বাসস
প্রকাশ : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:০৯ পিএম
আপডেট : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:২৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

পুলিশের সাঁজোয়া যান থেকে ইয়ামিনের মরদেহ ফেলার দৃশ্য ভাইরাল

গুলিবিদ্ধ ইয়ামিনকে পুলিশের সাঁজোয়া যান থেকে ফেলে দেওয়ার দৃশ্য এবং ইনেসেটে শহীদ ইয়ামিন। ছবি ভিডিও থেকে
গুলিবিদ্ধ ইয়ামিনকে পুলিশের সাঁজোয়া যান থেকে ফেলে দেওয়ার দৃশ্য এবং ইনেসেটে শহীদ ইয়ামিন। ছবি ভিডিও থেকে

জোহরের নামাজ পড়ে বাসায় ফেরার সময় পুলিশের গুলিতে শহীদ হন ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) কম্পিউটার সাইন্স বিষয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী শাইখ আস-হা-বুল ইয়ামিন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে তখন নির্বিচারে গুলি চালাচ্ছিল পুলিশ। জোহরের নামাজ পড়ে বের হয়ে বাসায় ফিরছিলেন ইয়ামিন। ঠিক তখনই গুলিবিদ্ধ হন তিনি। গুলিবিদ্ধ ইয়ামিনকে পুলিশ তাদের সাঁজোয়া যান এপিসিতে উঠায়। একপর্যায়ে গুলিবিদ্ধ ইয়ামিনের নিথর দেহ পুলিশের সাঁজোয়া যান থেকে নিচে ফেলে দেওয়া হয়। আর এ দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এই বর্বরোচিত ঘটনা দেখে দেশের মানুষ বিস্মিত ও হতবাক হয়ে যায়। পুলিশের বর্বর নির্মমতার শিকার গুলিবিদ্ধ ইয়ামিন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

ইয়ামিনের বাবা-মা বর্তমানে সাভার ব্যাংক টাউনে বসবাস করলেও তাদের গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী।

মহিউদ্দিন ও নাসরিন সুলতানা দম্পতির একমাত্র ছেলে ইয়ামিন। অত্যন্ত মেধাবী শান্তশিষ্ট ছিল ইয়ামিন। এমআইএসটির হলে থেকেই পড়াশোনা করত ইয়ামিন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত ১৭ জুলাই তার বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ ঘোষণা করা হয় আবাসিক হলও। ১৭ জুলাই সাভার নিজ বাসায় চলে যান ইয়ামিন। পরদিন স্থানীয় মসজিদে জোহরের নামাজ পড়তে গিয়ে পুলিশের নির্বিচার গুলিতে শহীদ হন ইয়ামিন।

ইয়ামিনের মামা মো. আব্দুল্লাহ আল মুন কাদির সংবাদমাধ্যমকে বলেন, অত্যন্ত মেধাবী ও বিনয়ী ছিল ইয়ামিন। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ১৮ জুলাই জোহরের নামাজ পড়ে বাসায় ফেরার সময় সাভার ব্যাংক টাউন এলাকায় পুলিশের নির্বিচার গুলিতে শহীদ হয় ইয়ামিন। ইয়ামিনের গুলিবিদ্ধ নিথর দেহ পুলিশ তাদের সাঁজোয়া যান এপিসিতে তুলে নেওয়ার পর নির্মম ও বর্বরোচিত কায়দায় নিচে ফেলে দেয়। ইয়ামিনকে ফেলে দেওয়ার সেই ভয়াবহ দৃশ্য গণমাধ্যমে দেশবাসী দেখেছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন নির্মূলে এমন নিষ্ঠুরতম আচরণে দেশের ছাত্র-জনতা তখন প্রতিবাদে ফুঁসে উঠে।

তিনি বলেন, এই বর্বরোচিত ঘটনা দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন। নির্মম এই ঘটনার বিচার চেয়ে ২২ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন বরাবর অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে শহীদ শাইখ আস-হা-বুল ইয়ামিনকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার বাধায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা যায়নি। মরদেহ নিয়ে গ্রামেও যেতে দেয়নি পুলিশ।

পুলিশের সাঁজোয়া যান এপিসি থেকে ইয়ামিনের গুলিবিদ্ধ দেহ রাস্তায় ফেলে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। আবার মৃত্যুর কোনো সনদ না দিয়েই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ইয়ামিনের মরদেহ হস্তান্তর করে। ঢাকা ও সাভার রেঞ্জের পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ইয়ামিনের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা দায়ের না করতে ভয়-ভীতি দেখান। সাভার তালবাগ পারিবারিক কবরস্থানে ইয়ামিনের মরদেহ দাফন করতে চাইলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান মিজান বাধা দেন। পরে শহীদ ইয়ামিনকে সাভার ব্যাংক টাউন কবরস্থানে দাফন করা হয়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

গবেষণা / ঘুম না হলে সহজ ব্যায়ামে মিলতে পারে সমাধান

ইউপি সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা

বিসিবি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ, চলছে গণনা

স্রোতের মধ্যে জীবন বাজি রেখে বাঁধ রক্ষা, মহাবিপর্যয় এড়াল বিজিবি

রাজধানীর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ

১ কোটি ৩০ লাখ টাকা নিয়ে উধাও ব্যাংকের ম্যানেজার

কেন দীপিকাকে দেখেই বদলে গেল রণবীরের মুখ

ইসির ৫০ প্রতীকেও ‘না’, ‘শাপলায়’ অনড় এনসিপি

প্রতিষ্ঠান প্রধানের নিয়োগ নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের

সিনিয়র অফিসার পদে নিয়োগ দিচ্ছে ব্র্যাক

১০

চিকিৎসায় নোবেল পুরস্কার পেলেন তিন বিজ্ঞানী

১১

ক্যারম খেলা নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষে আহত ২০

১২

বিসিবি নির্বাচনের ফল ঘোষণা কখন, যা জানা গেল

১৩

স্ত্রী ও দুই মেয়েকে হত্যার দায়ে যুবকের মৃত্যুদণ্ড

১৪

এক সপ্তাহের মধ্যে অনেকগুলো ঘটনা ঘটবে : তাজুল ইসলাম

১৫

গ্রি ফর্চুন অফার ক্যাম্পেইন চালু

১৬

নিয়োগ দিচ্ছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, আবেদন করুন অনলাইনে

১৭

কষ্টে দিন যাচ্ছে ‘এক টাকার মাস্টারের’, কেউ খবর রাখে না 

১৮

স্কোয়াড ঘোষণার পর বড় দুঃসংবাদ পেল আর্জেন্টিনা

১৯

সেনাপ্রধানের বক্তব্য বিকৃতি ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর বিবৃতি

২০
X