

শীতের দুপুরে ধোঁয়া ওঠা ভাত, পাতলা মুসুর ডাল আর মচমচে আলুভাজা—বাংলাদেশিদের কাছে এ যেন অকৃত্রিম এক স্বাদ-আনন্দ। এই সরল খাবারকে আরও খানিকটা পরিপূর্ণ করতে অনেকেই প্লেটে যোগ করেন এক টুকরা লেবু। বিয়েবাড়ির ভোজ থেকে শুরু করে বাসার সাধারণ খাবার, গরম খাবারের সঙ্গে লেবুর এই জনপ্রিয় জুটি যেন বহুদিনের অভ্যাস।
শুধু তাই নয়, অনেকে আবার গরম স্যুপ, গরম মাছের ঝোল কিংবা মাংসের ঝোলে লেবুর রস চিপে খান। এমনকি ওজন কমানোর আশায় সকালে গরম জল-লেবু-মধুও অনেকের রুটিনে রয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই অভ্যাস কি সত্যিই উপকারী? গরম খাবারের সঙ্গে লেবু মেশানো কি স্বাস্থ্যকর?
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লেবুতে থাকা ভিটামিন সি শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ত্বক-চুল ভালো রাখে, দাঁত মজবুত করে এবং শরীরের ভেতরের নানা সমস্যার সমাধানে ভূমিকা রাখে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এই ভিটামিন সি তাপ-সংবেদনশীল। গরম ভাত বা ডালের সঙ্গে লেবুর রস মেশালে তার পুষ্টিগুণ দ্রুত কমে যায়। শরীরে প্রবেশ করার আগেই ভিটামিন সি নষ্ট হয়ে যায় বলে আসলে তেমন কোনও উপকারই মেলে না।
সকালে গরম জল-লেবু-মধুও তেমন কার্যকর নয়
আনন্দবাজার বলছে, ওজন কমানোর আশায় অনেকেই সকালে গরম জল-লেবু-মধু পান করেন। কিন্তু জেনে রাখা ভালো, অতিরিক্ত গরম জলে লেবুর রস মেশালে ভিটামিন সি বেশিরভাগই তাপে নষ্ট হয়ে যায়। ফলে প্রত্যাশিত সুফল পাওয়া যায় না।
তাহলে কীভাবে খাবেন লেবু
পুষ্টিবিদদের মতে, গরম ধোঁয়া ওঠা খাবারের সঙ্গে লেবু মেশানো উচিত নয়। তাই খাবার যদি গরম থাকে, আগে একটু ঠান্ডা করে নিন। ঘরের তাপমাত্রায় এলেই লেবুর রস মেশাতে পারেন।
বিশেষজ্ঞরা আরও পরামর্শ দেন, সকালে লেবু খেতে চাইলে ফুটন্ত পানিতে নয়, হালকা গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে পান করাই উপকারী।
তাই অভ্যাস ভাঙতে না চাইলেও খানিক সচেতন হওয়া জরুরি। লেবুর আসল পুষ্টিগুণ পেতে চাইলে রান্না বা গরম খাবারের সঙ্গে সরাসরি না মিশিয়ে একটু ঠান্ডা হওয়ার পরেই লেবু ব্যবহার করাই সবচেয়ে ভালো। আপনার স্বাস্থ্যই এতে উপকৃত হবে।
মন্তব্য করুন