বাংলাদেশি সমাজে অনেক পুরুষেরই ধারণা, বিয়ের পর নাকি শরীরের গঠন পাল্টে যায়—বিশেষ করে পেটের মেদ বা ভুঁড়ি বেড়ে যায়। অনেকেই হাসি-ঠাট্টার ছলে এটিকে ‘বিয়ের পরের উপহার’ বলে মন্তব্য করেন। কেউ লজ্জা পান, কেউ আবার চিন্তিত হয়ে পড়েন। অথচ বাস্তবতা হলো, শরীরে মেদ জমা বা স্বাস্থ্য বেড়ে যাওয়া শুধু বিয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়; বরং এর পেছনে রয়েছে জীবনযাপনের ধরন, খাদ্যাভ্যাস ও শারীরিক কর্মকাণ্ডের পরিবর্তন।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আধুনিক জীবনযাপনে অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস, অল্প পরিশ্রম ও মানসিক চাপের কারণে শরীরে বাড়তি মেদ জমে। বিয়ের পর অনেকে নিয়মিত বাইরে খাওয়ার অভ্যাস করেন, অনেকে আবার দায়িত্ব ও মানসিক স্বস্তির কারণে অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসে চলে যান। ফলে ওজন ও ভুঁড়ি বাড়ার প্রবণতা দেখা দেয়। কিন্তু এটি কতটা সত্যি, আর কতটা সামাজিক ধারণা? এ নিয়েই মত দিয়েছেন পুষ্টিবিদ কাজী হামিদা বানু বর্ষা।
আরও পড়ুন : লবণ বেশি খেলে কী ঘটে শরীরে? জানালেন পুষ্টি বিশেষজ্ঞ
আরও পড়ুন : ৫ ধরনের ব্যক্তির জন্য পেঁপে খাওয়া বিপজ্জনক
সম্প্রতি দেশের একটি জনপ্রিয় টিভি চ্যানেলের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘বিয়ে হচ্ছে সামাজিক, মানসিক ও শারীরিক পরিবর্তন। এই পরিবর্তনে মানুষের চলাফেরা, খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপন নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্যে চলে আসে। তখন স্বভাবতই শারীরিক পরিবর্তন আসে। এ সময় কারও হয়তো ওজন বেশি ছিল, তারা ফিট হতে পারে; আবার কেউ হয়তো খুবই চিকন স্বাস্থ্যের ছিল, তার স্বাস্থ্য বেড়েছে। আর যদি বলতে হয় পেট বেড়ে যাচ্ছে, তাহলে এটি কেবলই মিথ বা ধারণাগত বিশ্বাস।’
শরীরের বিভিন্ন জায়গায় অতিরিক্ত মেদ জমা চলমান জীবনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু বিয়ের সঙ্গে এর প্রকৃত অর্থে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কি না, এ ব্যাপারেও জানিয়েছেন পুষ্টিবিদ কাজী হামিদা। তিনি বলেন, ‘একজন মানুষের জীবনযাপন যেমন ছিল, তা যদি হঠাৎ পরিবর্তন হয় তাহলে সে হয় মোটা হবেন, না হয় চিকন হবেন। মূলত বিয়ে পরবর্তী নয়, জীবনযাপন পরিবর্তনের পরবর্তী সময় পেট বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা বাড়তে পারে।’
মন্তব্য করুন