এম এম মাহবুব হাসান
প্রকাশ : ১৩ আগস্ট ২০২৫, ০২:২৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক যুব দিবস ২০২৫

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় তরুণদের মূল্যায়ন কতটা জরুরি? 

এম এম মাহবুব হাসান। ছবি : সৌজন্য
এম এম মাহবুব হাসান। ছবি : সৌজন্য

১২ আগস্ট পালিত হলো আন্তর্জাতিক যুব দিবস। ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক যুব দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। ২০০০ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী তরুণদের সক্ষমতা, অবদান ও অধিকার উদ্‌যাপনের জন্য দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। এর লক্ষ্য যুবসমাজের অবদান ও চ্যালেঞ্জ তুলে ধরা, ক্ষমতায়নের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন উৎসাহিত করা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও অংশগ্রহণে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। দিবসটি উপলক্ষে এবারের প্রতিপাদ্য ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাসমূহের বাইরে স্থানীয় পর্যায়ের যুব উদ্যোগ’।

২০২৫ সালের এই দিনে বিশ্ব দাঁড়িয়ে আছে এক পরিবর্তনশীল অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিনির্ভর বাস্তবতায়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), জলবায়ু সংকট, ভূ-রাজনৈতিক টানাপড়েন ও বৈশ্বিক মন্দার হুমকির মধ্যে আজকের তরুণরা হচ্ছে নতুন পৃথিবীর স্থপতি। চ্যালেঞ্জ যতই কঠিন হোক, তাদের অগ্রযাত্রা থামবে না।

গ্লোবাল ভিলেজের অংশ হিসেবে বাংলাদেশও এই বাস্তবতার বাইরে নয়। একদিকে মুদ্রাস্ফীতি ও কর্মসংস্থানের সংকট, অন্যদিকে প্রায় পাঁচ কোটির বেশি তরুণ—যাদের সৃজনশীলতা, প্রযুক্তি দক্ষতা ও উদ্ভাবনী উদ্যোগ দেশের অর্থনীতির গতিবেগ বদলে দিতে পারেন। প্রশ্ন থেকে যায়—এই অদম্য যুবশক্তি কি সত্যিই দেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক উন্নয়নে অংশ নিতে পারছেন? এর উত্তর আজকের সময়ের এক বড় চ্যালেঞ্জ।

বিশ্বে ১৮০ কোটি তরুণের মধ্যে প্রায় পাঁচ কোটি তরুণের দেশ বাংলাদেশ। তারা কোন কোন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি, তাদের মধ্যে সম্ভাবনা কী, আর ২০২৫ সালের প্রেক্ষাপটে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কীভাবে তারা নিয়ামক শক্তি হতে পারেন—এসব বিষয়ে সংক্ষেপে আলোকপাত তরুণদের অনুপ্রেরণা হয়ে উঠবে।

বাংলাদেশের তরুণদের বর্তমান প্রেক্ষাপট: সংখ্যায় শক্তি, কাঠামোয় দুর্বলতা-

ক. যুব জনগোষ্ঠীর চিত্র

বাংলাদেশ বর্তমানে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের সোনালি সময় অতিক্রম করছে। দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ ১৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সী তরুণ, যারা কর্মক্ষম, প্রযুক্তি সচেতন ও উদ্যমী। তরুণরা দেশের অর্থনীতিতে প্রায় ৬ থেকে ৭ শতাংশ অবদান রাখেন। এই বৃহৎ জনশক্তি দেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকা শক্তি হতে পারে। তবে সঠিক পরিকল্পনা ও মানবসম্পদের সঠিক ব্যবহার না হলে, এই সম্ভাবনা সামাজিক ও অর্থনৈতিক চাপের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। ইতোমধ্যে বেকারত্ব, কর্মসংস্থানের অভাব ও সামাজিক বৈষম্যের কারণে ঝুঁকির আভাস দেখা যাচ্ছে।

খ. শিক্ষার মান ও দক্ষতার ঘাটতি

আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা এখনো অনেকাংশে তাত্ত্বিক নির্ভর। দেশের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের সংখ্যা প্রায় ৪৭ লাখ। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি থাকা সত্ত্বেও বিপুল সংখ্যক তরুণ বাস্তব দক্ষতায় পিছিয়ে রয়েছেন। বিশ্বব্যাংকের ২০২৪ সালের তথ্যানুসারে, প্রতি ১০ জন স্নাতকের অন্তত ৭ জনের দক্ষতা বাজারোপযোগী নয়। আরও উদ্বেগজনক হলো—অনেকেই নিজেদের এই ঘাটতি সম্পর্কে সচেতন নন। ফলে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের আগেই তারা প্রতিযোগিতা থেকে পিছিয়ে পড়ছেন, যা সমাজ ও রাষ্ট্র উভয়ের জন্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশের মোট শ্রমশক্তি ৭২.২৮ শতাংশের মধ্যে যুব শ্রমশক্তি প্রায় ৩৬.৫৩ শতাংশ। এটি একটি বিশাল সম্ভাবনাময় কর্মীবাহিনীর ইঙ্গিত দেয়, তবে সেই সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হলে দক্ষতা উন্নয়ন অপরিহার্য।

