চলতি মাসের শুরু থেকে ভারত সরকার ‘অভিবাসন ও বিদেশি আইন, ২০২৫’ কার্যকর করেছে। আইনে বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের কোনো সংখ্যালঘু ‘ধর্মীয় নিপীড়নের’ শিকার হয়ে অথবা ‘ধর্মীয় নিপীড়নের’ আশঙ্কায় ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ভারতে আশ্রয় নিয়ে থাকেন, তাদের ক্ষেত্রে নতুন চালু হওয়া আইনে ছাড় দেবে ভারত। দেশটির এ আইনের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।
রোববার (০৭ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতিত্রয় অধ্যাপক ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক, ঊষাতন তালুকদার ও নির্মল রোজারিও এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ এ প্রতিক্রিয়া জানান।
এর আগে, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী ৩টি প্রতিবেশী দেশের যেসব সংখ্যালঘু ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হওয়ার দাবি করে বা অভিযোগ তুলে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন, তাদের ক্ষেত্রে আশ্রয় নেওয়ার সময়সীমা ছিল ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। সেই সময়সীমা ১০ বছর বাড়ানো হয়েছে নতুন আইনে।
প্রতিক্রিয়ায় তারা বলেন, এতে করে এদেশের ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু ও আদিবাসীদের দেশত্যাগের প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে। ভারত সরকারের এই ধরনের সিদ্ধান্তে কী নীতি কাজ করছে এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদে এর প্রভাব কী হতে পারে সে বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারকে গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণে নেওয়া উচিত।
এতে বলা হয়েছে, এদেশের ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু ও আদিবাসীদের মনোজগতে যে শঙ্কা ও আস্থার সংকট রয়েছে তা ফিরিয়ে আনতে অন্তর্বর্তী সরকারকে অনতিবিলম্বে প্রয়োজনীয় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, এ লক্ষ্যে সরকারের নীতি-নির্ধারণী পর্যায় থেকে শুরু করে জীবন-জীবিকার সব ক্ষেত্রে ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু ও আদিবাসীদের প্রতিনিধিত্ব ও অংশীদারত্ব নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদের ওপর চলমান নির্যাতন-নিপীড়ন বন্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করতে হবে।
নেতারা আরও বলেন, ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু ও আদিবাসীদের নির্যাতন-নিপীড়ন করে এবং তাদের অমর্যাদা ও অবহেলা করে এদেশে টেকসই গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও অগ্রগতি সম্ভব নয়।
বিবৃতিতে অন্তর্বর্তী সরকার গণতন্ত্র ও জাতীয় স্বার্থ বিবেচনায় সংখ্যালঘু নিঃস্বকরণ প্রক্রিয়া রোধে অনতিবিলম্বে প্রয়োজনীয় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মন্তব্য করুন