এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম অভিযোগ করে বলেন, ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডে ঘটনার দায় কেউই এড়াতে পারে না।
সোমবার (২০ অক্টোবর) সোনারগাঁও হোটেলের ইএবির আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
ইএবি সভাপতি বলেন, এই অগ্নিকাণ্ডের দায় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (সিএএবি), কাস্টম হাউস এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস-কেউই এড়াতে পারে না। কারণ, সিএএবি এই কার্গো ভিলেজের মালিক, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আমদানিকৃত পণ্যের তত্ত্বাবধায়ক আর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস হলো হ্যান্ডলিং এজেন্ট।
কার্গো ভিলেজের নিরাপত্তার প্রসঙ্গে মোহাম্মদ হাতেম বলেন, এই ধরনের ঘটনা স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে কার্গো ভিলেজের নিরাপত্তাব্যবস্থা যথেষ্ট কার্যকর নয় এবং এটি নিরাপত্তার দিক থেকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। একইভাবে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
সেই সঙ্গে তিনি, অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের বিপরীতে করা বিমা দাবি দ্রুত নিষ্পত্তির প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান, যেসব পণ্যের বিমা করা ছিল না, সেগুলোর ক্ষেত্রে সরকারি বিশেষ তহবিল গঠন করে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণ ও সহায়তা প্রদান, ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে কার্গো ভিলেজের আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ করার আহ্বান জানান।
এ ছাড়াও ওষুধশিল্পের জন্য আধুনিক শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত আলাদা গুদামের ব্যবস্থা করা, নিরাপদ দূরত্বে রাসায়নিক গুদাম স্থাপন, কার্গো ভিলেজের গুদাম ব্যবস্থাপনাকে সম্পূর্ণ অটোমেটেড ও আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর করার আহ্বান জানান তিনি।
এর আগে, শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুর আনুমানিক সোয়া ২টায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আমদানি-রপ্তানির কার্গো ভিলেজ এলাকায় হঠাৎ ধোঁয়া দেখা যায়। দিনের আলোতেও আগুনের লেলিহান শিখা দূর থেকে দেখা যাচ্ছিল। আগুন ছড়িয়ে পড়লে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সাময়িকভাবে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে। নির্ধারিত উড্ডয়ন ফ্লাইট স্থগিত রেখে অবতরণ ফ্লাইটগুলো ঘুরিয়ে দেওয়া হয় চট্টগ্রাম ও সিলেট বিমানবন্দরে। এতে যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন। তবে রাত ৯টায় ফ্লাইট চলাচল শুরু হয়।
ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি স্টেশনের ৩৭টি ইউনিট, বিমানবাহিনীর অগ্নিনির্বাপক ইউনিট এবং বেবিচকের নিজস্ব কর্মীরা আগুন নেভানোর কাজে অংশ নেন। সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র্যাব ও আনসার বাহিনী অগ্নিনির্বাপক দলকে সহায়তা করার পাশাপাশি নিরাপত্তাবলয় গড়ে তোলে। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রাত ৯টা ১৮ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
মন্তব্য করুন