দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের নির্বাচনী ইশতেহারে নিরাপদ সড়ক ও স্মার্ট গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার অঙ্গীকার রাখার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন মিলয়াতনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এই দাবি জানান। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্বল্প উন্নত দেশের কাতারে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের গণপরিবহন ব্যবস্থা উন্নত করতে সরকার বদ্ধপরিকর। বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ সরকার বিগত ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে নিরাপদ সড়কের অঙ্গীকার করলেও নিরাপদ সড়ক বাস্তবায়নে অগ্রগতি তেমন দৃশ্যমান নয়। যাত্রী ও নাগরিক সমাজের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে চালু হওয়া বাস রুট রেশনালাইজেশন প্রকল্পের আওতায় ঢাকা নগর পরিবহন নামে কয়েকটি রুটে বাস সার্ভিস চালু করা হলেও তা মুখ থুবড়ে পড়েছে। সদরঘাট থেকে গাবতলীর আমিন বাজার পর্যন্ত ওয়াটার বাস সার্ভিস চালুর পর কার্যকর হয়নি। যাত্রীরা লক্কড়-ঝক্কড় বাস মালিকদের ইচ্ছের কাছে জিম্মি। এই পরিস্থিতিতে যাত্রী হয়রানি থেকে মুক্তি দিতে, ক্ষমতায় আসলে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান তিনি। বর্তমানে সারা দেশে বাস নেটওর্য়াক ভেঙে পড়েছে উল্লেখ করে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়- ইজিবাইক, অটোভ্যান, মোটরসাইকেল এখন দেশের প্রধান বাহন হিসেবে দাঁড়িয়েছে। ব্যয়বহুল, সড়ক নিরাপত্তায় ঝুঁকিপূর্ণ, যানজট তৈরীর প্রধান উৎস এসব ছোট ছোট যানবাহন স্মার্ট বাংলাদেশের সাথে বেমানান। যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব বলেন, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে প্রতিবছর দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ২৪ হাজার ৯৫৪ জনের প্রাণহানি ঘটছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ আহত হচ্ছে। ৮০ হাজার মানুষ পঙ্গু হচ্ছে। এহেন ভয়াবহ মহামারির কবল থেকে দেশ ও জাতীকে উদ্ধার করে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে তুলে ধরা সময়ের দাবি। তিনি বলেন, চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু টানেল চালুর কারণে বানিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম শহর সম্প্রসারণের অপার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ওয়ান সিটি টু টাউন আদলে এখানে প্রশাসনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ অফিস আদালত সম্প্রসারণ এবং দেশের প্রধান শহর হিসেবে গড়ে তোলা গেলে ঢাকার ওপর চাপ কমানো সম্ভব। এসব বিষয়ে নির্বাচনী ইশতেহারে রাজনৈতিক অঙ্গীকার জরুরি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, যাত্রী কল্যাণ সমিতির সহসভাপতি তাওহিদুল হক, যুগ্ম মহাসচিব এম মনিরুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসন, প্রচার সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাসেল প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন