বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ২৪ আশ্বিন ১৪৩১
কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৫১ পিএম
আপডেট : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:১৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বিদেশে বাংলাদেশিদের অবৈধ সম্পদ জব্দের আহ্বান পাঁচ সংস্থার

টিআইবির লোগো। ছবি : সংগৃহীত
টিআইবির লোগো। ছবি : সংগৃহীত

বিদেশে বাংলাদেশিদের অবৈধ সম্পদ জরুরি ভিত্তিতে জব্দ করার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ও যুক্তরাজ্যভিত্তিক ৪টি দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা।

মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) এই পাঁচ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সংস্থার প্রধানরা যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক উন্নয়নবিষয়কমন্ত্রীর কাছে পাঠানো যৌথ চিঠিতে ‘নতুন বাংলাদেশ’-এর দুর্নীতিমুক্ত, স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্মাণে যুক্তরাজ্য এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দেশের সরকারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে অবৈধ অর্থ-সম্পদের মালিকদের জবাবদিহি নিশ্চিত করা এবং পাচার করা অর্থ দেশে ফেরত আনার জন্য বাংলাদেশকে সক্রিয় সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।

টিআই-ইউকে, ইউকে অ্যান্টিকরাপশন কোয়ালিশন, ইন্টারন্যাশনাল লইয়ারস প্রজেক্ট, স্পটলাইট অন করাপশন এবং টিআইবি বলেছে, এটি হবে বাংলাদেশে থেকে পাচার হওয়া অর্থ-সম্পদ ফিরিয়ে আনার প্রথম পদক্ষেপ। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সুইজারল্যান্ড, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, হংকং, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে এই পদক্ষেপ নিতে হবে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ থেকে যেসব দেশে অর্থ ও সম্পদ পাচার করা হয়েছে, তাদের সবাই আমাদের উন্নয়ন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ অংশীদার এবং তারা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ প্রতিশ্রুতির কার্যকর বাস্তবায়নের লক্ষে এসব দেশকে তাদের এখতিয়ারে থাকা সব বাংলাদেশি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অবৈধ সম্পদ জব্দ (ফ্রিজ) করার জন্য অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার আহ্বান জানাই।

তিনি বলেন, পাচার করা সম্পদ বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ ও অর্থ পাচারকারীদের জবাবদিহির আওতায় আনার জন্য বাংলাদেশ সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়ার জন্য, বিশেষ করে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সুইজারল্যান্ড, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর পাশাপাশি সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, হংকং ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।

স্পটলাইট অন করাপশনের নির্বাহী পরিচালক সুজান হোলে বলেন, পাচার করা সম্পদ খুঁজে বের করতে এবং আশ্রিত দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনতে যুক্তরাজ্যকে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোকে দেওয়া প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে সহায়তা করতে হবে।

টিআই-ইউকের নীতিবিষয়ক পরিচালক ডানকান হেমজ বলেন, ব্রিটিশ সরকারের উচিত নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তি এবং তাদের সহায়তাকারীদের বিদেশে পাচারকৃত সম্পদ জব্দ করা, যাতে অবৈধ উপায়ে অর্জিত সম্পদ তারা ভোগ করতে না পারেন। আমরা জানি, অপ্রদর্শিত সম্পদের অধিকারী বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ এবং দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত অভিজাত ব্যবসায়ী মহলের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সম্পত্তি যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য দেশে রয়েছে।

গত ৩০ আগস্ট যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে বলা হয়, ক্রান্তিলগ্নে থাকা বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুত কর্তৃত্ববাদী সরকারের অধীনে থাকা সুবিধাভোগীদের বিপুল দুর্নীতি উদ্ঘাটিত হচ্ছে। এসব সুবিধাভোগীর পাচার করা অর্থ-সম্পত্তি বাংলাদেশের নাগরিকদের সম্পদ। পুনর্গঠনের পাশাপাশি দেশকে আরও স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক, গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করে তুলতে সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাচার হওয়া জাতীয় সম্পদ অতিদ্রুত চিহ্নিত ও পুনরুদ্ধার করা জরুরি।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি যুক্তরাজ্য সরকারের সহায়তার প্রতিশ্রুতি এবং সমর্থনের কথা উল্লেখ করে চিঠিতে তিনটি বিষয় জরুরিভাবে কার্যকর করার আহ্বান জানানো হয়। প্রথমত, কোনো বাংলাদেশি ব্যক্তি বা কোম্পানির পাচার করা সম্পদ যুক্তরাজ্যে রয়েছে কি না এবং তা পুনরুদ্ধারযোগ্য কি না, এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সিকে সক্রিয় হয়ে পাচারকৃত অর্থ বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে সেই সম্পদ জব্দ করাসহ সব পদক্ষেপ নেওয়া।

দ্বিতীয় পদক্ষেপ হিসেবে চিঠিতে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, যেমন দুর্নীতি দমন কমিশন, আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ, অপরাধ তদন্ত বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংস্কারের পাশাপাশি ফরেনসিক হিসাবরক্ষক ও আইনজীবীদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি সহায়তার আহ্বান জানানো হয়। যাতে এই সংস্থাগুলো পাচার হওয়া অর্থ-সম্পদ শনাক্ত ও পুনরুদ্ধারে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিতে পারে।

তৃতীয়ত, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, হংকং ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ (বিশেষ করে দুবাই) যেসব দেশে বাংলাদেশের অর্থ-সম্পদ পাচার হয়েছে, তাদের সঙ্গে সহযোগিতা ও সমন্বয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের এ সম্পদ দেশে ফেরত আনা এবং পাচারের সঙ্গে জড়িত সবার জবাবদিহি নিশ্চিতের পথ ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানানো হয়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

২২ জেলায় বৃষ্টির পূর্বাভাস

লারমার সমাজ দর্শনকে গুরুত্ব দিতে হবে

জবিতে ম্যুরাল স্থাপনের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের মশাল মিছিল

রাজধানীতে জবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

ওমরাহ পালনে সৌদি গেছেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন

গণহত্যায় জড়িতদের বিচার অবশ্যই করতে হবে : রিজভী

হাইকোর্টে অতিরিক্ত ২৩ জন বিচারপতি নিয়োগ

পডিয়াট্রি অ্যাসোসিয়েশন / ডায়াবেটিস রোগীদের পায়ের যত্ন নিশ্চিতে যুগান্তকারী পদক্ষেপ

দেশের মানুষ ২০২৫ সালের মধ্যে নির্বাচন চায় : ড. ফরহাদ

চবি তরুণ কলাম লেখক ফোরামের শপথ গ্রহণ

১০

টেকনাফে সেনাবাহিনী পরিচয়ে চাঁদাবাজি, যুবকের কারাদণ্ড

১১

বিদায়ের পথে শরৎ, দিয়ে যাচ্ছে সুখবর

১২

কারাগারে মাথায় আঘাত পেয়ে হাসপাতালে সাবেক এমপি লতিফ

১৩

বশেমুরবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির নতুন নেতৃত্বে জহরুল-রিশাদ

১৪

দেশবাসীকে শারদীয় দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা খোকন চন্দ্র দাসের

১৫

দেশের প্রথম লিমিটলেস ইন্টারনেট প্যাক এনেছে গ্রামীণফোন

১৬

জনগণ তার বহুল প্রত্যাশিত ভোটের অপেক্ষা করছে : আমিনুল হক 

১৭

দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাজশাহী জেলা পরিষদের অনুদান

১৮

পাঁচ বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেল আরাকান আর্মি

১৯

সুনামগঞ্জের সাবেক এমপি মহিবুর রহমান গ্রেপ্তার

২০
X