পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে’র রূপরেখা প্রকাশ ও নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন গঠনের প্রজ্ঞাপন জারিসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। দাবি না মানলে ১৯ মে থেকে আবারও মাঠে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
শনিবার (১৭ মে) ইডেন মহিলা কলেজে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এ কথা জানান।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ আন্দোলনের ফলে ইউজিসি ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাকেবি)’ নামে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু ঘোষণা ছাড়া তেমন কোনো অগ্রগতি নেই।
আমরা পাঁচ দফা দাবি জানাচ্ছি-
১। রোববারের মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।
২। অন্তর্বর্তী প্রশাসকের নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হওয়ার পর সেশনজট নিরসনসহ সামগ্রিক বিষয় নিয়ে একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করতে হবে। একই সঙ্গে ভুতুড়ে ফলের সমাধান, বিভিন্ন ইস্যুতে অতিরিক্ত ফি আদায় বন্ধসহ যাবতীয় অসঙ্গতিগুলো স্পষ্টভাবে সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে।
৩। অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন গঠনের পরবর্তী দুই কার্যদিবসের মধ্যে ২০২৪-২৫ সেশনের ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
৪। আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপরেখা এবং লোগো/মনোগ্রাম প্রকাশ করতে হবে।
৫। আগামী এক মাসের অর্থাৎ আগামী ১৬ জুনের মধ্যে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ জারি করতে হবে। একই সঙ্গে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে নবগঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে।
পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে আমাদের সাত কলেজের এ আন্দোলন শুরু হয়েছিল। শুরু থেকেই আমাদের দাবি ছিল, সাত কলেজের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্তি বাতিল করে এ কলেজগুলোর সমন্বয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা।
ইতোমধ্যে ইউজিসি ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাকেবি)’ নামে আমাদের সাত কলেজের নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম প্রস্তাব করেছে। আমরা জেনেছি, নাম ছাড়াও নতুন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো ও মডেলও প্রস্তুত রয়েছে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, সরকার সাত কলেজের এ সমস্যা সমাধানে গত ডিসেম্বরের শেষের দিকে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে দেয়। একই সঙ্গে এ সমস্যা সমাধানে তাদের চার মাসের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু গত ৩০ এপ্রিল এ কমিটির সময়সীমা শেষ হলেও এখনো সমস্যার সমাধান হয়নি। আমরা এমন সময়ক্ষেপণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
তাদের অভিযোগ, নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম চূড়ান্ত হওয়ার পর স্বল্প সময়ের মধ্যে অন্তর্বর্তী প্রশাসনের প্রজ্ঞাপন দেওয়ার কথা থাকলেও তা কোনো এক অদৃশ্য কারণে এখনো ঝুলে আছে। অন্তর্বর্তী প্রশাসনের প্রজ্ঞাপন ও অধ্যাদেশ জারি না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বতন্ত্র প্রশাসনিক কাঠামো, একাডেমিক কার্যক্রম, পরীক্ষাসহ সবকিছুতেই আমাদের এখনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। আমরা মনে করি, এটা একটি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যকে বাধাগ্রস্ত করছে।
তারা বলেন, আমরা শুরু থেকেই সরকারের যে কোনো সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলাম। দাবি বাস্তবায়নে আমরা সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতাও করেছি। এজন্য মাঠের আন্দোলনের পাশাপাশি টেবিলের আলোচনাও জারি রেখেছি। এখনো আলোচনার পথ বন্ধ হয়নি। আমরা আলোচনার জন্য প্রস্তুত আছি। আমরা আমাদের শিক্ষার অধিকারটুকু চাই।
মন্তব্য করুন