

আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) ঐতিহাসিক জেলহত্যা দিবস। ১৯৭৫ সালের এই দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় মহান মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনাকারী জাতীয় চার নেতা—বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, মন্ত্রিসভার সদস্য ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে।
কারাগারের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকা অবস্থায় এ ধরনের বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। এর আগে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর তার ঘনিষ্ঠ সহকর্মী জাতীয় চার নেতাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়।
প্রখ্যাত সাংবাদিক অ্যান্থনি মাসকারেনাস তার ‘বাংলাদেশ অ্যা লিগ্যাসি অব ব্লাড’ বইয়ে লিখেছেন, শেখ মুজিবকে সপরিবারে হত্যার পরপরই জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। পরিকল্পনাটি এমনভাবে নেওয়া হয়েছিল যাতে পাল্টা অভ্যুত্থান ঘটার সঙ্গে সঙ্গে তা আপনা-আপনি কার্যকর হয়।
নৃশংস এ ঘটনায় লালবাগ থানায় মামলা হলেও দীর্ঘ ২১ বছর তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া থমকে ছিল। ১৯৯৬ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার মামলার প্রক্রিয়া পুনরুজ্জীবিত করে। দীর্ঘ আট বছরের বেশি সময় বিচারকাজ চলার পর বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে ২০০৪ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ২০ আসামির মধ্যে ১৫ জনকে শাস্তি ও পাঁচজনকে খালাস দেওয়া হয়। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে পলাতক তিন আসামির মৃত্যুদণ্ড এবং অপর ১২ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল হলে ২০০৮ সালে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া তিন আসামির মধ্যে দুজন এবং যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত চারজন খালাস পায়। হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে সরকার আপিল করলে ২০১৩ সালের ৩০ এপ্রিল আপিল বিভাগ হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করে বিচারিক আদালতের রায় বহাল রাখেন।
মন্তব্য করুন