টানা বৃষ্টি, পাহাড়ি ঢল ও উজানের পানিতে সৃষ্টি হয়েছে ভয়াবহ বন্যা। এ অবস্থায় পানিবন্দি মানুষের পাশে দাঁড়াতে হটলাইন নম্বর চালু করছে ফায়ার সার্ভিস।
এক বিজ্ঞপ্তিতে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, সারা দেশের বন্যাকবলিত এলাকার উদ্ধারকাজে সেবা গ্রহণের জন্য ফায়ার সার্ভিসের হটলাইন নম্বর ‘১০২’ তে কল করলেই দ্রুত সেখানে পৌঁছে যাবে কর্মীরা।
এ ছাড়া কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণকক্ষের নিয়মিত ফোন নম্বর ০২২২৩৩৫৫৫৫৫, মনিটরিং সেলে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের নম্বর ০১৭১৩-০৩৮১৮১ এবং জাতীয় জরুরি সেবা ‘৯৯৯’ এ কল করেও ফায়ার সার্ভিসের সেবা নেওয়া যাবে। তাছাড়া বন্যাকবলিত এলাকায় ফায়ার স্টেশনসহ বিভাগীয় নিয়ন্ত্রণকক্ষের মাধ্যমেও ২৪ ঘণ্টা দুর্যোগে উদ্ধারবিষয়ক সেবা গ্রহণ করতে পারবে।
এদিকে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদনদীর পানি হঠাৎ যেন ফুঁসে উঠেছে। এসব নদীর পানিতে ১০ জেলায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা, নোয়াখালীর আট উপজেলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া ও কসবা, রাঙামাটির সাজেক, কুমিল্লা, ফেনী, মৌলভীবাজারের দুটি উপজেলা, চট্টগ্রামের মিরসরাই, চাঁদপুর, সিলেট ও হবিগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
এর মধ্যে বুধবার নোয়াখালীতে জলাবদ্ধতা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। রাস্তা ডুবে যাওয়ায় সাজেকে দুই শতাধিক পর্যটক আটকা পড়েছেন। ফেনীতে সেনাবাহিনী ও কোস্টগার্ডের সহায়তা চেয়েছে জেলা প্রশাসন। সিলেটেও পানি বাড়ছে।
অন্যদিকে, খোয়াই নদীর পানি বিপৎসীমার ১৯০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে তিন দিনের মধ্যে স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে মনে করছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের বন্যা পরিস্থিতি আগামী ২৪ ঘণ্টা একই রকম থাকবে বলেও আভাস দিয়েছে তারা।
পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান কালবেলাকে বলেন, মৌসুমি লঘুচাপের কারণে ত্রিপুরা এবং বাংলাদেশের সীমান্তে বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর ফলে হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
বুধবার বিকেলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী রেজা বলেন, দেশের সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ফেনী, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও খাগড়াছড়ি জেলা বন্যাকবলিত হয়েছে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীগুলোর পানি এই মুহূর্তে বাড়ছে। কুশিয়ারা, মনু, ধলাই, খোয়াই, মুহুরী, ফেনী, হালদা নদীর পানি সাতটি স্টেশনে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে বলেও জানিয়ে তিনি বলেন, বন্যা আরও নতুন নতুন অঞ্চলে বিস্তৃত হতে পারে।
মন্তব্য করুন