আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কার্যকরী সংস্কারের দাবি জানিয়েছে ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য। রোববার (১২ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আমরা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কার্যকরী সংস্কার চাই। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিরুদ্ধে জনতার পক্ষ থেকে যেসব অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে, তা আমলে নিয়ে সংস্কার কার্যক্রমে সরকারকে হাত দিতে হবে। দেশের প্রতিটি বিভাগে ট্রাইব্যুনালের অফিস স্থাপন করতে হবে; যাতে করে তৃণমূলে ফ্যাসিবাদের ভুক্তভোগী নাগরিকদের আইনি সেবা পেতে কোনো বেগ পেতে না হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করা, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইনে আওয়ামী লীগের দলগত বিচারের বিধান যুক্ত করা এবং জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র জারি করার দাবিতে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক আমলে নেওয়ার ঘটনাকে আমরা ইতিবাচক হিসেবে দেখছি।
তবে আমরা মনে করি, এতটুকুই যথেষ্ট নয়। বিগত সময়েও ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের টালবাহানা আমরা লক্ষ করেছি। এছাড়াও, আওয়ামী গণহত্যাকারীদের বিচারের দীর্ঘসূত্রতাও আমরা দেখেছি। পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা গণহত্যা, গুম-বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড-ধর্ষণ ও জুলাই গণহত্যার পর যেখানে ত্বরিত গতিতে খুনি লীগের বিচার হওয়ার কথা ছিল, সেখানে আমরা দেখেছি অনেক জুলাই বিপ্লবী ও আহতযোদ্ধাদের মামলা নিচ্ছে না বিভিন্ন থানা। অন্যদিকে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তৃণমূলে; এমনকি রাজধানী শহরেও জুলাইযোদ্ধারা আওয়ামী গণহত্যাকারীদের দ্বারা হামলার শিকার হচ্ছে। উপরোক্ত বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সুস্পষ্ট অবস্থান এবং পদক্ষেপ আমরা জানতে চাই।
সংগঠনটি জানায়, আজ ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রণয়ন ও জারি করতে সরকার ৩০ কার্যদিবস সময় চেয়েছে। কিন্তু ইতোপূর্বে ঘোষণাপত্র প্রণয়নে সরকারের টালবাহানা ও রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিধা-দ্বন্দ্ব আমাদের মনে উদ্বেগ ও শঙ্কার জন্ম দিয়েছে। আমরা স্পষ্ট বলে দিতে চাই- ঘোষণাপত্র প্রণয়নের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। জুলাই ঘোষণাপত্রে রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী হিসেবে আমাদের ঐতিহাসিক সংগ্রামের বিবরণ, জুলাই গণহত্যাসহ আওয়ামী ফ্যাসিবাদের শিকার ভুক্তভোগীদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠাকরণ, জুলাই যোদ্ধাদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বাস্তবায়নের কথা আবশ্যিকভাবে উল্লেখ থাকতে হবে। আমরা আরও দ্ব্যর্থহীনভাবে বলছি- অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক নির্বাচনের ঘোষণার পূর্বে আবশ্যিকভাবে বিচারের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে।
মন্তব্য করুন