গ. মানসিক স্বাস্থ্য ও অনিশ্চয়তা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) তথ্যানুসারে, বৈশ্বিকভাবে ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সীদের মধ্যে আত্মহত্যার হার সর্বোচ্চ। বাংলাদেশও এই বাস্তবতা থেকে ব্যতিক্রম নয়। শুধু ২০২৪ সালেই দেশে প্রায় ৩১০ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। চাকরির অনিশ্চয়তা, সামাজিক চাপ, পারিবারিক প্রত্যাশা ও প্রতিযোগিতামূলক জীবন তরুণদের মানসিকভাবে ক্রমেই বিপর্যস্ত করে তুলছে। সময়মতো মানসিক সহায়তা না পাওয়ার কারণে এ সমস্যা দীর্ঘমেয়াদে উৎপাদনশীলতা ও সৃজনশীলতার বড় প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় তরুণদের মুখোমুখি চ্যালেঞ্জ -

ক. কর্মসংস্থান সংকট : ডিগ্রি আছে, চাকরি নেই

জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) বলছে, প্রতি বছর প্রায় ২০-২২ লাখ তরুণ শ্রমবাজারে প্রবেশ করছে, কিন্তু নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তার তুলনায় অনেক কম। অধিকাংশ চাকরি শহরকেন্দ্রিক, অভিজ্ঞতাভিত্তিক এবং প্রতিযোগিতামূলক, যেখানে নবীনদের প্রবেশ কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এছাড়া ১৭ কোটি মানুষের দেশে ২৭ লাখ বেকার মানুষের মধ্যে অধিকাংশই তরুণ - যে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে ভাববার বিকল্প নেই।

খ. ডিজিটাল বৈষম্য : দুই বাংলার দুই তরুণ

শহরের তরুণরা অনলাইন প্ল্যাটফর্ম (যেমন—কোর্সেরা, গুগল ক্যারিয়ার সার্টিফিকেট) ব্যবহার করে দক্ষতা বাড়াচ্ছেন। কিন্তু গ্রামীণ তরুণরা এখনও নির্ভরযোগ্য ইন্টারনেট, প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ডিভাইস ও সঠিক দিকনির্দেশনা থেকে বঞ্চিত। এই বৈষম্য দীর্ঘমেয়াদে ‘ডিজিটাল ইনকুইটি’ সংকটে রূপ নিতে পারে। বাস্তবতা হলো—২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে আইটি সেক্টরের জন্য বরাদ্দকৃত ১০০ কোটি টাকার স্টার্ট-আপ ফান্ড থেকে গ্রামীণ তরুণরা কতটা সুযোগ পাবেন, তা এখনো নিশ্চিত নয়।

গ. রাজনৈতিক বিভাজন ও ব্যবহার

অনেক দেশে তরুণরা রাজনীতির নেতৃত্বে থাকলেও বাংলাদেশে তারা প্রায়শই রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক সহিংসতা ও দলীয় প্রভাব তরুণদের উদ্যম ও নেতৃত্ব বিকাশে বাধা সৃষ্টি করছে। তরুণদের উন্নয়নের পথ প্রশস্ত না করে তাদের মধ্যে সমস্যা জিইয়ে রাখার প্রবণতা দীর্ঘদিনের অভ্যাস। এর মধ্যে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে যুবশক্তির প্রতি মানুষের ব্যাপক সমর্থনকে টিকিয়ে রাখা নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তরুণদের এগিয়ে যাওয়ার কৌশল : ২০২৫ ও পরবর্তী সময়ের জন্য রূপরেখা -

ক. দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষা ও কর্মমুখী প্রস্তুতি

১. স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস্তবমুখী দক্ষতা বাধ্যতামূলক করতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা ডিগ্রি শেষে সরাসরি কর্মক্ষেত্রে যোগ দিতে পারে।

২. কোডিং, কমিউনিকেশন, ডিজিটাল মার্কেটিং, এআই, ডেটা অ্যানালিটিক্স, সাইবার সিকিউরিটি, গ্রাফিক ডিজাইন ইত্যাদি চাহিদাসম্পন্ন দক্ষতায় প্রশিক্ষণ দিতে হবে।

৩. পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে একাডেমিয়া ও ইন্ডাস্ট্রির সেতুবন্ধন গড়ে বাজারভিত্তিক প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে।

খ. তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য ‘স্টার্টআপ ভিলেজ’

