিক নয়, কিন্তু এটা এড়ানো সম্ভব। সঠিক খাবার, হালকা শরীরচর্চা এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস আপনাকে এবং আপনার শিশুকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে। সবসময় চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলুন এবং নিজের যত্ন নিন—এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
মন্তব্য করুন