দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও আর্থিক খাতের লুটপাট নিয়ে সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা। তারা বলেন, বাংলাদেশে কোথাও কোনো নিয়ন্ত্রণ আছে বলে আমরা টের পাই না।
বুধবার জাতীয় সংসদে ফাইন্যান্স কোম্পানি বিল–২০২৩ পাসের আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা এ কথা বলেন।
ভারতীয় পেঁয়াজ রপ্তানিকারকদের দাম বৃদ্ধির সংবাদে বাংলাদেশে পেঁয়াজের কেজি ১৫০ টাকা হয়ে গেছে জানিয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক বলেন, বাংলাদেশে কোন, কোথাও নিয়ন্ত্রণ আছে বলে.. সরকার আছে আমরা টের পাই না।
এ সময় তার পেছনে বসা কয়েকজন সরকার দলীয় সংসদ সদস্যরা হাসি দেন। জবাবে চুন্নু বলেন, ‘আ হা করেন..বাজারে যান না, পেঁয়াজ কত করে দেখেন, আ হা করেন। এই আ হা বা হা হয়ে যাবে।'
সরকার দলীয় সংসদ সদস্যরা মাইক ছাড়াই কথা বললে চুন্নু বলেন, ভাই ডিস্টার্বটা করেন! ডিস্টার্ব কইরেন না বাস্তবতায় আসেন।
তিনি বলেন, ফাইন্যান্স কোম্পানির কথা মনে হলেই পিকে হালদার যিনি এখন কলকাতায় আছেন..যিনি লিজিং কোম্পানির এমডি ছিলেন। বান্ধবীর নামে ১০০ কোটি, তিন নম্বর বান্ধবীর নামে ৫০ কোটি, স্ত্রীর নামে ১০০ কোটি, শালীর নামে ৫০ কোটি.. মানে শালী, বান্ধবী, স্ত্রীর নামে শত শত কোটি টাকা পাচার করেছেন। আইনতো ছিল, বাংলাদেশ ব্যাংকতো ছিল, তারা কি তখন ঘাস কেটেছিল? আইন করে লাভ কি? দিয়ে দেন না ফ্রি..যা। পীর ফজলুর রহমান বলেন, লিজিং কোম্পানি থেকে পিকে হালদার হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে চলে গেছেন। তখনও আইন ছিল। আইন কার্যকর না হলে আইন করে লাভ হবে না। পিকে হালদাররা এভাবে টাকা নিয়ে চলে যাবে। আইন থাকবে আইনের জায়গায়।
বিরোধী সদস্যদের জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি শেষে বিলটি কণ্ঠ ভোটে পাস হয়। বিলে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি বা একই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ফাইন্যান্স কোম্পানির শেয়ার কেন্দ্রীভূত করা যাবে না। কোনো ব্যক্তি বা একই পরিবারের সদস্যরা কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির ১৫ ভাগের বেশি শেয়ার কিনতে পারবেন না। এক পরিবার থেকে দুই জনের বেশি পরিচালক নিয়োগ করা যাবে না।
বিলে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি বা তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট পক্ষ অথবা একই পরিবারের সদস্যরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে একক বা যৌথভাবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৫ ভাগের বেশি শেয়ার কিনতে পারবেন না। কোনো ব্যক্তি বা তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট পক্ষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে একক বা যৌথভাবে কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির উল্লেখযোগ্য (কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের শতকরা ৫ ভাগের বেশি শেয়ার) শেয়ারধারক হলে অন্য কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বা ব্যাংক কোম্পানির উল্লেখযোগ্য শেয়ারধারক হতে পারবে না।
বিলে বলা হয়েছে, কারো কাছে ১৫ শতাংশের অতিরিক্ত শেয়ার থাকলে এই আইন কার্যকর হওয়ার দুই বছরের মধ্যে অতিরিক্ত শেয়ার হস্তান্তর করতে হবে। এটি না করলে অতিরিক্ত শেয়ার সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হবে। তবে এসব বিধান সরকারি মালিকানাধীন ফাইন্যান্স কোম্পানির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।
বিলে বলা হয়েছে, কোনো পরিবারের সদস্যদের মধ্য থেকে দুই জনের বেশি পরিচালক থাকতে পারবে না। শতকরা ৫ ভাগের বেশি শেয়ারের অধিকারী হলে ওই পরিবারের সদস্যদের মধ্য থেকে সর্বোচ্চ দুইজন পরিচালক থাকতে পারবেন।
মন্তব্য করুন