

বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর (এসএসএফ) নিরাপত্তা প্রটোকল অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে এভারকেয়ার হাসপাতালের নিকটস্থ দুটি উন্মুক্ত মাঠে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার পরীক্ষামূলক অবতরণ ও উড্ডয়ন পরিচালনা করবে।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
প্রেস উইং এ বিষয়ে কোনো ধরনের অপপ্রচার বা বিভ্রান্তি থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করেছে।
উল্লেখ্য, গত ২৩ নভেম্বর থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া চিকিৎসাধীন। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ফুসফুসে ইনফেকশন ধরা পড়ে। পরে তার অবস্থা সংকটময় বলে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়।
এরপর গত বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) থেকে খালেদা জিয়াকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নিয়ে চিকিৎসকরা নিবিড়ভাবে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন।
এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে।
এরপর থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে দুই দিকে ব্যারিকেড বসানো হয়েছে, নিরাপত্তার স্বার্থে রয়েছে পুলিশের উপস্থিতি। সংশ্লিষ্ট লোকজন ছাড়া অন্যদের ভিড় করতে দেওয়া হচ্ছে না।
পরে, এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়াকে অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ‘ভিভিআইপি’ ঘোষণা করেছে সরকার। সোমবার (১ ডিসেম্বর) এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে তাকে ‘ভিভিআইপি’ ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জন্য স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) নিয়োগ দেওয়া হয়।
‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ হিসেবে বেগম জিয়া যেসব সুবিধা পাবেন— আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশে অবস্থানরত অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে বেগম খালেদা জিয়াকে এসএসএফ দৈহিক নিরাপত্তা দেবে। তার নিরাপত্তার বিঘ্ন ঘটাতে পারে এমন বিষয়ে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী আইন, ২০২১ অনুযায়ী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব এসএসএফের ওপর অর্পিত।
রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী বা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ছাড়াও আইনের ৮(২) ধারায় উল্লেখ রয়েছে যে, এসএসএফ বাংলাদেশে অবস্থানরত যে কোনো অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকেও দৈহিক নিরাপত্তা প্রদান করবে।
অর্থাৎ, কাউকে সরকার অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে ঘোষণা করলে তার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এসএসএফ দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়। এ জন্য তারা নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে—এমন যে কোনো তথ্য সংগ্রহ ও আদান-প্রদান করে এবং প্রয়োজনীয় সব ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে।
অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তিকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে হলে এসএসএফ তাকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করতে পারে এবং এই ক্ষমতা দেশের সর্বত্র প্রযোজ্য। এমনকি পরিস্থিতি গুরুতর হলে ক্ষতিকর ব্যক্তিকে গুলি করার বা প্রাণঘাতী ব্যবস্থা গ্রহণের বিধানও আইনে উল্লেখ রয়েছে।
মন্তব্য করুন