র্যাব হেফাজতে নওগাঁর জেসমিন সুলতানার মৃত্যুর ঘটনাকে হত্যাকাণ্ড হিসেবে উল্লেখ করেছে সংসদীয় কমিটি। এ ঘটনায় দেশ, সরকার ও বাহিনীর ইমেজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও মত দেওয়া হয়েছে কমিটির বৈঠকে।
জানা গেছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির আগের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়। পরে বুধবার (১৪ জুন) অনুষ্ঠিত বৈঠকে আগের বৈঠকের এবং কার্যবিবরণী অনুমোদন দেওয়া হয়।
কমিটির সভাপতি বেনজীর আহমেদের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, মো. হাবিবুর রহমান, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, পীর ফজলুর রহমান, নূর মোহাম্মদ, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ এবং ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল অংশগ্রহণ করেন।
কার্যবিবরণী সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে র্যাবের মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন জেসমিন সুলতানার মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড হিসেবে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘নওগাঁর জেসমিন সুলতানা হত্যাকাণ্ড দেশ, সরকার ও বাহিনীর ইমেজকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। কাজটি করা হয়েছে ক্যাম্প থেকে, ব্যাটালিয়ন বা হেড কোয়ার্টার এ বিষয়ে কিছুই জানত না। এ ঘটনায় অপরাধ যেই করুক না কেন, প্রতিষ্ঠান কোনো ব্যক্তির দায় বহন করবে না। সরকারও কোনো দায় নেবে না। জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
কার্যবিবরণীতে আরও বলা হয়, জেসমিন সুলতানার বিষয়টি খুবই বিব্রতকর বলে বৈঠকে অভিযোগ করেন কমিটির সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মনসুর।
একই মৃত্যুর প্রসঙ্গ টেনে কমিটির আরেক সদস্য ও জাপা এমপি পীর ফজলুর বলেন, র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা হয়তো আন্তরিক কিন্তু প্রান্তিক পর্যায়ে অতি উৎসাহ দেখা যাচ্ছে। একজন অফিসারের নির্দেশে এ ঘটনা কীভাবে ঘটতে পারে? মামলা হয়েছে তাও তার মৃত্যুর পরে! এ ধরনের ঘটনা শেষ সময়ে সরকারের অনেক অর্জনকে ম্লান করে দিচ্ছে।
জেসমিন সুলতানার মৃত্যু প্রসঙ্গে কমিটির সভাপতি বেনজীর আহমদ বলেন, র্যাবের বিরুদ্ধে স্যাংসন জারি হওয়ার কারণে এমনিতেই বিব্রতকর অবস্থা। যার যে দায়িত্ব তা যথাযথ সময়ে পালন করলে এত সমস্যা তৈরি হতো না। তিনি সবাইকে আরও দায়িত্বশীল হওয়ার পরামর্শ প্রদান করেন।
পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান আশ্বস্ত করে বলেন, ‘নওগাঁর ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিষয়টি জানতে চাইলে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশে একটি তদন্ত কমিটি কাজ করছে। জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনার সাথে আমাদের ক্যাম্পের বা র্যাবের কোনো সদস্যের সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা তা কমিটি নিরূপণ করবে। এরপর আদালত নির্দেশনা দেবেন। এর উপরে আমাদের বক্তব্যের কোনো সুযোগ নেই।
মন্তব্য করুন