

প্রতিদিন সকালে জোরে বা কর্কশ অ্যালার্মে ঘুম ভাঙলে বিরক্ত লাগাটা স্বাভাবিক। কিন্তু জানেন কি, এই হঠাৎ শব্দ শুধু মন খারাপই করে না - আপনার শরীর ও মস্তিষ্কেও বাড়তি চাপ ফেলে? নিয়মিত এমনভাবে ঘুম ভাঙলে দীর্ঘমেয়াদে মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
হঠাৎ জেগে উঠলে শরীরে বাড়ে স্ট্রেস
গভীর ঘুমের মধ্যে জোরে শব্দে ঘুম ভাঙলে শরীর তা বিপদের সংকেত মনে করে।
‘ফাইট অর ফ্লাইট’ প্রতিক্রিয়া: মস্তিষ্ক ভাবে কিছু একটা খারাপ ঘটছে।
স্ট্রেস হরমোন বেড়ে যায়: কর্টিসল ও অ্যাড্রেনালিন দ্রুত বাড়ে, ফলে হৃদস্পন্দন ও রক্তচাপ হঠাৎ বেড়ে যায়।
দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা: প্রতিদিন এভাবে স্ট্রেস তৈরি হলে হৃদযন্ত্র ও স্নায়ুতন্ত্রের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে এবং হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
ভাবনা-চিন্তার ক্ষমতা কমে যায়
হঠাৎ জাগলে আমাদের মস্তিষ্ক কিছু সময় স্থবির হয়ে থাকে। একে বলা হয় Sleep Inertia (ঘুমের জড়তা)।
জেগে ওঠার পর প্রথম ১৫ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা মনোযোগ কমে যায়।
সিদ্ধান্ত নেওয়া, মনে রাখা -এসব কাজ সাময়িকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে।
দৈনিকভাবে গভীর ঘুম ভাঙলে স্মৃতিশক্তিতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব
বছরের পর বছর জোরে অ্যালার্মের শব্দে ঘুম ভাঙলে -
উদ্বেগ বাড়ে: শরীর প্রতিদিন সকাল থেকেই চাপের মধ্যে থাকে।
মেজাজ খিটখিটে হয়: গবেষণায় দেখা গেছে, জোরে অ্যালার্ম ব্যবহারকারীরা দিনের শুরুতেই বেশি বিরক্ত ও অস্থির হয়ে পড়েন।
নরম বা ধীরে বাড়ে এমন অ্যালার্ম ব্যবহার করুন। হঠাৎ শব্দের বদলে মৃদু সুরে ঘুম ভাঙা শরীরকে কম স্ট্রেস দেয়।
Sunrise Alarm ব্যবহার করতে পারেন। ঘর ধীরে ধীরে আলো করে এমন অ্যালার্ম শরীরকে স্বাভাবিকভাবে জাগতে সাহায্য করে।
নিয়মিত ঘুমের রুটিন রাখুন। প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া ও উঠার অভ্যাস থাকলে অ্যালার্মের ধাক্কার প্রয়োজন কমে।
জোরে অ্যালার্ম সরাসরি মস্তিষ্কের কোষ নষ্ট না করলেও, প্রতিদিন এমন ধাক্কায় ঘুম ভাঙা শরীরকে অযথা স্ট্রেস দেয়। দীর্ঘ সময় এভাবে চলতে থাকলে হৃদযন্ত্র, মস্তিষ্ক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তাই অ্যালার্ম ব্যবহারের অভ্যাস একটু বদলালেই দিনটা শুরু হবে আরও শান্ত ও সুন্দরভাবে।
মন্তব্য করুন