ভারতের কেরালা মডেলের মতো প্রতিটি বিভাগে স্টার্টআপ হাব স্থাপন করতে হবে। তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য কর রেয়াত, সহজ ঋণ ও আন্তর্জাতিক মেন্টরশিপ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি স্টার্টআপ ফান্ডের প্রবেশগম্যতা বাড়িয়ে নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে উৎসাহিত করতে হবে। তরুণদের আর্থিক সাক্ষরতা ও অর্থ ব্যবস্থাপনায় সচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি। বর্তমানে আর্থিক সাক্ষরতার শিক্ষায় শিক্ষিত তরুণেরা পুঁজিবাজারে সক্রিয়ভাবে বিনিয়োগ করছেন, যেখানে ৭০ শতাংশ খুচরা বিনিয়োগকারীর বয়স ৪৫ বছরের কম। বিশ্বব্যাপী অর্ধেকেরও বেশি তরুণের আর্থিক সাক্ষরতা না থাকলেও বাংলাদেশের জাতীয় সাক্ষরতার হার মাত্র ২৮ শতাংশ, যা উদ্বেগের বিষয়।

গ. গিগ অর্থনীতি ও ফ্রিল্যান্সিং

বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ফ্রিল্যান্সার সরবরাহকারী দেশ। বাংলাদেশের প্রায় ৬ লাখ ৫০ হাজার ফ্রিল্যান্সারের অধিকাংশই তরুণ। ২০২৫ সালের মধ্যে অন্তত ১০ লাখ তরুণকে আন্তর্জাতিক গিগ প্ল্যাটফর্মে যুক্ত করার লক্ষ্য রাখা উচিত। এজন্য অঞ্চলভিত্তিক প্রশিক্ষণ উদ্যোগগুলোকে আরও অংশগ্রহণমূলক ও দ্রুততর করতে হবে।

ঘ. মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা

প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পেশাদার কাউন্সেলর নিয়োগ বাধ্যতামূলক করতে হবে। পাশাপাশি “ই-হেল্পলাইন” ও “টেলি-থেরাপি” সেবা চালু করে বয়সভিত্তিক মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে।

ঙ. স্থানীয় সরকারে তরুণদের অংশগ্রহণ

উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ‘যুব ফোরাম’ গঠন করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও কৃষি উন্নয়নে তরুণদের সরাসরি যুক্ত করতে হবে। অভিজ্ঞতা বিনিময় কর্মসূচির মাধ্যমে তরুণদের নানামুখী কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে তরুণদের সম্ভাবনা: চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সেনানী

ক. প্রযুক্তি নেতৃত্ব

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), রোবোটিক্স, ব্লকচেইন ও ডেটা সায়েন্স—চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের মূল চালিকাশক্তি। তরুণদের এই প্রযুক্তি শেখানো ও প্রয়োগের সুযোগ তৈরি করতে হবে, যাতে তারা জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির প্রধান চালক হয়ে উঠতে পারেন। কারণ, বাংলাদেশে বর্তমানে ৩.৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ডিজিটাল অর্থনীতি যা ২০২৫ সালের মধ্যে ৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে - এখানে তরুণদের বিরাট অবদান আশা করা যাচ্ছে।

খ. কৃষি প্রযুক্তি ও স্মার্ট গ্রামীণ উন্নয়ন

ড্রোন, আইওটি, ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে কৃষি আধুনিকীকরণ করতে হবে এবং গ্রামীণ তরুণদের কৃষি রপ্তানি ও ভ্যালু চেইনে সম্পৃক্ত করতে হবে। যার ফলে বিভিন্ন পর্যায়ে তরুণ উদ্যোক্তা তৈরি হবে।

গ. গ্রিন জবস ও জলবায়ু নেতৃত্ব

জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য শক্তি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশবান্ধব শিল্পে তরুণদের যুক্ত করতে হবে। পাশাপাশি জলবায়ু কূটনীতি ও নেতৃত্বে প্রশিক্ষণ দিতে হবে।

রাষ্ট্রীয় ও নীতিগত করণীয়

ক. নীতি হালনাগাদ ও কেন্দ্র স্থাপন

জাতীয় যুব নীতি হালনাগাদ করে বর্তমান সময়ের চাহিদা, বৈশ্বিক প্রবণতা ও শ্রমবাজারের পরিবর্তনের সঙ্গে সামঞ্জস্য আনতে হবে। একইসঙ্গে প্রতিটি বিভাগে ‘ইয়ুথ এক্সেলেন্স সেন্টার’ স্থাপন করে তরুণদের দক্ষতা উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ, নেতৃত্ব গঠন ও উদ্ভাবনী কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।

