নারী শ্রমিকদের ঝুঁকি কমাতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় এক কোটি নারীর জন্য সরকারি সুরক্ষা স্কিম চালু করা প্রয়োজন। শুধু তাই নয়, মূল্যস্ফীতির এই সময়ে সকলের জন্য সার্বজনীন রেশনের ব্যবস্থা চালু করার প্রস্তাব দেন।
‘কর্মজীবী নারীর আয়োজনে বুধবার সকালে (২৫ অক্টোবর) কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে নারী ও নারীশ্রমিকের অসহায়ত্ব: শোভন কাজ ও সামাজিক সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা এবং বাস্তবতা শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এ মন্তব্য করেন।
এ ছাড়া সকল শ্রম আইন শ্রমিকের পক্ষে হতে হবে। কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে দ্রব্যমূল্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে সবার জন্য একটি জাতীয় মজুরি কাঠামো নির্ধারণ করা সময়ের দাবি বলে মনে করেন তিনি।
ডেইলি স্টার ভবনের আজিমুর রহমান কনফারেন্স হলে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় কর্মজীবী নারীর সহসভাপতি উম্মে হাসান ঝলমলের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আরমা দত্ত এমপি, সংসদীয় আসন ৩১১ বলেন, পরবর্তী সময়ে নারী শ্রমিকেরা কী ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে সেটি শনাক্ত করে তা সমাধানের পথে কাজ করতে হবে।
এ ছাড়া বক্তব্য দেন ক্রিশ্চিয়ান এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর নুজহাত জাবিন, আইএলও বাংলাদেশ ইআইআই প্রকল্পের জাতীয় সমন্বয়ক নওশিন শাফিনাজ শাহ, সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (সামাজিক নিরাপত্তা) মোস্তফা মাহমুদ সারোয়ার, শ্রম অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর হোসাইন, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের কর্মকর্তা সৈয়দা নাসরীন বর্ষা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোস্তাফিজ আহমেদ এবং সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন, গৃহশ্রমিক ফাতেমা মণি প্রমুখ।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কর্মজীবী নারীর অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক সানজিদা সুলতানা, ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন কর্মজীবী নারীর প্রকল্প সমন্বয়ক রিনা আমেনা।
ফাতেমা মনি বলেন, করোনার সময় মানুষ তাও সাহায্য সহযোগিতা করত কিন্ত করোনার পরে এখন আমাদের আয় কমেছে । কিন্তু দ্রব্যমূল্যের দাম অনেক বেড়েছে। তাই জীবন যাপন করা অনেক কঠিন হয়ে গেছে। কেউ সেইভাবে সাহায্যও করেন না। এ ছাড়া সমাজে যেসব নারীদের স্বামী ছেড়ে চলে গেছে তাদের সারাক্ষণ নানান কটু কথা শুনতেই হয়।
তিনি বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি হওয়ায় আমাকে কেউ কাজে নিতে চায় না। প্রতিবন্ধী কার্ডের জন্য টাকাও দিয়েছি। কিন্তু এখন আমি কার্ড এবং টাকা কোনটাই আর পাইনি।
সামাজিক সুরক্ষা এবং শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকরণে নারী শ্রমিকদের জন্য কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরা হয়। সামাজিক সেবা সম্পর্কে ডোর-টু-ডোর প্রচারণা করা। সামাজিক সেবা প্রাপ্তির ধাপগুলোর সহজীকীকরণ করা। নারী শ্রমিকদের জন্য সুদমুক্ত ঋণ ও এলাকাভিত্তিক আয়বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ও দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান বা চিকিৎসার জন্য অর্থ সহায়তা প্রদান।
মন্তব্য করুন