রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কাস্টমসের গুদাম থেকে প্রায় ৫৫ কেজি স্বর্ণ চুরির ঘটনায় প্রযুক্তির ব্যবহার করে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, কাস্টমস হাউসের গুদাম থেকে ৫৫ কেজি স্বর্ণ চুরির ঘটনায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যবেক্ষণসহ প্রযুক্তি ব্যবহার করে মামলাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত চলছে।
এদিক ঢাকা কাস্টমস হাউসের ডিসি সৈয়দ মোকাদ্দেস হোসেন সংবাদমাধ্যমকে জানান, ভল্ট থেকে স্বর্ণ চুরির ঘটনায় কাস্টমস হাউসের কেউ জড়িত থাকলেও ছাড় দেওয়া হবে না।
গতকাল রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কাস্টমসের গুদাম থেকে প্রায় ৫৫ কেজি স্বর্ণ চুরির ঘটনা ঘটে। ঢাকা কাস্টমস হাউসের কমিশনার নুরুল হুদা আজাদ সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
চুরি হওয়া স্বর্ণের মধ্যে অলংকার ও স্বর্ণের বার রয়েছে। যদিও কতটুকু স্বর্ণ চুরি হয়েছে, তা নিশ্চিত করতে পারেননি ঢাকা কাস্টমস হাউসের কর্মকর্তারা। অনুমান করা হচ্ছে, গুদাম থেকে চুরি হওয়া স্বর্ণের পরিমাণ ৫৫ কেজি হতে পারে।
এ বিষয়ে কমিশনার নুরুল হুদা আজাদ বলেন, গুদাম থেকে স্বর্ণ চুরি হওয়ার বিষয়টি মোটামুটিভাবে আমরা নিশ্চিত। একটি সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের কাজ করছে বলে আমরা অনুমান করছি। কাস্টমস হাউস ও সিআইডিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েকটি টিম দোষীদের শনাক্ত করতে কাজ করছে। যত দ্রুত সম্ভব দোষীদের বিরুদ্ধে মামলাসহ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ছাড়াও কাস্টমস হাউসের একাধিক কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বেশ কিছুদিন ধরেই জব্দকৃত মালামাল গুদাম থেকে চুরি হচ্ছে- এমন অভিযোগের ভিত্তিতে ঢাকা কাস্টমস হাউস কাজ করছিল। ১ ও ২ সেপ্টেম্বর কাস্টমস হাউসের আলাদা দুটি টিম গুদামের মালামালের তালিকা প্রস্তুত করা এবং গুদাম পরিষ্কারের কাজ শুরু করে।
শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) একটি টিম দেখতে পায় যে, বাইরে থেকে তালা অক্ষত থাকলেও ভেতরের লকার ভাঙা অবস্থায় রয়েছে। এরপরই সন্দেহ সত্যি বলে প্রমাণিত হয়। গুদামের মালামালের চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। দ্রুতই চুরি হওয়া প্রকৃত মালামাল সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য বের করা সম্ভব হবে।
তারা আরও জানান, আমাদের ধারণা, চোর নিজেদের ভেতরেই রয়েছে। তাদের শনাক্তে কাজ করছে একটি যৌথ টিম।
এ ঘটনায় রোববার রাতে বিমানবন্দর থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ এনে মামলা করেছেন কাস্টম হাউজের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন।
বিমানবন্দর থানার ডিইউটি অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. এনায়েত কবীর মামুন মামলা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মামলায় অজ্ঞাতদের আসামি করা হয়েছে। চুরি হয়েছে ৫৫.৫১ কেজি স্বর্ণ।
অজ্ঞাত আসামি কয়জন এবং এ ঘটনায় কেউ গ্রেপ্তার আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসামি অজ্ঞাত, এজাহারে কোনো সংখ্যা উল্লেখ করা নেই। আর এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার নেই।
তিনি জানান, মামলাটির তদন্তভার পেয়েছেন বিমানবন্দর থানার পরিদর্শক (অপারেশন)। জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
মন্তব্য করুন