চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে রাজধানীর বাংলা মটরস্থ বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) কার্যালয়ের সামনে ও ভেতরে বিক্ষোভ করেছে প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারীরা। এতে প্রায় তিন শতাধিক প্রার্থী অংশ নেন। যারা এতদিন বিআইডব্লিউটিসিতে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন।
রোববার (১৮ আগস্ট) সকাল ১০টা থেকে চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে বিআইডব্লিউটিসি কার্যালয়ের সামনে ও ভেতরে বিক্ষোভ শুরু হয়।
সরেজমিন দেখা গেছে, আন্দোলনকারীরা মাথায় পতাকা বেঁধে এই কার্যালয়ের সামনে এসেছেন। এই সময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দেন। দুয়েকজন কাফনের কাপড় পড়ে মাটিতে শুয়ে পড়েন। বেলা সাড়ে ১২টা থেকে কার্যালয় প্রাঙ্গণ ও বাইরে কয়েক দফা বিক্ষোভ মিছিল করেন আন্দোলনকারীরা। এরপর তারা মূল গেটে মানববন্ধন করেন। মানববন্ধন চলাকালে তারা বিআইডব্লিউটিসি চেয়ারম্যান বরাবর একটি স্মারকলিপি দেন।
আন্দোলনকারীরা বলেন, ২০০৬ সালে বিএনপি যখন ক্ষমতা ছাড়ে তখন এই দপ্তরে ১৭ জন অস্থায়ী কর্মচারী ছিলেন। এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ২০০৮ সালে নির্বাচন দেওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত অস্থায়ী ছিলেন ১৩৫-১৪০ জন। তবে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরে বিগত ১৫ বছরে এটি বেড়ে হয়েছে সাড়ে ৫ শতাধিক। এসব কর্মচারীদের চাকরি স্থায়ী হচ্ছে না। উল্টো বিভিন্ন পদে বাইরে থেকে নিয়োগ হচ্ছে। এসব নিয়োগে ইচ্ছা করেই অস্থায়ীদের বাদ দেওয়া হচ্ছে এবং আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে অনেকে চাকরি পাচ্ছে। সেজন্য তারা এই নিয়োগ বাতিল চাচ্ছেন। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিয়োগ বাতিল ও চাকরি স্থায়ীকরণের জন্য আল্টিমেটামও দিয়েছেন কর্মচারীরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মচারী বলেন, কিছুদিন আগে গ্রিজার পদে নিয়োগ হয়েছে। সেখানেও অস্থায়ীদের থেকে না নিয়ে বাইরে থেকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অস্থায়ীদের থেকে অনেকে লিখিত পরীক্ষায় পাস করলেও তাদের মৌখিক পরীক্ষায় (ভাইভা) বাদ দেওয়া হয়েছে। মূলত যারা টাকা দিতে পেরেছে, তাদের নিয়োগ হয়েছে, বাকিরা বাদ পড়েছে। সেজন্য আমরা চীফ পার্সোনাল ম্যানেজার (সিপিএম) ফজলে রাব্বী এবং নিয়োগ বোর্ডের সদস্য আশিকুজ্জামান আশিকের পদত্যাগ দাবি করছি। একইসঙ্গে এই নিয়োগ বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। চাকরি স্থায়ীকরণ করা হলে এসব দাবিতে কর্মচারীদের মাঠে নামা লাগতো না বলেও জানান তিনি।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান ড. এ কে এম মতিউর রহমান (অতিরিক্ত সচিব) কালবেলাকে বলেন, আমিও চাই বিষয়টির একটি স্থায়ী সমাধান হোক। এটি মূলত নির্বাহী বিভাগের কাজ। সেজন্য আমরা তাদের দাবি প্রধান উপদেষ্টার কাছে সচিবের মাধ্যমে আজকেই পাঠিয়ে দিব। কারণ আমরা চাইলেও তাদের স্থায়ী করতে পারব না। কারণ, বিষয়টি নিয়ে মামলা রয়েছে।
আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে নিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে যতটুকু খোঁজখবর নিয়েছি, অভিযোগটি সত্য নয়। তারপরও কয়েকদিন পরে তদন্তের জন্য দুদক প্রতিনিধি দল আসবে। তারা এসে যদি সত্যতা পায়, তাহলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবে।
মন্তব্য করুন