বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২
কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২৫, ১২:৩৮ পিএম
আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২৫, ০১:২৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

রাষ্ট্রকে ঢেলে সাজাতে প্রত্যেককে ভূমিকা রাখতে হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ছবি : সংগৃহীত
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ছবি : সংগৃহীত

রাষ্ট্রকে ঢেলে সাজাতে প্রত্যেককে যার যার অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সকালে বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মিলনায়তনে ‘জুলাই গণহত্যার বিচার আলোচনা ও তথ্যচিত্র প্রদর্শন’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, দেশের প্রতিটি নাগরিকের ন্যায্য সুরক্ষা ও মর্যাদা পাওয়ার অধিকার রয়েছে, এবং তা নিশ্চিত করা হবে। তাই বিচার প্রক্রিয়া অবশ্যই নিয়মতান্ত্রিক ও আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পন্ন হবে। তবে শুধুমাত্র বিচারেই সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না- রাষ্ট্রকে নতুনভাবে গড়ে তুলতে হলে আমাদের সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে। এই কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন তখনই সম্ভব, যখন রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা দলীয় স্বার্থের জায়গায় জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, যদি অপরাধের বিচার না হয়, তাহলে মানুষের বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা নষ্ট হয়ে যাবে। সরকার এ বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে এবং বিচারিক প্রক্রিয়া স্বচ্ছতা বজায় রেখে সম্পন্ন করা হচ্ছে। বিচারকাজ যেন নির্ভরযোগ্য ও প্রশ্নবর্জিত হয়- সেজন্য নির্ধারিত আইনি প্রক্রিয়া কঠোরভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে, যাতে ভবিষ্যতে এ নিয়ে কোনো নেতিবাচক আলোচনা না হয়।

তিনি আরও বলেন, আমরা কী ধরনের দেশে বাস করি, যেখানে কোনো মানুষ জীবিত থাকা অবস্থায় তাকে বাঁচানোর চেষ্টা না করে, বরং যারা দেশ পরিচালনা করে, তারা ইচ্ছাকৃতভাবে তাকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে চায়? তারা যেন নাগরিকদের পুড়িয়ে ফেলতেও দ্বিধা করে না। মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী। একদিন তা সবাইকেই গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, একজন নাগরিক কতটা অনিরাপদ হয়ে পড়ে সরকারের হাতে, যখন রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা দলীয় স্বার্থই প্রধান হয়ে ওঠে। এই বাস্তবতা আমরা উপলব্ধি করতে পারি সেই মর্মান্তিক মৃত্যুর মধ্য দিয়েই।

উপদেষ্টা বলেন, যদি আমরা দেশকে ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে তুলে ধরে পরিবর্তন না করতে পারি, তবে বিচার কেবলমাত্র একটি আনুষ্ঠানিকতা হিসেবেই থেকে যাবে। এতে করে এমন অন্যায়ের পুনরাবৃত্তি ঘটতেই থাকবে। তাই প্রাতিষ্ঠানিক বিচারের পাশাপাশি রাষ্ট্রকে বদলে দেওয়ার যে দায় আমাদের সবার ওপর বর্তায়, এবং দেশের মানুষের যে সত্যিকারের পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা রয়েছে, সেটাকে সবার উচিত গুরুত্বসহকারে গ্রহণ করা ও সম্মান জানানো।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, যখন কোনো দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ে এবং দলীয় সরকারের মুখপাত্রে পরিণত হয়, তখন পরিস্থিতি চরম রূপ নেয়। এ ধরনের ঘটনার জন্ম তখনই হয়। তিনি মনে করেন, এই অবস্থা থেকে মুক্তি রাতারাতি সম্ভব নয়। এজন্য সকলকে সচেতন থেকে ধারাবাহিকভাবে পরিবর্তনের পথে কাজ করে যেতে হবে।

তিনি আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িত যারা নির্দেশদাতা, তাদের বেশিরভাগই ইতোমধ্যে দেশ ছেড়ে পালাতে পেরেছে। এই বিষয়টিও বিচারের আওতায় আসা উচিত। তারা কীভাবে দেশ ছাড়ল? আমরা কীভাবে তাদের উপস্থিত রাখতে ব্যর্থ হলাম? অনুপস্থিত অবস্থায় তাদের বিচার করতে হলে, তা থেকে স্পষ্ট হয়, রাষ্ট্রযন্ত্রের কোথাও না কোথাও বিচারহীনতার সংস্কৃতি এখনো রয়ে গেছে।

অনুষ্ঠানের সূচনা বক্তব্য দেন আইন ও বিচার বিভাগের সচিব শেখ আবু তাহের। অনুষ্ঠানে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত এবং জুলাই মাসের অভ্যুত্থানে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব রুহুল আমিন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এবং আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সেপ্টেম্বরে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে যুক্তরাজ্য, আছে শর্ত

সত্য বললে আর মামলা-নির্যাতন হবে না : আমিনুল হক

খুলনার ভিডিও নিয়ে শ্যামনগরে চিকিৎসকদের নামে অপপ্রচারের অভিযোগ

মিরসরাইয়ে বিএনপি-যুবদলের শীর্ষ পাঁচ নেতা বহিষ্কার

ডাকসু নির্বাচনে প্রার্থী-ভোটাররা যা করতে পারবেন, যা পারবেন না

বিসিসিআই অফিসে ৮ লাখ টাকার জার্সি চুরি, গার্ড গ্রেপ্তার

‘জুলাই সনদ’ ২ বছরের মধ্যে বাস্তবায়নে আপত্তি নেই বিএনপির

মসজিদের বিদ্যুৎ বিল মওকুফ চেয়ে ইউএনওর কাছে ছাত্রদল নেতার আবেদন

যে শহরে থাকলেই মিলবে ৬০ লাখ টাকা, শুধু থাকতে হবে সেখানে

আয়নায় নিজেদের চেহারা দেখতে এনসিপি নেতাদের প্রতি আহ্বান প্রিন্সের

১০

এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩ লাখ কোটি টাকারও বেশি

১১

তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, আতঙ্কে এলাকাবাসী

১২

৩৭ বছর পর ইংলিশ চ্যানেল জয় দুই বাংলাদেশির

১৩

২২ মিনিটের ব্যবধানে বঙ্গোপসাগরে জোড়া ভূমিকম্প

১৪

থমথমে রাউজান, সড়কের পাশে পোড়া মোটরসাইকেল

১৫

তাসকিন ঘটনার পর জাতীয় দলের জন্য আচরণবিধির কর্মশালা

১৬

অনুমতি ছাড়া গেজেটে আমার নাম, তাও ভুল বানানে : নূরুল কবীর

১৭

বিএনপির আরও ৪ নেতা বহিষ্কার

১৮

আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে মানবিক বাংলাদেশ গড়তে বদ্ধপরিকর : নীরব

১৯

ইনডাকশন পদ্ধতিতে কমবে সিজারিয়ান সেকশন : বিশেষজ্ঞরা

২০
X