কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১২ মে ২০২৫, ০৬:০৪ পিএম
আপডেট : ১৪ মে ২০২৫, ০৭:০৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ডা. কর্নেল (অব.) জেহাদ খানের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদে বিবৃতি

ডা. কর্নেল (অব.) জেহাদ খান। ছবি : কালবেলা
ডা. কর্নেল (অব.) জেহাদ খান। ছবি : কালবেলা

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও ইবনে সিনা হাসপাতালের সাবেক ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট ডা. কর্নেল (অব.) জেহাদ খান সম্প্রতি তাকে নিয়ে বিভিন্ন মিডিয়া এবং সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে চালানো প্রচারণাকে মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ‘বিশেষ প্রতিবেদন’ উল্লেখ করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

সোমবার (১২ মে) এক বিবৃতিতে তিনি এ প্রতিবাদ জানান।

ডা. কর্নেল (অব.) জেহাদ খান বলেন, আমি চরম ক্ষোভ ও বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি বিভিন্ন ফেসবুক আইডি ও পেজ থেকে আমার বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ মনগড়া, বিভ্রান্তিকর এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। যেখানে কল্পনাভিত্তিক দাবি করা হচ্ছে যে, আমি নাকি সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের বিদেশ গমনের অনুমতির জন্য রাষ্ট্রের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে ‘ধরনা দিয়েছি’ এবং একটি ‘সেফ এক্সিট প্ল্যানের’ মূল পরিকল্পনাকারী!

অপপ্রচারের বিষয়ে আমি স্পষ্ট করে জানাচ্ছি-

১. আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি, আমার জীবনে কখনো আমি ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করিনি বা তার সঙ্গে কোনো দিন কথাও হয়নি। তার সঙ্গে আমার কোনো পরিচয়, যোগাযোগ বা রাজনৈতিক সম্পর্কও নেই।

২. আমি কারও বিদেশ গমনের সুপারিশ করিনি, করতেও পারি না। আমি রাষ্ট্রের কোনো দায়িত্বে নেই, রাজনৈতিক প্রশাসনের সঙ্গেও জড়িত নই। আমার পেশা চিকিৎসা। আমি সাধারণ একজন নাগরিক মাত্র। ইমিগ্রেশন পুলিশের কোনো কর্মকর্তা, বিশেষ করে ডিআইজি মোয়াজ্জেম হোসেনের সঙ্গে আমার কোনো প্রকার যোগাযোগ নেই। তার কোনো কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও আমি যুক্ত নই। বরং, প্রশাসন এবং গোয়েন্দা সংস্থায় থাকা ফ্যাসিবাদের সমর্থকদের মাধ্যমেই রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় তিনি দেশ ছেড়েছেন। আর পরিকল্পিতভাবে তাদের ভূমিকা আড়াল করতেই আমাকে টেনে আনা হচ্ছে। সুতরাং, এ বিষয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার না করে সেফ এক্সিটে দায়ী সরকারে থাকা স্বৈরাচারের দোসরদের জবাবদিহিতায় আনা হোক।

একই সঙ্গে দাবি করছি- যারা আমার বিরুদ্ধে এসব অপপ্রচার চালাচ্ছেন ও মিথ্যা-বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছেন, তারা যদি এতটাই নিশ্চিত হন যে আমি কোনো ‘ধরনা দিয়েছি’, ‘সুপারিশ করেছি’, কিংবা কারও সঙ্গে ‘সেফ এক্সিট’ পরিকল্পনা করেছি- তাহলে তার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ, ফোনালাপ, সাক্ষাৎ, নথি বা ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করুন। আমি নিশ্চিত- এমন কোনো প্রমাণ তারা কখনোই দেখাতে পারবেন না, কারণ এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি, এটি নিছক কল্পনা।

৩. শুধু ভিন্নমত পোষণ করায় আমি আমার কর্মজীবনে বহুবার অবিচার ও হেনস্থার শিকার হয়েছি। চাকরি জীবনে আমার ব্রিগেডিয়ার পদে পদোন্নতি পাওয়ার কথা থাকলেও জামায়াত সংশ্লিষ্টতার কারণে আমাকে সেই পদোন্নতি দেওয়া হয়নি। এমনকি অবসরের পূর্বে আমার আরেকটি অনারারি গ্রেড যুক্ত হওয়ার কথা ছিল, সেটিও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর গুড বুকে না থাকায় পাওয়া হয়নি। শুধু পদ-পদবি সংক্রান্ত বিষয়ই নয়, একজন চিকিৎসক হিসেবে চিকিৎসাসেবা পেশায় বিতর্কিত করতে নানা সময়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে বিভিন্ন রকমের অপচেষ্টা করা হয়েছে। আমাকে বলা হয়েছে- আমি ভুয়া ডাক্তার, আমি এনজিওগ্রাম পারি না। এমনকি এক পর্যায়ে আমাকে ভিডিও করে প্রমাণ দিতে হয়েছে যে, আমি এনজিওগ্রামে দক্ষ চিকিৎসক। এগুলো করা হয়েছে শুধু ‘জামায়াতপন্থি’ হয়েও চিকিৎসক হিসেবে আমার খ্যাতি লাভের কারণে।