খ. শিক্ষাক্ষেত্রে দক্ষতা উন্নয়ন

প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্কিল-ল্যাব স্থাপন এবং ইন্টার্নশিপ বাধ্যতামূলক করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ দিতে হবে। এতে তারা শুধু তাত্ত্বিক জ্ঞানেই সীমাবদ্ধ থাকবেন না, কর্মক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় বাস্তব দক্ষতাও অর্জন করতে পারবেন।

গ. উদ্ভাবন ও উদ্যোগকে উৎসাহ

তরুণদের সৃজনশীলতা ও সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা বাড়াতে নিয়মিত হ্যাকাথন, আইডিয়া চ্যালেঞ্জ এবং ইনোভেশন ফান্ড চালুর উদ্যোগ নিতে হবে। এর মাধ্যমে নতুন প্রযুক্তি, ব্যবসায়িক ধারণা ও সামাজিক সমাধান উদ্ভাবনে তরুণরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।

ঘ. তথ্য ও সেবার সমন্বিত প্ল্যাটফর্ম

একটি জাতীয় যুব প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে এক ছাতার নিচে সকল তথ্য, প্রশিক্ষণ সুযোগ, কর্মসংস্থান তথ্য ও উদ্যোক্তা সহায়তা প্রদান করতে হবে। এতে তরুণরা সহজেই প্রয়োজনীয় সেবা ও সুযোগগুলোতে প্রবেশাধিকার পাবেন, যা তাদের উন্নয়নের গতিকে ত্বরান্বিত করবে।

তরুণ মানেই পরিবর্তনের প্রতীক । ২০২৫ সালের আন্তর্জাতিক যুব দিবসে আমাদের উপলব্ধি হওয়া উচিত—বাংলাদেশের অর্থনীতি শুধু পুঁজির ওপর নির্ভর করবে না, এর শক্ত ভিত্তি হবে মানবসম্পদ — বিশেষ করে তরুণরা। তাদের সাহস, নবচিন্তা ও সৃজনশীলতাকে সঠিক দিকনির্দেশনা, মানসম্মত শিক্ষা, মানসিক সুরক্ষা ও অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে বিকশিত করতে পারলে তারাই বাংলাদেশকে টেকসই উন্নয়নের মডেল বানাবে।

তরুণ মানেই সম্ভাবনা, তরুণ মানেই বাংলাদেশের এগিয়ে চলা—এই বিশ্বাসেই গড়ে উঠুক স্মার্ট বাংলাদেশ।

লেখক : ব্যাংকার, উন্নয়ন গবেষক ও লেখক

[ নিবন্ধ, সাক্ষাৎকার, প্রতিক্রিয়া প্রভৃতিতে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। দৈনিক কালবেলার সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে নিবন্ধ ও সাক্ষাৎকারে প্রকাশিত মত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ, তথ্য-উপাত্ত, রাজনৈতিক, আইনগতসহ যাবতীয় বিষয়ের দায়ভার লেখকের, দৈনিক কালবেলা কর্তৃপক্ষের নয়। ]
কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

দেশ পেরিয়ে কানাডায় ‘নয়া মানুষ’

৩৩ ওষুধের দাম কমলো, ১১৬ কোটি টাকা সাশ্রয়

জিমে ১২ লাখ ডলার খরচ করে নিলেন ৩০০ বছরের মেম্বারশিপ, অতঃপর...

ইমিগ্রেশনের ‘অনিয়মের’ সংবাদ প্রকাশের জেরে দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা

ডেঙ্গু আরও ১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৩২৫ 

চ্যাটজিপিটি-৫ নিয়ে বিতর্ক, নতুন মোডে আসছে ৩ পরিবর্তন

শতাধিক গ্রাহকের কোটি টাকা নিয়ে উধাও সমিতি

হিমাগারে অস্ত্রের মুখে ডাকাতি, গ্রেপ্তার ২

সাগরে লঘুচাপ, ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত

সরকারকে এক মাসের আলটিমেটাম শিক্ষকদের

১০

কুয়েতে ১০ প্রবাসীর মৃত্যু

১১

নতুন গ্রাহকদের জন্য বিশাল ছাড় দিচ্ছে স্টারলিংক, পাবেন যেভাবে

১২

মাস্ক পরে নামাজ পড়া জায়েজ আছে?

১৩

ঘরের দরজা ভেঙে যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

১৪

টাইমস স্কয়ারে প্রথমবার হবে দুর্গাপূজা

১৫

স্বামীকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে অ্যাম্বুলেন্স খাদে, স্ত্রীর মৃত্যু

১৬

বেকারি থেকে কেনা নাস্তায় মিলল সাপ

১৭

শেখ হাসিনা-রেহানা-টিউলিপের তিন মামলায় বাদীদের সাক্ষ্য গ্রহণ

১৮

যতীন সরকার মারা গেছেন

১৯

জিএম কাদেরের সাংগঠনিক কার্যক্রমে বাধা নেই

২০
X