কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:২০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ভারি বৃষ্টি থাকবে দুদিন, নদীর পানি বাড়লেও আপাতত বন্যার ঝুঁকি নেই

গ্রাফিক্স : কালবেলা
গ্রাফিক্স : কালবেলা

আশ্বিনের মাঝামাঝি এসে ফের ভারি বৃষ্টি বাড়ার আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ভারি বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। সারা দেশে তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি হ্রাস পেয়ে অস্বস্তিকর গরম কমার সুখবর এসেছে। তবে বৃষ্টির কারণে দেশের বিভিন্ন নদীর পানি বাড়ার আভাস দিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক বলেন, ‘বৃষ্টি মূলত শুরু হয়েছে দেশের পূর্বাঞ্চল থেকে; বুধবার বরিশাল আর ঢাকার বড় একটা অংশজুড়ে বৃষ্টি হবে, এভাবে সারা দেশে চলবে। তবে আগামী দুদিন বৃষ্টিপাতের তীব্রতা থাকবে, এরপর থেকে কমে আসবে।’

তিনি বলেন, ‘ঢাকায় নিম্নস্তরের মেঘ দেখা যাচ্ছে। আকাশ মেঘলা থাকবে ও দিনের শেষ অংশে কিছুটা বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ঢাকার পূর্বাঅংশ যেমন নরসিংদী ও দক্ষিণ কুমিল্লা অংশে বৃষ্টি হওয়ার সুযোগ বেশি।’

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা, খুলনা বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে। আগামীকাল বুধবার ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের অনেক জায়গায় একই রকম বৃষ্টি হতে পারে। এই দুইদিন সারা দেশের দিন ও রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে দেশের সর্বোচ্চ ১৬৪ মিলিমিটার বৃষ্টি ঝরেছে। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন এলাকায় কমবেশি বৃষ্টি হয়েছে। সাধারণত ২৪ ঘণ্টায় ১ থেকে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে সেটি হালকা, ১১ থেকে ২২ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে মাঝারি, ২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে মাঝারি ধরনের ভারি, ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে ভারি এবং ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি রেকর্ড হলে সেটিকে বলা হয় অতিভারি বৃষ্টিপাত।

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) মোংলায় দেশের সর্বোচ্চ ৩৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৩৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান বলেন, আগামী তিনদিন সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের নদীর পানি বাড়বে। তবে আপাতত বন্যার ঝুঁকি নেই।

পূর্বাভাস কেন্দ্রের বুলেটিনে বলা হয়েছে, সিলেট বিভাগের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি বাড়লেও বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী তিন দিন সিলেট বিভাগ ও এর সংলগ্ন উজানে ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, যার ফলে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি বাড়তে। তবে বিপদসীমার নিচেই থাকতে পারে। মনু, খোয়াই, ধলাই ও যাদুকাটা নদীর পানিও বাড়ছে এবং সারিগোয়াইন ও কংস নদীর পানি স্থিতিশীল আছে। অন্য দিকে ভুগাই ও সোমেশ্বরী নদীর পানি কমছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আগামী তিন দিন সিলেট বিভাগের এসব নদীর পানি বাড়তে পারে, তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। চট্টগ্রাম বিভাগের গোমতী ও হালদা নদীর পানি বাড়ছে। ফেনী, মাতামুহুরী নদীর পানি স্থিতিশীল আছে; অন্যদিকে সাঙ্গু ও মুহুরী নদীর পানি কমছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী তিন দিন চট্টগ্রাম বিভাগ ও এর সংলগ্ন উজানে ভারি বৃষ্টি হতে পারে, এর ফলে চট্টগ্রাম বিভাগের এসব নদীর পানি বাড়তে পারে। তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে বইবে।

বুলটিনে বলা হয়েছে, রাজশাহী বিভাগের বাঙ্গালী, মহানন্দা ও ছোট যমুনা নদীর পানি বাড়ছে। অন্যদিকে আত্রাই ও করোতয়া নদীর পানি স্থিতিশীল আছে এবং বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী বিভাগের এসব নদীর পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং পরবর্তী দুইদিন পানি কমতে পারে।

বন্যার পূর্বাভাস কেন্দ্র বলছে, ওই বিভাগের গঙ্গা নদীর পানি স্থিতিশীল আছে ও এর ভাটিতে পদ্মা নদীর পানি বাড়ছে এবং বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় গঙ্গা নদীর পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে, অন্যদিকে পদ্মা নদীর পানি বাড়তে পারে। পরবর্তী চার দিন গঙ্গা-পদ্মা দুই নদীর পানিই বাড়তে পারে, তবে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।

রংপুর বিভাগের ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি কমছে ও এর ভাটিতে যমুনা নদীর পানি স্থিতিশীল আছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী দুই দিন ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি কমতে পেতে পারে এবং পরবর্তী তিনদিন ধীর গতিতে বেড়ে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। আর রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি কমে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আগামী তিনদিন তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি কমতে পারে। দেশের সব প্রধান নদীর পানি এখন বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ঢাকায় বৃষ্টি নিয়ে আবহাওয়া অফিসের বার্তা

প্রতি গাছে ৬০০ টাকা ব্যয়, ডিসির প্রকল্পে ‘নয়ছয়’!

অক্টোবরজুড়ে থাকতে পারে ভ্যাপসা গরমের দাপট

গাজা যুদ্ধবিরতিতে উভয়পক্ষ একমত হয়েছে : ট্রাম্প

পুলিশের কাছ থেকে মাদক ব্যবসায়ীকে ছিনতাই, এসআইসহ আহত ২

রাজধানীতে আজ কোথায় কী

বিক্ষোভে অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেন ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট

বৃহস্পতিবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

০৯ অক্টোবর : আজকের নামাজের সময়সূচি

একাধিক দেশের পাসপোর্টধারীরাই ‘সেফ এক্সিটের’ তালিকা করে: আসিফ মাহমুদ

১০

শহিদুল আলমের মুক্তির জন্য সোচ্চার হতে হবে : তাসলিমা আখতার

১১

স্থানীয় সমস্যা সমাধানে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস আনোয়ারুজ্জামানের

১২

সবাইকে নিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব: নীরব

১৩

‘হামজা আমার দলে হলে বেঞ্চেই বসে থাকত’

১৪

লন্ডনে টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়রের সঙ্গে বাসস চেয়ারম্যানের মতবিনিময়

১৫

আফগানদের কাছে হারার পর যা বললেন মিরাজ

১৬

অল্প পুঁজি নিয়ে আফগানদের সাথে পারল না বাংলাদেশ

১৭

‘দেশের সার্বিক উন্নয়নে প্রবীণদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে হবে’

১৮

রাবেতাতুল ওয়ায়েজীনের সঙ্গে সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত পরিষদের মতবিনিময়

১৯

ডিএনসিসি এলাকায় টাইফয়েডের টিকা পাবে ১৩ লাখ শিশু

২০
X