৪. ২০২৪ সালের জুলাইয়ের রাজনৈতিক সংকটকালে, যখন ধানমন্ডি ২৭-এ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়, তখন ইবনে সিনা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আমি পেশাদারিত্বের সর্বোচ্চ ব্যবহার করে আহতদের চিকিৎসা দিয়েছি। অনেককেই গোপনে আশ্রয় দিয়েছি, যাতে তারা সুরক্ষা এবং চিকিৎসা পায়। এর ফলে আমি নিজেও সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার হয়রানি, নজরদারি এবং সরাসরি হুমকির মুখে পড়েছিলাম।

৫. আমি হঠাৎ করেই জামায়াতে ইসলামীতে আসা লোক নই। ১৯৮৮ সালে আমি যখন ইন্টার্ন চিকিৎসক ছিলাম, তখনই আমি জামায়াতের রোকন হই। এরপর সেনাবাহিনীতে থাকাকালীন সময়ে চাকরিবিধি অনুযায়ী সংগঠনের কাজ থেকে বিরত থাকলেও অবসর নেওয়ার পরই ২০১৪ সালে আবারও পুরোদমে কাজ শুরু করি। পারিবারিকভাবে আব্দুল হামিদ আমাদের আত্মীয় হলেও আমার পরিবার এবং আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে অধিকাংশই জামায়াত সমর্থক। এমনিক মরহুম অধ্যাপক গোলাম আযম, শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী সাহেবও পারিবারিকভাবে আমাদের আত্মীয়। সুতরাং, শুধু ব্যক্তি আব্দুল হামিদের জন্য আমার পরিবারকে বিবেচনা করা ভুল সিদ্ধান্ত।

এই ধরনের বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন কেবল আমাকে নয়, আমার পরিবার, সহকর্মী ও দীর্ঘদিনের চিকিৎসা জীবনের সুনামকে কলুষিত করার অপচেষ্টা। আমি এ ধরনের মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছি। সত্যের মুখোমুখি হওয়ার সাহস না থাকলে, মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে চরিত্র হনন বন্ধ করার জন্য অপপ্রচারের সাথে জড়িতদের আহ্বান জানাচ্ছি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মানবিক করিডোরের নামে দেশকে যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেবেন না : দুদু

পঞ্চগড়ে সীমান্ত দিয়ে ২১ জনকে পুশইন করেছে বিএসএফ

সিরিজ হারের পর দর্শকের সঙ্গে তর্কে জড়ালেন শামীম পাটোয়ারী

শাওন-ডিবি হারুনসহ ১২ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

সারা দেশে টানা ৫ দিন বৃষ্টির পূর্বাভাস

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে অজানা কিছু প্রশ্নের উত্তর

রাশিয়ায় পড়ে আছে জুলাই যোদ্ধা ইয়াসিনের লাশ

পরশুরাম সীমান্তে ভারতীয়দের খাল খনন

‘দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ চাওয়া মোটেই স্বাভাবিক বিষয় না’

‘সাংবাদিক নাসিরুল আলম ছিলেন আদর্শের বাতিঘর’

১০

‘তারেক রহমানকে নিয়ে উপদেষ্টা খলিলুর রহমানের বক্তব্যে মানুষ বিস্মিত’

১১

পাক-কূটনীতিককে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটামে বহিষ্কার করল ভারত

১২

পদত্যাগ করলেন কুয়েটের অন্তর্বর্তী উপাচার্য

১৩

কেউ কেউ তরুণদের বিপথগামী করার চেষ্টা করছে : মুন্না

১৪

লাহোরে ফিরলেন রিশাদ, তিন বাংলাদেশি এক ফ্র্যাঞ্চাইজিতে!

১৫

আদালতের রায়ে জনগণের বিজয় হয়েছে : ফখরুল

১৬

হারানো বিড়ালের জন্য পুরস্কার ঘোষণা

১৭

বাংলাদেশকে কোনো পরাশক্তির ছায়া-যুদ্ধক্ষেত্র করতে দেওয়া যাবে না: এবি পার্টি

১৮

শুধু হৃদয় ভাঙা নই, আমি ক্ষুব্ধ, লজ্জিত: বাঁধন

১৯

ইশরাকের সমর্থকদের উচ্ছ্বাস, দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি

২০
X