পেটে গ্যাস জমে অস্বস্তিতে ভুগছেন? আপনি একা নন! আজকাল অনেকেই এই সমস্যায় পড়েন— কখনো একটু ভারী খেলে, কখনো একটু ঝাল-মশলাযুক্ত খাবারেই পেট ফুলে ওঠে, বুক জ্বালা করে, ঘন ঘন ঢেঁকুর ওঠে।
বাজারে হাজার রকম ওষুধ পাওয়া যায় বটে, কিন্তু সব সময় ওষুধ নয়— ঘরোয়া কিছু উপায়ই হতে পারে আপনার মুশকিল আসান।
চলুন জেনে নিই গ্যাস থেকে বাঁচতে কী কী ঘরোয়া খাবার রাখতে পারেন রোজকার ডায়েটে।
১. শসা
শসা পেট ঠান্ডা রাখতে দারুণ। এতে আছে ফ্লেভানয়েড আর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যা পেট ফাঁপা কমাতে সাহায্য করে। খেতে সুস্বাদু, সাথে উপকারীও।
২. দই
দই হজমে সাহায্য করে। এতে থাকা ভালো ব্যাকটেরিয়া পেটকে করে হালকা, কমায় গ্যাস। প্রতিদিন এক বাটি দই রাখতে পারেন খাওয়ার সঙ্গে।
৩. পেঁপে
পেঁপেতে আছে পাপায়েন নামের একটি এনজাইম যা খাবার হজমে সহায়ক। গ্যাস কমাতে নিয়মিত পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস করুন।
৪. কলা ও কমলা
এই দুটি ফল পাকস্থলীর বাড়তি সোডিয়াম বের করে দিতে সাহায্য করে। কলার ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্যও দূর করে, ফলে গ্যাসের ঝুঁকি কমে যায়।
৫. আদা
আদা হলো প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি। কাঁচা আদায় একটু লবণ মিশিয়ে খেলে গ্যাস, বমিভাব, পেট ফাঁপা দূর হবে। চাইলে আদা চাও পান করতে পারেন।
৬. ঠান্ডা দুধ
ঠান্ডা দুধ পাকস্থলীর অ্যাসিডকে নিয়ন্ত্রণ করে। বুক জ্বালার সমস্যায় এক গ্লাস ঠান্ডা দুধ খেয়ে দেখুন, মিলবে তাৎক্ষণিক আরাম।
৭. দারুচিনি
এক গ্লাস পানিতে আধা চা চামচ দারুচিনি গুঁড়ো দিয়ে ফুটিয়ে নিন। দিনে ২-৩ বার খেলে হজমশক্তি বাড়ে, গ্যাস কমে।
৮. জিরা
জিরা গ্যাস, বমিভাব ও হজমের সমস্যায় চমৎকার কাজ করে। চাইলে পানিতে জিরা ভিজিয়ে রেখে সেই পানি পান করতে পারেন।
একটি বাড়তি টিপস : জ্বর হলে জিরা আর গুড় বড়ি বানিয়ে খাওয়ার কথাও বলা হয় আয়ুর্বেদে!
৯. লবঙ্গ ও এলাচ
২-৩টি লবঙ্গ মুখে নিয়ে চুষুন, কিংবা এলাচ গুঁড়ো খেয়ে নিন। এতে গ্যাস ও অম্বল কমবে, সঙ্গে মুখের দুর্গন্ধও যাবে।
১০. পুদিনা পাতার পানি
৫টি পুদিনা পাতা এক কাপ পানিতে ফুটিয়ে নিন। সকালে খালি পেটে পান করুন। পেট ফাঁপা আর বমিভাব কমাতে দারুণ কাজ করে।
১১. মৌরি পানি
রাতে কিছু মৌরি পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে সেই পানি পান করুন। এটি হজমশক্তি বাড়ায়, গ্যাস কমায়।
১২. কিশমিশ ভেজানো পানি
কিশমিশ ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই পানি পান করুন আর কিশমিশগুলো চিবিয়ে খান। নিয়মিত করলে হজম ভালো থাকবে, গ্যাস হবে না।
১৩. সরিষা
সরিষা শুধু রান্নায় নয়, হজমেও সাহায্য করে। খাবারে সরিষার ব্যবহার বাড়াতে পারেন— যেমন- সরিষার তেল, সরিষা বাটা ইত্যাদি।
- খাবার ধীরে চিবিয়ে খান
- অতিরিক্ত ঝাল বা ফাস্ট ফুড এড়িয়ে চলুন
- খাওয়ার পরই শোয়ার অভ্যাস বাদ দিন
- পর্যাপ্ত পানি পান করুন
- প্রতিদিন কিছু হাঁটাহাঁটি করুন
পেটে গ্যাস কোনো কঠিন রোগ নয়, তবে উপেক্ষা করলে এটি বড় অসুবিধার কারণ হতে পারে। ওষুধের দিকে না গিয়ে ঘরোয়া উপায়গুলো চেষ্টা করে দেখুন— নিরাপদ, সহজ আর দীর্ঘমেয়াদে কার্যকর।
সতর্কতা : এই তথ্যগুলো শুধু সাধারণ জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য। আপনার শরীর ও স্বাস্থ্য সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই একজন ডাক্তার বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
মন্তব্য করুন