অন্তর্বর্তী সরকারকে এক সপ্তাহের মধ্যে পঞ্চাশ হাজার পুলিশ নিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদী।
রোববার (১১ মে) বিকেল চারটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে অন্তর্বর্তী সরকারের আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান তিনি।
হাদী বলেন, বিসিএসে এত বছর যত নিয়োগ দেওয়া হয়েছে সব আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের সুপারিশে হয়েছে। সেই আওয়ামী পুলিশরা কি এখন আওয়ামী লীগকে ধরবে? বাংলাদেশে এত যুবক বেকার। আপনারা এই দশ মাসে নতুন করে পুলিশ নিয়োগ দিলে অনেক যুবকের কর্মসংস্থান হতো। আমি সরকারকে বলব, আপনারা এক সপ্তাহের মধ্যে পঞ্চাশ হাজার পুলিশ নিয়োগ দিন।
তিনি বলেন, আমাদের কাছে বামপন্থা সমস্যা না। কিন্তু অনেকে বামপন্থার আড়ালে ভারতপন্থার রাজনীতি করছেন। সেটিই আমাদের কাছে সমস্যা।
ইনকিলাব মঞ্চের এই নেতা বলেন, সরকার যে সিদ্ধান্ত গতকাল জানাল (আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত) এটা তো জুলাই গনঅভ্যুত্থানের দশ মাস পরে হবার কথা ছিল না। এটা তো তাদের দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই করার কথা ছিল।
তিনি আরও বলেন, আপনি (অন্তর্বর্তী সরকার) ফ্যাসিবাদের রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদকে প্রটোকল দিয়ে দেশ থেকে বের হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন- এটা আমরা ভুলি নাই। যারা তাকে প্রটোকল দিয়েছে তারা বিএনপির নেতা হোক বা জামায়াতের নেতা হোক সেটা আপনারা প্রকাশ করছেন না কেন? অবিলম্বে আব্দুল হামিদকে কে বা কারা দেশ থেকে বের হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে তার নাম প্রকাশ করুন।
তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনারা মনে কইরেন না আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় আমরা আমাদের অন্যান্য দাবি ভুলে যাব। আপনাদের অতি দ্রুত গণহত্যার বিচার শুরু করতে হবে। শুধু জুলাই গণহত্যা নয়, একইসঙ্গে পিলখানা ও শাপলা গণহত্যার বিচার শুরু করতে হবে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ব্যাপারে হাদী বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একটা ধারা ছিল এই ট্রাইব্যুনাল যে কোনো দলেরও বিচার করতে পারবে। কিন্তু গতকাল বলা হলো এটা আগে আইনে ছিল না, আইন সংশোধন করে নতুন করে যুক্ত করা হলো। কিন্তু এটা তো পূর্বের আইনে ছিল। তাহলে আমাদের প্রশ্ন হলো কোন উপদেষ্টা এই আইন বাদ দিয়েছে? আসিফ নজরুল স্যার বলেছিলেন- এই বছরের জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ২য় ট্রাইব্যুনাল করার কথা। কিন্তু এই মে মাসে যখন জনতা আন্দোলনে নামল তখন আপনারা বলছেন এই মে মাসেই ২য় ট্রাইব্যুনাল করবেন। তো আপনারা এতদিন করেন নাই কেন?
তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, এই প্রজ্ঞাপনে (লীগ নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন) জাতীয় পার্টির নাম নাই কেন? তারা কি দুধে ধোয়া? তারা কি বিনাভোটে এমপি হয় নাই? আওয়ামী লীগের শরিক ১৪ দলীয় জোটের নাম নাই কেন?
এছাড়াও শরিফ ওসমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে তিনটি প্রস্তাবনা পেশ করেন। প্রস্তাবনাগুলো হলো, প্রথমত, দুটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা। ১ম ট্রাইব্যুনাল ব্যক্তির বিচার করবে। ২য় ট্রাইব্যুনাল দলের বিচার করবে। দ্বিতীয়ত, অনেক আওয়ামী লীগের সমর্থক রয়েছে যারা কোনো অপরাধের সঙ্গে যুক্ত নয়। এদের নিয়ে অনেকে মামলা বাণিজ্য করে। এদের জন্য একটা তওবা কমিশন গঠন করার মাধ্যমে তাদের দায়মুক্তি দিতে হবে। তৃতীয়ত, আগামী ৩৬ জুলাইয়ের (৫ আগস্ট) মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রদান করা।
মন্তব্য করুন