কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০২৪, ০৬:৩০ পিএম
আপডেট : ১৯ আগস্ট ২০২৪, ০৭:০০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ঝুলে থাকা সেই গুলিবিদ্ধ যুবকের বেঁচে ফেরার গল্প 

ঝুলে থাকা সেই গুলিবিদ্ধ যুবকের বেঁচে ফেরার গল্প 

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে যখন সংঘর্ষ চলে ঠিক তখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। সেই ভিডিওতে দেখা যায় নির্মাণাধীন ভবনের রড ধরে ঝুলে আছেন এক যুবক। লুকিয়ে থাকা ওই যুবককে দুজন পুলিশ গিয়ে অন্তত ছয় রাউন্ড গুলি করেন। সেই যুবক বেঁচে আছেন।

জানা গেছে, ওই যুবকের নাম আমির হোসেন (১৮)। তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে। ছয়-সাত বছর আগে মাকে হারিয়ে তারা তিন ভাই-বোন ঢাকায় চলে আসেন। বাবা বিল্লাল মিয়া গ্রামে অটোরিকশা চালান। নয়াপাড়ায় একটি টিনশেড বাসায় তিন ভাইবোন থাকেন।

নির্মাণাধীন ওই ভবনটির অবস্থান রামপুরার মেরাদিয়ায়। ১৯ জুলাই কী ঘটেছিল, জানতে চাইলে আমির হোসেন জানান, বিক্ষোভের কারণে দোকান বন্ধ ছিল। সেদিন ছিল শুক্রবার। আমি জুমার নামাজ পড়ে বাসায় ফিরছিলাম। বাসার কাছেই পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার মধ্যে পড়ে যাই। পুলিশ গুলি শুরু করে। আমি দৌড়ে নির্মাণাধীন ভবনটির চারতলায় গিয়ে আশ্রয় নিই। আমির হোসেন। ছবি : সংগৃহীত

তিনি বলেন, একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে পুলিশ ভবনটির চারতলায় উঠে যায়। সেখানে আমাকে পেয়ে যায়। পুলিশের সদস্যরা আমার দিকে আগ্নেয়াস্ত্র তাক করে বারবার নিচে লাফ দিতে বলেন। একজন পুলিশ সদস্য আমাকে ভয় দেখাতে কয়েকটি গুলিও করেন। একপর্যায়ে ভয়ে আমি লাফ দিয়ে নির্মাণাধীন ভবনটির রড ধরে ঝুলে থাকি। আমি যখন ঝুলে ছিলাম, তখন তৃতীয় তলা থেকে একজন পুলিশ সদস্য আমাকে লক্ষ্য করে ৬টি গুলি করেন। গুলিগুলো আমার দুই পায়ে লাগে। একপর্যায়ে পুলিশ চলে যায়, আমি ঝুলে ছিলাম। পরে ঝাঁপ দিয়ে কোনোরকমে তৃতীয় তলায় পড়ি। সেখানে দুই পা দিয়ে রক্ত ঝরছিল। প্রায় তিন ঘণ্টা পর আমাকে উদ্ধার করেন একজন শিক্ষার্থী ও দুই চিকিৎসক। তারা আমাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে তিন দিন চিকিৎসা নিয়ে আমি বাসায় ফিরি।

আমির বলেন, আমি এখন অন্যের সাহায্য ছাড়া শৌচাগারেও যেতে পারি না। দিনের বেলায় পায়ে তেমন ব্যথা থাকে না। তবে রাতে প্রচণ্ড ব্যথা হয়। ব্যথার কারণে ঘুম তেমন একটা হয় না। চিকিৎসকেরা আমাকে তিন মাস বিশ্রামে থাকতে বলেছেন। কিন্তু চাকরি না করে কীভাবে নিজের চিকিৎসা করাব, সংসার চলবে কীভাবে, সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি।

আমিরের ফুফু নাসিমা বেগম জানান, আমার ভাতিজা কোনো আন্দোলনে যায়নি। সে কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে পুলিশ তাকে গুলি করেছে। মা মরা ছেলেটাকে গুলি করে পঙ্গু করে দিল। আমরা গরিব মানুষ। চিকিৎসাটাও ঠিক মতো করাতে পারছি না। যে পুলিশ অন্যায়ভাবে আমার ভাতিজাকে গুলি করেছে তাদের বিচার চাই। সরকারের কাছে দাবি জানাই তারা যেনো ছেলেটার চিকিৎসার খরচ চালায়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

এসিআই-এ নিয়োগ, আবেদন করুন অনলাইনে

ঢাকায় বৃষ্টি নিয়ে আবহাওয়া অফিসের বার্তা

বসতভিটা ছিনিয়ে নেওয়ার হুমকি, সন্তানের বিরুদ্ধে বাবার মামলা

ব্রাজিলের মন্ত্রীর মার্কিন ভিসা বাতিল, দায়িত্বজ্ঞানহীন বললেন লুলা

ভিপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে রুমমেটকে ছুরিকাঘাতের অভিযোগ, কী বললেন প্রক্টর

শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে বৃদ্ধ আটক

২৭ আগস্ট : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

২৭ আগস্ট : টিভিতে আজকের খেলা 

আজ থেকে নতুন দামে বিক্রি হবে স্বর্ণ

২৭ আগস্ট : আজকের নামাজের সময়সূচি

১০

বুধবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

১১

কৃষিবিদ আসাদুজ্জামান কিটোনকে সংবর্ধনা দিল এ্যাব

১২

মাছ ধরার নৌকায় মিলল সাড়ে ৪ লাখ পিস ইয়াবা, আটক ৯

১৩

ভোলায় নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল / এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা

১৪

যৌথ বাহিনীর অভিযানে অনলাইন জুয়া চক্রের ২ সদস্য আটক

১৫

জেলেরা হেলমেট পরে মাছ ধরেন যেখানে

১৬

বিমানবাহিনীর আন্তঃঘাঁটি স্কোয়াশ প্রতিযোগিতা সমাপ্ত

১৭

স্পেনে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন

১৮

কারাগারে সন্তান জন্ম দিলেন হত্যা মামলার আসামি

১৯

সিলেটের সাদাপাথর লুটের ঘটনায় সিআইডির অনুসন্ধান শুরু

২০
X